Beanibazarview24.com
সামান্য এক গাড়ির খালাসি ২০০২ সালের লটারিতে দেড় কোটি টাকা জিতে রাতারাতি রাজা বনে যান আজিজ মোল্লা। কিন্তু ভাগ্যের কী পরিহাস! মাত্র এক বছরের মধ্যেই সব অর্থ খুইয়ে রাস্তার ফকির হয়েছেন তিনি। আর ২০০০ কোটি লটারিতে জিতে ট্রাকচালক এখন রাজা।
২০০২ সালের এক শীতের বিকেল। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হাসনাবাদের মুরারিশা গ্রামের বাসিন্দা আজিজ মোল্লা যান এক দোকানে চা খেতে। সেখানে একজনের অনুরোধে ১০০ টাকা দিয়ে দীপাবলি বাম্পার’ নামের এক লটারির টিকিট কেনেন। পরের দিনই লটারি ড্র হয় হয়। লটারি জিতে রাতারাতি রাজা বনে যান আজিজ।
মুরারিশা গ্রামের সেই ‘রাজকাহিনী’ এখনও লোকের মুখে মুখে ফেরে। সেদিন আজিজকে একটি নজর দেখার জন্য তার বাড়ির সামনে জনসমুদ্র! আজিজের কাছ থেকে টিকিট কেড়ে নেয়ারও চেষ্টা হয়। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।
সরকারি রাজস্ব কাটার পরে আজিজের হাতে আসে ৬৮ লাখ টাকা। একবার তার দেখা পেতে, তার ছোঁয়া লটারির টিকিট কাটতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। স্থানীয় বাজারে রাতারাতি গজিয়ে ওঠে একাধিক লটারির দোকান। ঝড়ের গতিতে টিকিটও বিক্রি হতে থাকে।
এ যেন আরব্য উপন্যাসের পাতা থেকে উঠে আসা এক রূপকথা। পুরস্কারের অর্থে আজিজ মোটরবাইক, বাস, গাড়ি এবং নতুন আসবাবপত্র কেনেন। হঠাৎ ধনী হওয়া আজিজের আরো নতুন নতুন অভ্যাস তৈরি হয়। বন্ধুদের নিয়ে ঘন ঘন কলকাতার হোটেলে যাতায়াত শুরু করেন। আরো নানা আমোদ-প্রমোদে মেতে ওঠেন আজিজ।
বাবা-মা এবং আট ভাই-বোনকেও এক লাখ টাকা করে বিলিয়ে দেন। সেই সঙ্গে আর একটা নেশায় পেয়ে বসে তাকে। সেটা হলো লটারির টিকিট কেটে ফের অর্থ জেতা। তখন অন্তত ৮-১০ লাখ টাকার টিকিট কেনেন আজিজ।
কিন্তু না, আর কোনও টিকিট আজিজকে রাজা করেনি। উল্টো লোভে পড়ে আরও টিকিট কাটার নেশা বেড়ে যায় আজিজের। বছর খানেকের মধ্যে পুরস্কারের সব টাকা শেষ।
তারপর হাত পড়ে পরিবারের জমানো টাকা ও স্ত্রীর অলঙ্কারেও। বাড়তে থাকে ধার। সুখের দিন দ্রুত শেষ হয়। পাওনাদারেরা আজিজের আসবাব, গাড়ি, এমনকি শান বাঁধানো পুকুর ঘাটের ইট পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে।
স্ত্রী সাফিনুর বিবি এবং তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে কোনোমতে দিন গুজরান করেন আজিজ। স্ত্রীর বাঁধা বিড়িতে টান দেন। এমন দিন আসবে ভাবিনি। কয়েক মাস আগেও একটা মাংসের দোকানে কাজ করতাম। সেটাও গেছে। জানি না কী হবে!
সাফিনুরের আক্ষেপ, স্বামী গাড়িতে কাজ করত। আমি বিড়ি বাঁধতাম। সংসার চলে যাচ্ছিল। এ লটারিই সব শেষ করে দিল।
এদিকে কয়েক দিন আগে ডেভিড ছিলেন একজন ট্রাক ড্রাইভার। কিন্তু আচমকাই একটা লটারির টিকিট বদলে দিয়েছে তার জীবন। যেমন-তেমন অঙ্ক নয়, একেবারে ২৯৮ মিলিয়ন ডলারের লটারির টিকিট জিতেন তিনি, যার পরিমাণ ২০০০ কোটি টাকারও বেশি! এবার তাই নতুন করে জীবন শুরু করতে চাইছেন ৫৬ বছরের ডেভিড জনসন।
আমেরিকার নিউইয়র্কের বাসিন্দা ডেভিড গত ২৬ ডিসেম্বর ট্রাকে গ্যাস ভরতে গিয়ে ৫ ডলার দিয়ে কিছু লটারির টিকিট কিনেছিলেন। কিন্তু তারপরেই অসুস্থ হয়ে পড়ায় আর তার পক্ষে ওই লটারির নম্বর মিলিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি। কিছুদিন পর তার বন্ধু তাকে ফোন করে জানান যে, এবারের লটারির বিজয়ী টিকিটটি বিক্রি হয়েছে ওই গ্যাস স্টেশন থেকেই। তখনও নিজের ভাগ্যের উপরে অতটা ভরসা করতে পারেননি জনসন। জেতেননি ভেবে মিলিয়েও দেখেননি নিজের টিকিটের নম্বর।
এরপর গত ২৫ জানুয়ারি নিজের টিকিটের নম্বর মিলিয়ে চোখ কপালে ওঠে তার। দেখেন যে, পাওয়ার বল নামে পরিচিত লটারির জ্যাকপট জিতেছেন তিনি। তখনই তিনি ঠিক করেন যে, আর ট্রাক চালানোর মতো শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করবেন না। বাড়িতে তার স্ত্রীও প্রথমে তার এ কথা বিশ্বাস করেননি।
তবে আবেগ বশে রেখেছিলেন ডেভিড। সঙ্গে সঙ্গে পুরস্কার দাবি করে বসেননি তিনি। বরং লটারির টিকিটটি যত্ন করে রেখে দিয়েছিলেন যাতে সেটি হারিয়ে না যায়। এ টাকায় একটি লাল পোর্শে গাড়ি ও নিজের স্ত্রী ও মেয়ের জন্য নিউইয়র্কে একটি সুন্দর বাড়ি কেনার ইচ্ছা আছে ডেভিডের।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.