Beanibazarview24.com
পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে কোটি টাকার জমির মালিক হয়েও দীর্ঘ ৬ বছর থেকে মেয়েকে নিয়ে বাস্তুহারা হয়ে আছেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলাম মোল্লারচক পূর্ববাড়ির বৃদ্ধা জমিলা বেগম। নিজের সম্পত্তি ফিরে পেতে মেয়ে সুজিনা বেগমকে নিয়ে সবার দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি। এতেও কোনো সমাধান না পাওয়ায় জমিলা বেগম বুকে প্লেকার্ড ঝুলিয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছেন। জানাচ্ছেন নিজের পৈতৃক সম্পত্তি ফিরে পাওয়ার আকুতি।
জানা গেছে- সিলাম মোল্লারচক পূর্ববাড়ির মেয়ে হচ্ছেন জমিলা বেগম। তার বাবা মরহুম আত্তর আলী ও মা মরহুম সোনাবান বেগম। ৭ ভাই বোনের মধ্যে জমিলা সবার ছোট।
প্রায় ২১/২২ বছর আগে স্বামী আরেক বিয়ে করার পর মেয়ে সুজিনাকে নিয়ে বাবার বাড়ি ওঠেন জমিলা বেগম। বাবা-মা থাকা অবস্থায় সবাই একসাথেই ছিলেন। ১৯/২০ বছর আগে বাবা-মা মারা যাওয়ার পর ভাইয়েরা জমিলা বেগমকে পরিবার থেকে আলাদা করে দেন। তখন থেকেই সমস্যা শুরু।
এরপর জমিলা বেগমের সাথে তার ভাই কামাল, ভাইপো আহাদ, শাহাদাত সোয়েব, এহসান, রায়হান সবাই মিলে ঝগড়া বিবাদ করতেন প্রায়ই। করতেন শারীরিক নির্যাতন। এর এক পর্যায়ে ভাইয়েরা বিগত প্রায় ৬ বছর পূর্বে জমিলাকে তার পৈতৃক বাড়ি থেকে বের করে দেন। বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়ার পর জমিলা গিয়ে ওঠেন মোগলাবাজার হরগৌরী গ্রামে নিজের নানা বাড়িতে। ওখান থেকেই তিনি পৈতৃক বাড়ি উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যান।
এর এক পর্যায়ে ২০১৬ সালে বর্তমান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইকরাম হোসেন, ইউপি সদস্য হালিমা বেগম ও সাজু আহমদের সহযোগিতায় তারা পুনরায় পৈতৃক ভিটায় ফিরে আসেন। তাতেও শান্তি ফিরে আসেনি জমিলা বেগমের। একপর্যায়ে জমিলা ও তার মেয়েকে চরম মারধোর করেন জমিলার ভাই কামাল, মামাতো ভাই আহাদ ও সুহেদসহ অন্যরা। এ ঘটনায় নারী নির্যাতন মামলা দায়ের হলে গ্রেপ্তার হন জমিলার ভাই কামাল, ভাইপো আহাদ ও সুহেদ। তবে ওই দিন বিকেলেই তারা ছাড়া পান।
এ অবস্থায় মাত্র ৩ মাস থাকার নিজের জীবনের নিরাপত্তা না পেয়ে জমিলা তার মেয়েকে নিয়ে আবার বসত ভিটা ছাড়েন। সেই যে পৈতৃক বাড়ি ছেড়েছেন আর ফিরে পাননি।
অসহায় জমিলা বেগম নিজের খাবার জোগান দিতে গত চার মাস পূর্বে সিলাম এলাকায় একটি পান দোকান দিলে ভাইদের ইঙ্গিতে তাও উচ্ছেদ করা হয়। এতে করে চরম অসহায় অবস্থায় পড়েন তিনি।
সর্বশেষ কোন উপায় না দেখে বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে জমিলা বেগম বুকে প্লেকার্ড ঝুলিয়ে ক্বিন ব্রিজের নিচের রাস্তায় এসে দাঁড়ান। তার আকুতি একটাই, ফিরে যেতে চান তার পৈতৃক ভিটায়। ফিরে পেতে চান বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তির অংশিদারিত্ব।
এ ব্যপারে তিনি নিজ এলাকার মানুষ থেকে শুরু করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে তার বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তির অংশিদারিত্ব ফিরে পেতে সহযোগিতা কামনা করেন।
বিষয়টি নিয়ে ইউপি সদস্য হালিমা বেগম বলেন- আমি শুরু থেকেই তাদেরকে সহযোগিতার চেষ্টা করছি। এটা তাদের পারিবারিক সমস্যা। এলাকার পঞ্চায়েত এক হয়ে চেষ্টা করলে অবশ্যই এটা উদ্ধার সম্ভব বলে তিনি জানান।
সূত্রঃ সিলেট ভয়েস
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.