Beanibazarview24.com
বিশাল স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি জমিয়েছিন সুদূর প্রবাসে। পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে সৌদি আরবে কাজ করতে যাওয়া ১০০ জনেরও বেশি শ্রমিক কয়েকদিন আগে বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন। আর এদের মধ্যে ৮১ জনই নারী শ্রমিক।
বিবিসি সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন ১০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক। এ সপ্তাহে বাংলাদেশে ফের আসা কয়েকজন নারী শ্রমিক বিবিসির সঙ্গে কথা বলেছেন। এদের মধ্যে আমেনা বেগম (ছদ্ম নাম) অন্যতম একজন।
বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে তিনি তুলে ধরেন তার সৌদি আরবে থাকা দিনগুলোর গল্প।
সিলেটের মৌলভীবাজারের বাসিন্দা আমেনা বেগম (ছদ্ম নাম) সৌদি আরবের রিয়াদে প্রায় দেড় বছর ছিলেন। যার মধ্যে ৫ মাসই তাকে কাটাতে হয় পুলিশের হেফাজতে।
আমেনা বেগম জানান, যে বাসায় তিনি কাজ করতে গিয়েছিলেন, সেখানে যৌন প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় তাকে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়।
তিনি বলেন, ‘যৌন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় টানা তিনদিন আমাকে খেতে দেওয়া হয়নি। একপর্যায়ে মেরে হাত ভেঙে দেওয়া হয় এবং বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। তারপর বাসার সামনে গভীর রাতে পুলিশ আমাকে পায় এবং থানায় নিয়ে যায়।’
পরবর্তীতে চিকিৎসা দেওয়ার পর সেখানকার এজেন্টের মাধ্যমে তাকে আবারও ওই বাড়িতেই ফিরে যেতে বাধ্য করা হয় বলে জানান ভুক্তভোগী এই নারী।
সেখানে ফিরে যাওয়ার পর আবারও বেশ কিছুদিন তার ওপর শারীরিক অত্যাচার এবং যৌন নির্যাতন চলে বলে জানান তিনি।
শারীরিক অত্যাচারের পর একপর্যায়ে তাকে আবারও একদিন রাতে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হলে পুলিশ তাকে বাসার সামনে খুঁজে পায় এবং পরবর্তীতে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয় তাকে। পরে পুলিশের হেফাজত থেকেই দেশে ফেরার ব্যবস্থা হয় তার।
২৫ বছর বয়সী এই নারী দালালের মাধ্যমে সৌদি আরব যাওয়ার পর গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন। যদিও যাওয়ার আগে তার কাছে গোপন করা হয়েছিল যে গৃহকর্মীর কাজের জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
আমেনা বেগম জানান, সৌদি আরব যাওয়ার জন্য দালালকে ১ লাখ টাকা দিতে হয় তাকে। কিন্তু সেখান থেকে ফেরার সময় তাকে ফিরতে হয় খালি হাতে।
নির্যাতনের শিকার আমেনা বলেন, ‘বাবা-মা সুদে টাকা ধার নিয়ে আমাকে সৌদি পাঠিয়েছিল। সেখানে সব নির্যাতন, অত্যাচার সহ্য করেও কাজ করতাম টাকার জন্য। কিন্তু টাকা চাইলেই আমার ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হতো। একবছর কাজ করলেও শেষপর্যন্ত দুইমাসের আংশিক বেতন দেওয়া হয় আমাকে।’
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.