Beanibazarview24.com
দেশের অন্যান্য স্থানে কমবেশি তেজপাতা জন্মালেও সিলেটে উৎপাদিত হয় বাণিজ্যিকভাবে। সিলেটে উৎপাদিত তেজপাতা শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানি করা হয় বিদেশে। টিলাভূমিতে ভালো জন্মায় বলে সিলেটে বেশিরভাগ বাড়িতে তেজপাতাগাছ রোপণ করা হয়।
সিলেটের বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তেজপাতার চাষ হচ্ছে। উৎপাদিত এ তেজপাতা রফতানি হয় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। মসলা হিসেবে পাতাটি বিশ্বকে মুগ্ধ করেছে।
সিলেট কৃষি বিভাগ জানায়, জৈন্তাপুরে ১০ হেক্টর জমিতে তেজপাতার চাষ হচ্ছে। বিয়ানীবাজারে ৮ হেক্টর, গোলাপগঞ্জে, ৬ হেক্টর ছাড়াও মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ১ হেক্টর, শ্রীমঙ্গলে দশমিক ৫, কমলগঞ্জে ২, কুলাউড়ায় ১ দশমিক ৫, বড়লেখায় ১০, জুড়িতে ৫ ও রাজনগর উপজেলায় ১ হেক্টর জমিতে তেজপাতার চাষ হচ্ছে।
সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক আলতাবুর রহমান বলেন, জৈন্তাপুর, বিয়ানীবাজার, গোয়াইনঘাট ও মৌলভীবাজারের কয়েকটি উপজেলায় তেজপাতার চাষ ভালো হয়। পারিবারিকভাবে বাগান করে তেজপাতার চাষ হচ্ছে। সিলেট রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সহকারী পরিচালক জানান, সিলেটের তেজপাতা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়।
জৈন্তাপুরের ফতেহপুর, হরিপুর, চিকনাগুল, আসামপুর, বাগরখলা ইউনিয়নের প্রায় প্রতি বাড়িতেই তেজপাতার বাগান রয়েছে। এ ছাড়া গোয়াইনঘাট উপজেলায়ও স্বল্প পরিসরে এর চাষ হচ্ছে। বিয়ানীবাজারে আগে প্রচুর পরিমাণে তেজপাতা চাষ হত। বর্তমানে কিছুটা কমে গেছে।
একটি গাছ থেকে ২০-২৫ কেজি ও বড় গাছে ৩০-৩৫ কেজি তেজপাতা পাওয়া যায়। প্রতি কেজি তেজপাতা ১২০-১৫০ টাকায় বিক্রি হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা চাষীদের কাছ থেকে তেজপাতা কিনে নিয়ে শুকানো ও বাছাইয়ের পর বস্তায় বা বাঁশের তৈরি খাঁচায় ভর্তি করে রাখেন। পরে ঢাকার পাইকাররা এ তেজপাতা কিনে নিয়ে বিভিন্ন দেশে রফতানি করেন।
কাঁচা পাতা ১২০-১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও বাছাই করে ঢাকার পাইকারদের কাছে তা ২০০-২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। সিলেট থেকে সপ্তাহে গড়ে তিন হাজার কেজি পাতা রফতানি করা হয়। এছাড়া খুচরা বাজারে প্রতি আঁটি তেজপাতা ২০-৪০ টাকা করে বিক্রি হয়। এক আঁটিতে পাতাভর্তি ছোট দুটি ডাল থাকে। মৌসুমে একেকটি গাছ থেকে ২০০-২৫০ আঁটি তেজপাতা পাওয়া যায়।
জৈন্তাপুর সাইট্রাস গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান, চাষীরা নিজে থেকে তেজপাতা চাষ করেন। প্রশিক্ষণ ও বাগান পরিচর্যার কৌশল শিখানো গেলে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। চাষীদের পর্যাপ্ত সহায়তা দিলে ভবিষ্যতে তেজপাতার উৎপাদন বাড়িয়ে তা রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.