Beanibazarview24.com
বাংলাদেশের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষের খোঁজ মিলেছে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায়। তিনি উপজেলার ঘিলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম যুধিষ্ঠিপুর গ্রামের তৈয়ব আলী।
এমন খবরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লম্বা চওড়া বৃদ্ধ এক লোক বাড়ির উঠানে রোদ পোহাচ্ছেন। দেখেই বুঝা যায় প্রায় সাড়ে ছয় ফিট লম্বা এই মানুষ এক সময় সুঠাম দেহের অধিকারী ছিলেন।
দেখা হতেই তিনিই সালাম দিয়ে হাত মিলালেন। উঠে দাঁড়িয়ে ঘরে নিয়ে গেলেন। আমি তো অবাক ভাবছিলাম তিনি এত বয়স্ক মানুষ নিশ্চয়ই বিছানাবন্দি। কিন্তু না তিনি এখনো সবল। হাঁটাচলাও করেন স্বাভাবিকভাবে, চোঁখেও দেখেন।
তৈয়ব আলীর সাথে আলাপ করে জানা যায়- তার বয়স ১৩৫ বছর। কিন্তু তার জাতীয় পরিচয়পত্রে বলা হয়েছে তার জন্ম ১৯১২ সালে। এ কথা উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, এ তথ্য ঠিক নয়। নির্বাচনের সময় লোকজন এসে পরিচয়পত্র বানিয়েছে। তার বয়স কত তা জিজ্ঞেস না করেই অনুমান করে একটা সাল বসিয়ে দেয়া হয়েছে। নিজস্ব হিসাবে তার জন্ম ১৮৮৪ সালে। সে অনুযায়ী বর্তমানে উনার বয়স চলছে ১৩৫ বছর।
আলাপে জানা যায়, ১০ ছেলে ও ৩ মেয়ের জনক তিনি। ছেলেদের মধ্যে বর্তমান বড় শামসুল ইসলাম যার বয়স ৮২ বছর। এর আগে বড় আরো দুই জন মারা গেছেন।
তিনি জানান সে সময় চতুর্থমান (ক্লাস ফোর) পর্যন্ত পড়াশোনার ব্যবস্থা ছিল তিনিও চতুর্থমান পাশ। এখনো পড়তে পারেন। অনেকটাই মনে আছে ব্রিটিশ যুদ্ধ, ৫২’র ভাষা আন্দোলন ৭১’র স্বাধীনতা যুদ্ধ। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ উনার কাছে এই পরশু দিনের ঘটনা। আলাপে রসিক তৈয়ব আলী জানালেন তার বিয়ের স্মৃতিগুলো।
বর্তমানে ছেলে-মেয়ে নাতি-নাতনীসহ মোট ৬৯ জনের বিশাল পরিবার তৈয়ব আলীর। এ যুগের নাতি-নাতনীদের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে অসুবিধা হয় কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, না কোন অসুবিধা হয় না তিনিও স্মার্ট।
আলাপে যোগ করলেন তিনি আমেরিকা ভ্রমনে যেতে চান। ওখানে থাকা খাওয়া কাজ ইত্যাদির ব্যাপারে বলেন, পারব না, এরকম না। পরিস্থিতি বলে দিবে কখন কি করব। দারুণ আত্মবিশ্বাস এ তৈয়ব আলী নানা ইতিহাসের সাক্ষি তৈয়ব আলীর বাবাও ছিলেন দীর্ঘ বয়সী। বাবা আমজদ উল্লাহ মারা যান ১১৩ বছর বয়সে।
১৩৫ বছর বয়সী তৈয়ব আলী শারিরীক ভাবে যথেষ্ট সবল। ভাল আছে চোঁখ ও কান। দাঁত কিছু পড়ে গেছে কিন্তু এ দায় দিলেন দাতের ডাক্তারদের। তিনি বলেন- দাঁতে ব্যথা হলে ডাক্তার দাত ফেলে দেয়।
জানা যায়, শতবর্ষ আগে মোমিনছড়া চা বাগান প্রতিষ্ঠার সময় বাগান কতৃপক্ষকে ৬ টাকায় ভুমি লিজ দিয়েছেন তৈয়ব আলী। তা ছাড়া পড়াশোনার ব্যাপারে তিনি বলেন, তখন সরপঞ্চ ছিলেন আব্দুর রশীদ চৌধুরী। আব্দুর রশীদ চৌধুরীর বাড়িতেই ছিল চতুর্থমান স্কুল। এ বাড়িকে বলা হয় বিছাই মিয়ার টঙ্গী। এ টঙ্গী ঘরের পাঠদান দেওয়া হত। খোঁজ নিয়ে তৈয়ব আলীর তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়।
এরআগে ইন্দোনেশিয়ায় সোদিমেদজো নামের ব্যক্তির বয়স ছিল ১৪৬। তিনি মারা যাওয়ার পর ‘বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ’ মনে করা হচ্ছিল বাংলাদেশের পাবনার ফরিদপুর উপজেলার বিএল বাড়ির আহসান উদ্দিন শাহকে। গত বছর ১২৬ বছর বয়সে মারা যান তিনি। তৈয়ব আলীর ব্যাপারে এলাকাবাসীর দাবি- অনুসন্ধান ও ডাক্তারি পরীক্ষা করালে তিনিই হবেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি।
সূত্রঃ সিলেটভিউ২৪ডটকম
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.