Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

৭ বছর ধরে রাতে মসজিদ পরিষ্কার করছেন মুক্তিযোদ্ধা







স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ঝুঁকির মধ্যে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রান্না করে খাইয়েছেন। বিভিন্ন অপারেশনে গোলাবারুদ কাঁধে তুলে নিয়ে পৌঁছে দিয়েছেন গন্তব্যে। ১১ নং সেক্টরে থেকে নিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের উপর প্রশিক্ষণও। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও মেলেনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি। হাজারো সহযোগী মুক্তিযোদ্ধাদের ভীড়ে নিভৃতে সময় কাটছে কুড়িগ্রামের উলিপুর শহরের আব্দুল গণি মিয়ার (৬৭)। দিনে তিনি কাপড়ের দোকানের সামান্য কর্মচারি। আর রাতে গোপনে পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি।



দেশ স্বাধীনের আগে ভারতসহ বিভিন্ন জায়গায় ফুটবল খেলে সুনাম কুড়িয়েছিলেন আব্দুল গণি। ক্রীড়ামোদী এই মানুষটি জীবন সায়াহ্নে এসে নিজ উদ্যোগে উলিপুর বড় মসজিদে (মসজিদুল হুদা) করছেন পরিচ্ছন্নতার কাজ। এই কাজ করে খুশি তিনি। প্রতিদিন রাত ৯টার পর চলে আসেন মসজিদ কমপ্লেক্সে। ঝড়-বৃষ্টি-শৈত্যপ্রবাহ তাকে আটকে রাখতে পারেনি। এখানে এসে নিজের ক্রয় করা সামগ্রী দিয়ে মসজিদের অজুখানা, প্রস্রাবখানা, অপরিস্কার ড্রেন পরিস্কার করেন। এই কাজগুলো শেষ করতে পার হয়ে যায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা। এরপর বাসায় ফেরেন আব্দুল গণি। এভাবে ৭/৮ বছর ধরে এই সেবামূলক কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।



ব্যক্তিগত জীবনে ৬ সন্তানের জনক এই মুক্তিযোদ্ধা ৩ ছেলে ও ৩ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। সবাই যার যার সংসারে ব্যস্ত।

আব্দুল গণি মিয়া জানান, ছোট বেলা থেকেই তিনি ছিলেন ডানপীটে স্বভাবের। খেলাধূলার প্রতি ছিল অসম্ভব টান। দেশ স্বাধীনের পূর্বে ভারতের মাইনকার চর, বকবান্দাসহ কুড়িগ্রাম, রংপুর, রাজশাহীর বিভিন্ন জায়গায় ফুটবল খেলে পরিচিতি লাভ করেন। এখনো ভালোবাসেন ফুটবলকে। স্থানীয়ভাবে লালদল ক্রীড়া সংগঠনের সাথে জড়িত। দুস্থ খেলোয়াড়দের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে যে ভাতা প্রতি বছর দেয়া হয় তা তিনি পেয়েছেন কয়েকবার।



তিনি আরো জানান, শহরের কে পি সাহা এন্ড বস্ত্রালয় কাপড়ের দোকানে কর্মচারী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত দোকানের কাজ শেষ করে তিনি ছুটে যান মসজিদুল হুদায়। সেখানে থাকা বিরাট অজু খানা, প্রস্রাবখানা, ড্রেনসহ মসজিদ ভবনের বাহিরের অংশ তিন ঘন্টারও বেশি সময় ধরে পরিস্কার করেন তিনি। পরে গভীর রাতে বাড়িতে গিয়ে গোসল সেরে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।



মুক্তিযোদ্ধা গণি জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশ মাতৃকাকে মুক্ত করতে ১১ নং সেক্টরের প্রশিক্ষক নজরুল ইসলামের কাছে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলেও ওই সময় জেলার উলিপুর ও চিলমারীতে বিভিন্ন অপারেশনে মুক্তিযোদ্ধাদের গোলাবারুদ বহন এবং ক্যাম্পে রান্না বান্নার কাজ করে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন।



উলিপুর মসজিদুল হুদা’র সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব দেলোয়ার হোসেন জানান, গণি ভাই যে কাজটা করেন সেটা মেথর বা সুইপারের করার কথা। দীর্ঘদিন থেকে নিজ উদ্যোগে অত্যন্ত আনন্দের সাথে কাজটুকু করেন তিনি। ঝড়-বৃষ্টি, শীত উপেক্ষা করে গভীর রাত পর্যন্ত তিনি শ্রম দেন। উনি কখনোই এ জন্য পারিশ্রমিক চাননি। আল্লাহর ঘরের খেদমত করাকে তিনি নিজের কাজ হিসাবে বেছে নিয়েছেন।

সাবেক উলিপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এম ডি ফয়জার রহমান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি গণি মিয়ার নাম অর্ন্তভূক্ত করে কেন্দ্রে প্রেরণ করেছেন। যুদ্ধকালীন তার ভূমিকার জন্য ১১ নং সেক্টরের প্রশিক্ষক নজরুল ইসলাম ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের প্রত্যয়নপত্র তার রয়েছে।














You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.