Beanibazarview24.com
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে একটি র্যাগিংয়ের ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের টাইমলাইনে ঘুরছে র্যাগিংয়ের ১ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ভিডিওটি। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, এ ধরনের কোনো ঘটনা সেখানে ঘটেনি। যে ভিডিওটি ভাইরাল করা হয়েছে সেটা বানানো। যে ছাত্রকে র্যাগিং করা হয়েছে সেই ছাত্র নিজেই স্বীকার করেছে এ ভিডিও তারা ফান করে করেছে।
সেখানে দেখা যায়, মাইলস্টোন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের বেশকজন (আট থেকে দশজন) শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে র্যাগ দিচ্ছে, প্রথমে ওই প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষের দরজা লাগিয়ে দিতে বলা হয়। তারপর র্যাগিং করা কেউ কেউ বলে উঠে ‘ভিডিও কর’।
প্রথম বর্ষের ওই শিক্ষার্থী সরি বলার পরও র্যাগ দেওয়া শিক্ষার্থীদের একজন প্রথমে গালে থাপ্পড় দেয়। এরপর উপর্যপুরি কিল আর ঘুষি চলতে থাকে, শিক্ষার্থীটি বার বার ভুল স্বীকার করাও পরও তাকে মারা হয় এক পর্যায়ে সে কান্নাও করে দেয়। পরে ওই শিক্ষার্থীকে কানে ধরিয়ে উঠবস করানো হয় এবং আবার কিল ঘুষি দেওয়া হয়। ভিডিওর শেষদিকে দেখা যায় র্যাগ দেওয়া শিক্ষার্থী ওই শ্রেণিকক্ষ থেকে ওই শিক্ষার্থীকে বের করে দেয়।
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের এমন ঘটনাটি ফেসবুকে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছে।
ভাইরাল ভিডিও নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির স্কুল শাখার প্রিন্সিপাল মো. আশরাফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকটা রুমে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। এ ধরনের কোনো ঘটনাই নাই। যে ছেলে এটা (ভিডিও) দিছে সে আমাদের কাছে বলছে স্যার এটা আমরা ফান করছি। আমাদের ভয়ে ছেলেরা অস্থির থাকে সবসময়। এ সমস্ত করার কোনো সুযোগ নাই। ’
তিনি আরও বলেন, ‘নিজেরাই এসব করছে তারা। যে ছেলে মার খাইছে সে ছেলেই আবার বলেছে এটা আমরা ফান করেছি স্যার। ’
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীরা বলছে বিষয়টি অনেক লজ্জার। নাজিম আল শমষের নামের এক সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের কলেজে এ ধরণের কোনো র্যাগিং আগে ছিল না, বিষয়টি নতুন যুক্ত হয়েছে। র্যাগিংয়ের নামে এমন নির্যাতন অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। এসব বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাবার সময় হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে পরে কেউ আর এমনটা করতে পারবে না।
কলেজের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এখন যারা প্রথমবর্ষে এখানে অধ্যায়নরত তারা ইতিমধ্যে ছয়মাস পার করে ফেলেছে। এতোদিন পর কেন র্যাগিং বিড়ম্বনায় পড়তে হবে শিক্ষার্থীদের?
তবে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, র্যাগিংয়ের ভিডিওটি সম্পূর্ণ একটা অভিনয়। ফেসবুকে বিষয়টি দিয়ে মানুষদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
গত শনিবার গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) দুই শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠে। এরপর গত সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আজীবন বহিষ্কার হওয়া ৬ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে।
ভিডিওটি দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন…
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.