Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

অবৈধভাবে ইউরোপ যাওয়ার পথে সিলেটের আবু তাহের নিহত, লাশের অপেক্ষায় স্বজনরা








ইরান থেকে তুরস্ক যাওয়ার পথে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ছাত্রলীগ নেতা আবু তাহের এর মৃত দেহ এখনও আসেনি দেশে। নিহতের বাড়িতে চলছে স্বজনদের শোকের মাতম। পুত্রের শোকে তার পিতা মাতা অচেতনপ্রায়। অশ্রুসিক্ত নয়নে অপেক্ষায় আছেন কখন ছেলের মৃতদেহ বাড়ি ফিরবে। কিন্তু মৃত দেহটি দেশে পাঠাতেও মোটা অংকের টাকা দাবী করছে একটি দালালচক্র। শোকে নিস্তব্ধ পরিবারটি তাহেরকে শেষ বারের মতো দেখতে সরকারের সহযোগীতা কামনা করছেন।



সুত্রে জানা যায়, স্বপ্নের ইউরোপ যাবেন এমন আশায় চলতি বছরের ১০ অক্টোবর পাড়ি জমান নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের ছোট সাকোয়া গ্রামের আতাব উল্লার পুত্র আবু তাহের। প্রথমে পৌছান মধ্যপাচ্যের দেশ ইরানে। সেখান থেকে গত ২৩ অক্টোবর সকালে তুরস্ক যাওয়ার পথিমধ্যে শাহরিয়ার নামক স্থানে মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হয় আবু তাহেরসহ ৩ জনকে বহনকারী প্রাইভেট কারটি। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় স্বপ্নবিলাসী আবু তাহেরের।



দুর্ঘটনার খবরটি প্রথমে দালালরা জানায় তাহেরের বাড়িতে। কিন্তু তার পরিবারের লোকজন কোনভাবেই বিশ্বাস করছিলোনা মৃত্যুর খবরটি। তারা দূর্ঘটনার সত্যতা যাচাই বাচাই করতে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। সরলতার সুযোগে দালালরা ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাহেরের মৃত দেহের রক্তমাখা ছবি তুলে পাঠায় তার পরিবারের কাছে। দূর্ঘটনার পর থেকেই ইরানের শাহরিয়ার হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে তাহেরের মৃত দেহ।



মৃতদেহটি দেশে পাঠাতেও আড়াই লক্ষ টাকা দাবী করছে একটি দালাল চক্র। নিহত তাহেরের মা সিরাতুন্নেছা জানান, ইরান থেকে তাহের তুরস্কের পথে রওয়ানা দেয়ার পর থেকেই আর কোন যোগাযোগ হয়নি। এর ৩ দিন পর দালালরা মোবাইল ফোনে কল দিয়ে জানায় তাহের সে দেশে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। মৃত্যুর ঘটনাটি কোনভাবেই বিশ্বাস না হওয়ায় দালালরা বলে ২০ হাজার টাকা দিলে তারা তাহেরের মৃত দেহের ছবি তুলে পাঠাবে।

তাদের কথামতো ২০ হাজার টাকা দেওয়ার পর তারা ছবি তুলে পরিবারের ইমোতে পাঠায়। এমনকি দালালরা বলছে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিলে তাহেরের মৃত দেহ দেশে পাঠাবে।



এদিকে, ঘটনার পর থেকেই নিহতের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের বিলাপে ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার আকাশ বাতাস। নিহত ছেলের ছবি বুকে নিয়ে কান্নায় বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন বাবা-মা। শোকে নিস্তব্ধ পরিবারটি মৃত দেহ এক নজর দেখতে রয়েছেন অধির অপেক্ষায়। নিহতের পরিবারের সাথে শোকে নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসীও। সবার একটাই দাবী দ্রুত মৃত দেহটি দেশে এনে স্বজনদের শেষ দেখার সুযোগ করে দেয়া।



আর এই অপেক্ষায় দিন কাটছে তাদের। ওই গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোঃ রুবেল মিয়া বলেন, বর্তমান যুব সমাজের স্বপ্ন ইউরোপে পাড়ি দেয়া। অনেকেই অবৈধভাবে পাড়ি দিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গিয়ে পৌছায়। সেই বাসনা থেকেই আবু তাহেরও পরিবারে বাধা ডিঙ্গিয়ে ইউরোপে যাবার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে দালালের পাল্লায় পড়ে পাড়ি জমায়। এর কয়েকদিন পরই তাহেরের মৃত্যুর সংবাদ দেয় দালালরা।



আবু তাহের ব্যক্তিগতভাবে খুব ভালো ছেলে ছিল। তাহেরের অকাল মৃত্যুতে তার পরিবারের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি এলাকাবাসীও সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল এক যুবক হারিয়েছেন।

তিনি বলেন, তাহেরের এই দূর্ঘটনা থেকে যুবকরা যারা এই পথে পাড়ি দিতে ইচ্ছুক তারা সর্তক থাকবেন। দেশে থেকেই রোজগার করে নিজের জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখবেন। পাশাপাশি তিনি মৃতদেহটি দ্রুত দেশে আনতে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের সহযোগীতা কামনা করছেন।











You might also like

Comments are closed.