Beanibazarview24.com
সিলেটের ডাক্তারপাড়া বলে খ্যাত স্টেডিয়াম মার্কেট বন্ধ সোমবার থেকেই। চেম্বারে না আসায় রোগীরা হচ্ছেন হাসপাতালমুখী। সেখানেও রয়েছে চিকিৎসা না প্রদানের গুরুতর অভিযোগ। ফলে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে দূর থেকে আসা রোগীরা ভোগছেন আরো বহুমুখী সমস্যায়। ডাক্তারদের অসহযোগীতায় ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন সিলেটের দু’জন। এর মধ্যে একজন যুক্তরাজ্য প্রবাসী মহিলা এবং মঙ্গলবার মারা যাওয়া অপর রোগী নগরীর হাউজিং এস্ট্রেটের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন।
সবার মাঝে যেন অজানা আতঙ্ক। অনেকে মুখে মাস্ক পরে বাজার করে ফিরছেন বাসা-বাড়িতে। সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্ট, সিটি পয়েন্ট, জিন্দাবাজার, উপশহর পয়েন্টসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে এমন চিত্র দেখা গেছে। অন্যদিকে, ডাক্তার পাড়ায়ও নেই আগের মতো ভিড়। বেশিরভাগ ডাক্তাররা রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন। ডাক্তার পাড়া খ্যাত সিলেটের স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকায়ও ক্রমশ নীরবতা নেমে আসছে। রেস্টুরেন্টগুলোতেও আগের ভিড় এখন আর নেই। গতকাল মঙ্গলবার থেকে নগরীর প্রায় সবকটা বিপনি বিতান বন্ধ রয়েছে।
সরেজমিনে স্টেডিয়াম মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, সুনসান নীরবতা। করোনা আতঙ্কে যখন পুরো দেশ কাঁপছে তখন বেশিরভাগ চেম্বারেই ডাক্তার নেই। কিছু ফার্মেসি আর ডায়াগনস্টিক সেন্টার তাদের দরজা খোলা রাখলেও ডাক্তার না থাকায় নেই রোগীদের দৌড়ঝাঁপ। এ অবস্থায় সাধারণ রোগ-বালাই নিয়েও চরম বিপাকে পড়েছেন মানুষ।
ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে আগত রোগীদের। সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে অনেকেই ডাক্তার দেখাতে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, প্রাথমিকভাবে কেউ প্রস্তুত ছিলো না। তাই হঠাৎ করে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তবে পিপিই আসতে শুরু করেছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। ফলে চিকিৎসকরা কাজে উৎসাহ পাবেন। তিনি বলেন, ডাক্তার হয়েছেনই তো মানুষের সেবার জন্য। এই দুর্যোগে অবশ্যই চিকিৎসক সমাজ পাশে থাকবেন।
অন্যদিকে সারা দুনিয়ায় হু-হু করে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা। বাংলাদেশেও বাড়ছে। সিলেটেও এ নিয়ে মানুষের মাঝে উদ্বেগের শেষ নেই। এ নিয়ে আতঙ্কিত জনসাধারণ। গত সোমবার থেকে সিলেট নগরীর বেশিরভাগ মার্কেট বন্ধ থাকায় নগরীতে জনসাধারণের উপস্থিতি কমে এসেছে। নগরীর অনেক বড় বড় রেস্টুরেন্টও বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। এজন্য সন্ধ্যার পর বদলে গেছে নগরীর চিত্র। আগের মতো তেমন মানুষের আনাগোনা নেই। যত সময় যাচ্ছে যেন এ এক জনমানবহীন নগরীতে রূপ নিচ্ছে। অবশ্য সন্ধ্যার পর থেকে বেশিরভাগ মার্কেট বন্ধ থাকলেও ছোট ছোট দোকান খোলা রয়েছে। রাস্তায় তেমন লোকজন নেই। অলস সময় পার করছেন বেশিরভাগ দোকানীরা।
এদিকে, মঙ্গলবার হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা নগরীর হাউজিং এস্ট্রেটের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিনের মৃত্যু হলে বের হয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গিয়াস উদ্দিনের ভাতিজা ওমর মাহবুব বলেন, তিনি করোনা রোগী ছিলেননা। এমনকি করোনা সন্দেহে রোগীর শরীর থেকে নেওয়া হয়নি ঘাম কিংবা রক্ত। তিনি যথারীতি কিডনি ডায়ালিসিসের জন্য কিডনি ফাউণ্ডেশনে গেলে ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী শোনেই হোম কোয়ারেন্টাইনে যাবার পরামর্শ প্রদান করে কিডনি ফাউণ্ডেশন। পরবর্তীতে সবকটি ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হলেও কোনো ডাক্তারই চিকিৎসা প্রদানে রাজি হননি।
একই অভিযোগ করোনো সন্দেহে সিলেটে মৃত যুক্তরাজ্য প্রবাসী মহিলার পরিবারের। নগরীর কোনো প্রাইভেট হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তাররা রোগী ভর্তিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ওই মহিলাকে নগরীর শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। সেখানেও নেওয়া হয়নি রোগীর স্যাম্পুল।
তথ্যসূত্র: সিলেট প্রতিদিন
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.