Beanibazarview24.com
স্থায়ীভাবে দেশে ফিরছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফের একমাত্র মেয়ে সৈয়দা রীমা ইসলাম। লন্ডনে ব্যাংকের চাকরি ছাড়ার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে শিগগিরই তিনি দেশে ফিরবেন। বাপ-দাদার শিকড় বাংলাদেশেই বাস করার চিন্তা করছেন তিনি।
রীমা ইসলামের এ সিদ্ধান্তে তাকে ঘিরে স্বপ্ন বোনা শুরু করেছে কিশোরগঞ্জের লোকজন। তারা সৈয়দ আশরাফের রাজনৈতিক উত্তরসূরি হিসেবে তাকে ভাবতে শুরু করেছেন। তবে এ বিষয়ে রীমা কিংবা সৈয়দ আশরাফের পরিবারের কারও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাবা সৈয়দ আশরাফের মতোই মৃদুভাষী, শান্ত ও ধৈর্যশীল রীমা। শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে বাবার জানাজার সময় পাশেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ছিলেন তিনি। এ সময় তাকে দেখে আগামীর সম্ভাবনার ইঙ্গিত খুঁজে পান উপস্থিত মানুষ।
কিশোরগঞ্জের রাজনীতিতে রীমা তার বাবার উত্তরসূরি হতে পারেন- এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও স্ট্যাটাস দিয়েছেন অনেকে। তাকে সৈয়দ আশরাফের আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন অনেকে।কিশোরগঞ্জের লোকজন রীমাকে রাজনীতিতে চাচ্ছেন। তার মাঝেই নির্লোভ, নির্মোহ ও সৎ সৈয়দ আশরাফকে খুঁজে পেতে চাচ্ছে।
কিশোরগঞ্জের সর্বস্তরের লোকজন বলছেন, সৈয়দা রীমা ইসলামই হতে পারেন কিশোরগঞ্জের রাজনীতিতে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের যোগ্য উত্তরসূরি। তার মধ্যে প্রয়াত পিতার অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও দেশপ্রেম স্পষ্ট।
রীমা ইসলামের জন্ম লন্ডন শহরে। সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। এমবিএ পাস করে লন্ডনেই হংকং-সাংহাই ব্যাংক কর্পোরেশনে (এইচএসবিসি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন।
গত বছরের ৩ জুলাই সৈয়দ আশরাফ গুরুতর অসুস্থ হয়ে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে ভর্তি হন। অসুস্থ বাবার শুশ্রূষার জন্য কর্মস্থল ছেড়ে ব্যাংককে ছুটে আসেন রীমা। আশা ছিল উন্নত চিকিৎসায় অচিরেই পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে আবার তার বাবা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আগের মতোই ভূমিকা রাখবেন। কিন্তু সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে অনন্তের পথে পাড়ি জমান সৈয়দ আশরাফ।
রীমার জীবনটাই অনেকটা ট্র্যাজেডি। এক বছরের মাথায় হারান বাবা-মা দুজনকে। ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর পরম মমতাময়ী মা শীলা ইসলামকে হারান। সেই ধাক্কা সামলে ওঠেন বাবার স্নেহ ও অকৃত্রিম ভালোবাসায়। বছর পেরোতেই শেষ আশ্রয় বাবাকেও হারালেন তিনি। ৩ জানুয়ারি ব্যাংককে চিকিৎসাধীন মারা যান বাংলাদেশের রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ আশরাফ।
বাবার লাশ নিয়ে দেশে ফিরে রীমা অবাক হন। দেশের মানুষ যে তার বাবাকে এতটা ভালোবাসে সেটি তার জানা ছিল না। ব্যাংকক থেকে বাবার লাশ নিয়ে ঢাকায় অবতরণের পর শোকার্ত হাজারো নেতাকর্মী আর সাধারণ মানুষের আহাজারি দেখে রীমার চোখ বেয়ে পানি পড়তে থাকে।
কিশোরগঞ্জে বাবার দুই দুটি জানাজায় কয়েক লাখ মানুষের উপস্থিতি ও কান্না রীমাকে ছুঁয়ে যায়। তিনি আবেগ ধরে রাখতে পারেননি।
কর্তব্যের টানে গত মঙ্গলবার বাবার শেষ চিকিৎসাস্থল ব্যাংকক যান রীমা। যাওয়ার আগে বার্তা দিয়ে যান ব্যাংককে হাসপাতালের বকেয়া ও বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করে দেশে ফিরবেন। তার আগে যাবেন নিজের কর্মস্থল লন্ডন শহরে। সেখানে গিয়ে চাকরি ছেড়ে ফিরবেন মাটির টানে।
রীমা ইসলামের চাচা (সৈয়দ আশরাফের চাচাতো ভাই) সৈয়দ তারেকুল ইসলাম ভিক্টর গণমাধ্যমকে জানান, পিতার প্রতি দেশের অকৃত্রিম শ্রদ্ধা দেখে রীমা অভিভূত। সে অচিরেই দেশে ফিরে আসার চিন্তা করছেন। লন্ডনে চাকরি ছাড়ার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে শিগগিরই তার ফিরে আসার কথা রয়েছে।
সূত্রঃ যুগান্তর
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.