Beanibazarview24.com
এক কালের খড়স্রোত প্রমত্তা কুশিয়ারা নদী নাব্যতা হারিয়ে মরা গাঙ্গে পরিণত হচ্ছে। দীর্ঘ কয়েক যুগেও খনন না হওয়ায় নদীর বুকে চর ও ডুবোচর জেগে উঠেছে। ফলে নদী পথে নৌযান চলাচল বন্ধ হওয়ায় উপক্রম হয়ে গেছে। নদীর পানির ধারণ ক্ষমতা একেবারেই কমে যাওয়ায় পাহাড়ি ঢল কিংবা মৌসুমী বৃষ্টিপাতে নদীর তীরবর্তী জনপদ বন্যা কবলিত হয়। এছাড়াও বোরো মৌসুমে কৃষকের ফসল অকাল বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এদিকে সুনামগঞ্জের পাগলা-জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ-আউশকান্দি-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর বুকে জেগে উঠছে ডুবোচর। নদীর যে এলাকায় চর জেগে উঠেছে এখান দিয়ে সুনামগঞ্জের পাগলা-জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ-আউশকান্দি
-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের যানবাহন পারাপারের জন্য ফেরী চলাচল করে। বর্তমানে যানবাহন পারাপারের একমাত্র মাধ্যম ফেরীটি ডুবোচরে আটকে যাওয়ার ফলে উল্লেখিত অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা যে কোন সময় বন্ধ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এতে করে জন দূর্ভোগ ও ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করবে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুশিয়ারা নদীর বুকে রানীগঞ্জ ফেরীর সামনে ছোট ছোট অনেকগুলি চর জেগে উঠেছে যা বর্তমানে ফেরীটি নির্দিষ্ট নদী পথ দিয়ে পারাপার হতে পারছেনা। প্রায় তিন ফুট পানির উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ফেরীটি চলাচল করছে। অনেক সময় চরের সাথে ফেরীটি আটকে যায়। যাহা ঢাকা সুনামগঞ্জ রোডের যানচলাচলের জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলার এমপি মন্ত্রী সহ জনসাধারণ থেকে শুরু করে সরকারী কর্মকর্তাগন রানীগঞ্জ ফেরী দিয়ে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাতায়াত করেন। প্রতিদিন শত শত মালবাহী ট্রাক, ট্রাক্টর, যাত্রীবাহী বাস, মিনি বাস সহ ছোটবড় যানবাহন চলাচল করছে।
এ বিষয়ে রানীগঞ্জ ফেরী ঘাটের ইজাদারদার আরকে গ্রুপের এমডি আবুল কাসেম বলেন, দ্রুত নদী খনন করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা না হলে যেকোনো সময় ফেরীটি বন্ধ হয়ে যাবে। এতে আমার প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। পাশাপাশি এই বিশাল এলাকার জনগণের জীবন যাত্রার মান আবার পিছিয়ে যাবে। জনদূর্ভোগ সৃষ্টি হবে। আমি সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি কর্মকর্তা ও মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে আকুল আবেদন করছি, জনদূর্ভোগ সৃষ্টি হওয়ার আগেই যেন এই সমস্যাটির সমাধান হয়।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে বলেন, যখন ফেরীটি চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে, তখন আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করব। গত তিন বছর ফেরী আটক হয় নাই আগামী তিন বছরেও ফেরী আটকা পড়বে না।
যখন ফেরী চলাচল বন্ধ হবে তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করা হবে। উল্লেখ ২০১৮ সালে ফেরীর সামনে যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবোচরে আটকে যায়। মালবাহী নৌযান বর্তমানে ডুবোচরে আটকে যাওয়ার ভয়ে নদী পথ দিয়ে চলাচল বন্ধ করেছে। উল্লেখিত স্থানে অনতিবিলম্বে নদীটি খনন করা না হলে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র মাধ্যম ফেরী দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। এব ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ফেরী কর্তৃপক্ষ ও এলাকার জনসাধারণ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.