Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

চার লেনে বদলে যাবে সিলেট







দীর্ঘ অনিশ্চয়তার পর অবশেষে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে সিলেট-ঢাকা চার লেন মহাসড়ক প্রকল্প। বর্তমান সরকারের শুরুতেই ঘোষণা দিয়েছে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের। আগামী জুন মাসের মধ্যে মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার কাজ শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন নতুন সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তার এই ঘোষণার পর ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পায়ন ও পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনা দেখতে শুরু করেছে সিলেটের মানুষ।

মহাসড়কটি শুধু যোগাযোগ ক্ষেত্রে নয়, এর মাধ্যমে শিল্পায়নে পিছিয়ে পড়া সিলেটে শিল্প বিপ্লব ঘটারও সম্ভাবনা দেখছেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে মহাসড়কটি অর্থনৈতিক করিডোরের ভূমিকাও পালন করতে পারে- এমন প্রত্যাশা ব্যবসায়ী নেতাদের। এতে করে সিলেটের স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসারও সম্ভাবনা দেখছেন তারা।



সিলেট-ঢাকা মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার দাবি সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের। এ দাবিতে সিলেটের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। ২০১৫ সালে জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধির চাকরি শেষে দেশে ফিরে সিলেট-ঢাকা চার লেন মহাসড়কের স্বপ্ন নতুন কওে দেখিয়েছিলেন ড. এ কে আবদুল মোমেন। তার প্রচেষ্টায় ২০১৬ সালের অক্টোবরে অনেকটা আলোর মুখ দেখে প্রকল্পটি। চীনের ‘চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিকে’ দিয়ে মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরুর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজের প্রাক্কলন ব্যয় নিয়ে দর কষাকষিতে একমত না হওয়ায় বাদ পড়ে চায়না হারবার।



২০১৮ সালের শুরুতে নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটির কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত হলেও শেষ পর্যন্ত নানা জটিলতায় শুরু হয়নি প্রকল্পের কাজ। বারবার বাধাগ্রস্ত হলেও হাল ছাড়েননি ড. মোমেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি আবারও এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন সিলেটবাসীকে। অবশেষে গত ১০ জানুয়ারি মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ জুনের মধ্যে শুরুর ঘোষণা দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।



২২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত হলে সিলেটের অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন সিলেটের মানুষ। এতে কমে আসবে ঢাকার সঙ্গে সিলেটের যাতায়াতের সময়। এই মহাসড়কটি সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনার দ্বার খুলবে সিলেটের সীমান্তবর্তী ভারতের সাতটি রাজ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের। ব্যবসায়ী নেতারা মনে করছেন, মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত হওয়ার পর প্রবাসী ও স্থানীয় শিল্পপতিরা শিল্পখাতে সিলেটে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন। সে দেশের দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ভারতের যে সাতটি রাজ্য বাংলাদেশি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল সেসব রাজ্যে আরও বেশি করে পণ্য রপ্তানি সম্ভব হবে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে সিলেটে বিশেষ ইকোনমিক জোন বা শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার যে পরিকল্পনা রয়েছে তা বাস্তবায়নেও এই মহাসড়কটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ ছাড়া ভারত ছাড়া ভুটান ও নেপালের সঙ্গেও ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণের ব্যাপারে আশাবাদী ব্যবসায়ী নেতারা। এ মহাসড়কটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক করিডোর হিসেবে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি এ অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন তারা। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, রপ্তানি বাণিজ্যের পাশাপাশি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে নির্মিতব্য আইসিটি পার্কের কার্যক্রমেও চার লেনের এই মহাসড়ক বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

চার লেনে মহাসড়কের কারণে সবচেয়ে বেশি প্রসার ঘটবে সিলেটের পর্যটনখাতের- এমন ভাবনা পর্যটন ব্যবসায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের। তাদের মতে, অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে দিন দিন পর্যটনপ্রেমীরা সিলেটবিমুখ হচ্ছেন। কিন্তু চার লেনের মহাসড়ক হলে পর্যটকরা কম সময়ে ও সহজে সিলেট বিভাগের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে যেতে পারবেন।

এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও আটাব সিলেটের সভাপতি আবদুল জব্বার জলিল বলেন, সিলেটে প্রতিবছর নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে। এতে দেশীয় পর্যটকের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। মহাসড়ক চার লেন হলে সিলেটের পর্যটনের প্রকৃত বিকাশ ঘটবে। এ ছাড়া সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের সঙ্গে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কও চার লেন করা গেলে যারা ভারতের শিলংয়ে বেড়াতে যান তাদেরও সিলেটের প্রতি আকৃষ্ট করা যাবে। এতে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।

তিনি আরও বলেন, সিলেটে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ইলেকট্রনিক্স সিটি হচ্ছে। সিলেট-ঢাকা মহাসড়কটি চার লেন হলে সিলেটের প্রবাসীরাও বিনিয়োগে এগিয়ে আসবেন।





You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.