Beanibazarview24.com
সিলেট বিভাগের কোটি মানুষের উন্নত চিকিৎসার ভরসাস্থল ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। কিন্তু চিকিৎসা নিতে এসে দালাল ও ফার্মেসি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেয়া ব্যবস্থাপত্র কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে রোগীদের জিম্মি করে ঔষধে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি মূল্য। অনেক সময় চড়ামূল্যে রোগীদের দেয়া হচ্ছে মেয়াদোর্ত্তীণ ঔষধ।
ফলে রোগ নিরাময়ের পরিবর্তে এসব ঔষধ রোগীদের জন্য প্রাণঘাতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করলে রোগী ও তাদের স্বজনদের আটকে রেখে মারধরও করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে দালাল ও ফার্মেসি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার ওসমানী হাসপাতাল রোডের ফার্মেসিগুলোতে অভিযানকালে রোগী জিম্মি করে এমন তুঘলকি কান্ডের প্রমাণ পায় ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় দুই ফার্মেসিকে দেড় লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়।
সূত্র জানায়, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রোডের ফার্মেসি গুলোতে ঔষধের মূল্য রাখা হয় নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি, রোগীদের এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ভূক্তভোগীদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই এলাকার ফার্মেসিগুলোতে অভিযান চালায় র্যাব। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে অভিযানকালে ভূক্তভোগীদের অভিযোগের সত্যতাও পায় তারা।
হাসপাতাল রোডের হেনা ফার্মেসিতে অভিযান করতে গিয়ে হতবাক হয়ে যান র্যাব কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ফার্মেসিতে দেখতে পান বিপুল পরিমাণ মেয়াদোর্ত্তীণ ঔষধ। যেগুলো নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের। এসব ঔষধ খেয়ে রোগী ভালো হওয়াতো দূরের কথা জীবন বাঁচানো নিয়ে দেখা দিচ্ছে সংশয়। ফার্মেসি ব্যবসার নামে এমন অনৈতিক কাজের দায়ে হেনা ফার্মেসিকে জরিমানা করা হয় এক লাখ টাকা। অভিযানকারী দল একই অবস্থা দেখাতে পান পাশর্^বর্তী সুমাইয়া মেডিসিন কর্নারেও। ওই ফার্মেসিকেও জরিমানা করা হয় ৫০ হাজার টাকা।
অভিযানকারী ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খৃষ্টফার হিমেল রিসিল জানান, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসার পর দালালরা কৌশলে ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) হাতিয়ে নেয়। এরপর রোগীর স্বজনদের নিয়ে আসা হাসপাতালের সামনের ফার্মেসিগুলোতে। সেখানে ফার্মেসির লোকজন ব্যবস্থাপত্র তাদের কাছে রেখে দিয়ে বাকিতে ঔষধ দেন। পরে রোগী ছাড়পত্র নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করার সময় তাদের হাতে মোটা অংকের বিল ধরিয়ে দেয়া হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিসিল আরও জানান, একজন রোগীকে প্রায় ৩ হাজার ২‘শ টাকার ঔষধ দিয়ে ফার্মেসি মালিক প্রথমে দেড় হাজার টাকা নেন। পরে আরো ৩ হাজার ৯‘শ টাকা দাবি করেন। রোগীর স্বজনদের জিম্মি করে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ২ হাজার ২‘শ টাকা বেশি আদায়ের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ভোক্তা অধিকার আইনে ওই ফার্মেসিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অন্য আরেক ফার্মেসিকে জরিমানা করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। দালাল ও ফার্মেসি মালিক সিন্ডিকেট হতে রোগীদের রক্ষায় এরকম অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
সূত্রঃ সিলেটভিউ২৪ডটকম
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.