Beanibazarview24.com
ইরানের বড় দুটি ধর্মীয় স্থানে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার পর গত সোমবার রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক সাংবাদিক ও চিকিৎসক এ সতর্কবার্তা দেন। এর আগে ভাইরাসের আতঙ্কে সব ধরনের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা দেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় ১৮ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই আক্রান্ত হয়েছেন ইরান থেকে। তবে দেশটির কর্তৃপক্ষ কয়েক দিন ধরে এই প্রকোপের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সাংবাদিক ডা. আফরুজ ইসলামি তেহরানের মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শরিফ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির একটি গবেষণার বরাত দিয়ে তিনটি সম্ভাব্য পরিস্থিতির বর্ণনা করেছেন। এক. ইরানের জনগণ যদি ভ্রমণ এবং স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত সব নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে চলেন, তাহলে করোনার প্রাদুর্ভাব পুরোপুরি শেষ হওয়া নাগাদ এক লাখ ২০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হবেন এবং ১২ হাজার মানুষের মৃত্যু হবে; দুই. যদি ইরানিরা ভ্রমণ এবং স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত সব নির্দেশনা মোটামুটি বা মাঝারি মাত্রায় মেনে চলেন, তাহলে তিন লাখ মানুষ আক্রান্ত হবেন এবং মৃতের সংখ্যা দাঁড়াবে এক লাখ ১০ হাজার। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস এ খবর জানিয়েছে।
কিন্তু ইরানের জনগণ যদি ভ্রমণ এবং স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা একেবারেই না মানেন, তাহলে দেশটির বর্তমান নাজুক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটি একেবারেই ভেঙে পড়বে।
আফরুজ ইসলামি বলেন, ‘যদি পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুবিধা না থাকে, তাহলে ৪০ লাখ মানুষ ভাইরাসে আক্রান্ত হবেন এবং সাড়ে ৩০ লাখ মানুষের মৃত্যু হবে।’
আফরুজ ইসলামি অবশ্য গবেষণার ক্ষেত্রে কী বা কোন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। ইরানের সরকারি কর্মকর্তারা অনেক দিন পর্যন্ত করোনাভাইরাসজনিত সংকটের ভয়াবহতার বিষয়টি অস্বীকার করে আসছিলেন। সেই ইরানের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এ ধরনের একটি গবেষণা প্রকাশ দেশটিতে বড় ধরনের পরিবর্তনকেই নির্দেশ করে।
আগামী শুক্রবার দেশটিতে ফার্সি নববর্ষ ‘নওরুজ’ উপলক্ষে অনেকেই প্রধান শহরগুলো ছেড়ে বাড়ি ফিরছেন। তাঁদের ক্ষেত্রেও বিশেষ নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
গতকাল মঙ্গলবার ইরানে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা আরো ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিয়ানৌস জাহানপৌর জানান, করোনাভাইরাসে নতুন করে ১৩৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্ত ১৬ হাজারের মধ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৮৮ জনে।
এদিকে, ইরানের প্রতিবেশী দেশ জর্ডান জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। দেশটি ১০ জনের বেশি জমায়েত করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলও করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কড়া নির্দেশনা জারি করেছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.