Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

বড়লেখায় স্ত্রীকে উত্যক্ত করায় কলেজ ছাত্র কে হত্যা








বড়লেখার বর্নি এম. মুন্তাজিম আলী কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্র প্রান্ত চন্দ্র দাসকে পিসাতো ভাই সুমন চন্দ্র দাস (৩৪) গলাটিপে হত্যার পর আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছিল। আত্মহত্যা ষ্টাবলিস্ট করতে সে নিহত প্রান্ত দাসের মোবাইল ফোন থেকে বন্ধুমহলসহ বিভিন্ন জায়গায় ম্যাসেজ প্রেরণ করেছে। তবে এতসব পরিকল্পনার পরও সুমনের শেষ রক্ষা হয়নি।

প্রান্ত হত্যায় জড়িত সন্দেহে রোববার রাতে পুলিশ তাকেসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সুমন দাস মামাতো ভাই কলেজছাত্র প্রান্তকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে।



চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডটি সুমন দাস একাই করেছে দাবী করলেও তার দেয়া জবানবন্দী এবং হত্যার পেছনে অন্য কোন কারণ রয়েছে কিনা, কিংবা প্রকৃত খুনীদের আড়াল করতে সুমন এমন বক্তব্য দিচ্ছে কিনা পুলিশ তা যাচাই বাছাই করছে। নিহত প্রান্ত দাস উপজেলার সুজানগর ইউপির বাঘমারা গ্রামের মৃত সনৎ চন্দ্র দাসের ছেলে। হত্যাকান্ডের এ ঘটনায় নিহত প্রান্ত দাসের ভাই শুভ দাস সোমবার সন্ধ্যায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ।



সোমবার দুপুরে থানা পুলিশ গ্রেফতার হওয়া সুমন দাসকে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে হাজির করে। এসময় সুমন দাস জানায়, মামাতো ভাই প্রান্ত (১৮) তাদের বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করতো। প্রায়ই সে তার স্ত্রী নিভা রানী দাসকে অসভ্যতামী, উত্যক্ত, খারাপ আচরণ ও আপত্তিকর কার্যকলাপ করতো। এজন্য তাকে হত্যার পরিকল্পনা নেয়। ২৯ অক্টোব রাত ন’টার দিকে সে প্রান্তকে ঝাপটে ধরে।



প্রান্ত দাস পালানোর চেষ্টা করলে পিছু নিয়ে রাস্তায় গিয়ে পুনরায় তাকে ধরে মূখ চেপে ধরলে ভয়ে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে মুখ, হাত-পা বেঁধে পরিত্যক্ত রান্নাঘরের খাটের পিছনে রেখে দেয়। পরদিন পর্যন্ত প্রান্ত জীবিত রয়েছে দেখে গলাটিপে হত্যা নিশ্চিতের পর রাত তিনটার দিকে জানালার গ্রীলের সাথে ঝুলিয়ে রাখে যাতে সহজেই ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে সবাই বিশ্বাস করে। পরদিন সকালে শিশুরা প্রান্ত দাসের লাশ দেখে চিৎকার করেছিল। আত্মহত্যার ঘটনাটি নিশ্চিত করতে প্রান্তের মোবাইল থেকে ঘাতক সুমন দাস বিভিন্ন জায়গায় ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ করেছিল।



এদিকে ছাত্রলীগ নেতা প্রান্ত দাস আত্মহত্যা করেছে এমন প্রচারে এবং লাশ উদ্ধারের দিন থানায় আটক সুমন ও তার স্ত্রীকে প্রভাবশালী মহল ছাড়িয়ে নেয়ায় প্রান্ত দাসের বাবা-মা ও স্বজনদের মাঝে হতাশা বিরাজ করে। এম মুন্তাজিম আলী কলেজের সহপাঠীসহ সকল শিক্ষার্থী লাশ উদ্ধারের পরদিন থেকে ক্লাস বর্জনসহ নানা কর্মসুচি পালন করে। এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড দাবী করে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসুচি ও প্রতিবাদ সমাবেশ চালিয়ে যায়।



তারা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রান্ত হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবী জানায়। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংদসের হুইপ শাহাব উদ্দিন ময়না তদন্তে হত্যার আলামত পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা গত ৮ নভেম্বর ক্লাসে ফিরে যায়। রোববার দুপুরে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর থানা পুলিশ প্রান্ত দাসের হত্যাকারীদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে।



অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) মো. আবু ইউসুফ সোমবার সন্ধ্যায় জানান, রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় লাশ উদ্ধারের পর প্রাথমিকভাবে থানায় ইউডি মামলা হয়। ময়না তদন্তে লাশ পাঠানোর পর পুলিশ হত্যার ইঙ্গিত পেয়েছিল কিন্তু প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছিল না। ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে হত্যার প্রমাণ পাওয়ায় রোববার রাতেই অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ ৫ জনকে আটক করে। এরমধ্যে নিহতের মামাতো ভাই সুমন দাস প্রান্তকে গলাটিপে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।



তবে সে একাই এ হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে, নাকি আরো সহযোগী রয়েছে তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। এছাড়া স্ত্রীর সাথে অসভ্যতামীর কারণে নাকি অন্য কোন কারণে প্রান্তকে খুন করেছে, নাকি প্রকৃত খুনিকে আড়াল করতে সুনম এ জবানবন্দী দিয়েছে তা গুরুত্ব সহকারে পুলিশ তদন্ত করছে।





You might also like

Comments are closed.