Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

বাংলাদেশী কন্যার চোখে প্রাণ খুঁজবে নাসা







তেলাপোকাকেও হার মানিয়েছেন বাংলাদেশী কন্যা মেহমুদা সুলতানা! তার প্রযুক্তি, তার বানানো সেন্সর যন্ত্রের মাধ্যমে। শুঁড় দিয়ে আশপাশের সব কিছুকে এক লহমায় বুঝে ফেলার যে আশ্চর্য ক্ষমতা রয়েছে তেলাপোকার, সুলতানার সেন্সর তার ‘জাদু’ সম্ভবত বুঝে ফেলেছে! তাই যাকে প্রায় দেখাই যায় না, এমন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোনও বস্তুর ক্ষমতা কতটা হতে পারে, এ বার তা বাংলার সুলতানার কাছ থেকে শিখছে নাসা। যার জন্ম আর শৈশব-কৈশোরের একটা অংশের স্মৃতি ধরা রয়েছে পাবনার এক অজ পাড়াগাঁয়ে।



ভিন গ্রহে প্রাণ খুঁজতে সুলতানাই আপাতত বড় ভরসা নাসার। ছোট হতে হতে কত ছোট হওয়া যায়, অত ছোট হয়েও কী ভাবে তাকে বড় কাজে লাগানো যায়, সুলতানাই তা শিখিয়েছেন নাসাকে তার প্রযুক্তির মাধ্যমে। যা আগামী দিনে চাঁদ ও মঙ্গলে মহাকাশচারীদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে। প্রাণ বা তার উপাদানের খোঁজ-তল্লাশে।



সুলতানার উদ্ভাবিত প্রযুক্তির নাম- ‘থ্রিডি-প্রিন্টেড সেন্সর টেকনোলজি’। অত্যন্ত কম চাপ ও তাপমাত্রায় কোনও গ্যাস বা বাষ্প খুব সামান্য পরিমাণে থাকলেও, তার মধ্যে প্রাণের উপাদান লুকিয়ে আছে কি না, সুলতানার প্রযুক্তির দৌলতে এ বার তারও ‘গন্ধ’ পাওয়া যাবে। আর ‘নাকে’ আসা সেই ‘গন্ধ’ সুলতানার বানানো সেন্সর অ্যান্টেনার মাধ্যমে পৃথিবী বা গ্রাউন্ড স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলা উপগ্রহকে জানিয়ে দিতে পারবে। যা এর আগে কখনও সম্ভব হয়নি। এমন সেন্সর বানানোর প্রয়োজনটা নাসার অনেক দিনের। ভিন গ্রহে প্রাণের খোঁজে সেই হাতিয়ারটা এত দিন ছিল না নাসার হাতে। যা তুলে দিলেন সুলতানা। ২০১৭ সালে তিনি পান নাসার ‘বর্ষসেরা বিজ্ঞানী’র পুরস্কার।



সেন্সরটি আকারে আমাদের হাতের সবচেয়ে ছোট আঙুলটির (কনিষ্ঠা) মতো। ৩ ইঞ্চি লম্বা, ২ ইঞ্চি চওড়া। মানে, চওড়ায় পায়ের বুড়ো আঙুলের চেয়ে একটু বেশি। এত ছোট সেন্সর এর আগে আর পাঠানো যায়নি মহাকাশে।

মেরিল্যান্ডের গ্রিনবেল্টে নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের প্রযুক্তিবিদ মেহমুদা সুলতানা বলেছেন, ‘আমাদের এই নতুন সেন্সরটি এ বার মঙ্গল, চাঁদে পাঠানো কোনও ল্যান্ডার, রোভারের শরীরেও গুঁজে দেওয়া দেওয়া যাবে। ফলে, তাদের পক্ষে ওই সেন্সর দিয়ে ভিন গ্রহে খুব সামান্য পরিমাণ গ্যাসেও পানির কণা বা প্রাণের উপাদান রয়েছে কি না, তার ‘গন্ধ’ পাওয়া যাবে, চোখের পাতা পড়তে না পড়তেই।’



পাবনার গ্রামে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পরেই মা, বাবার সঙ্গে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানেই গ্র্যাজুয়েশন। পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন। ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। ২০১০ সালে সুলতানা যোগ দেন নাসায়।

সুলতানার কথায়, ‘এটা আসলে একটা প্রিন্টার। আমাদের থ্রিডি-প্রিন্টেড সেন্সরে কালির বদলে লাগানো হয় বিভিন্ন ধরনের ন্যানো মেটিরিয়াল। বা অত্যন্ত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পদার্থ। সেগুলি থাকে খুব গুঁড়ো গুঁড়ো অবস্থায়। যে কোনও পদার্থকে গুঁড়ো করলে, তা যতই ছোট হোক না কেন, তাকে দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু ন্যানো মেটিরিয়ালগুলিকে অণুবীক্ষণের নীচে না রাখলে কখনওই দেখা সম্ভব নয়।’’



ওয়াশিংটনে নাসার সদর দফতরে মঙ্গলের ‘পাথফাইন্ডার মিশন’-এর গবেষকদলের অন্যতম বিজ্ঞানী অমিতাভ ঘোষ বলছেন, ‘সুলতানার এই প্রযুক্তিকে আমি বৈপ্লবিক বলব। কারণ, এখনও পর্যন্ত একই সেন্সরে এত গুলি স্তরের ন্যানো মেটিরিয়াল ব্যবহার করে তার কর্মক্ষমতা অনেক গুণ বাড়িয়ে তোলা সম্ভব হয়নি। আর তা যে এত ছোট আকারের সেন্সরে করা সম্ভব, এটাও আগে কারও পক্ষে করে দেখানো সম্ভব হয়নি।


You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.