Beanibazarview24.com
প্রতিদিনের মতো গত ১২ ফেব্রুয়ারি স্কুলবাসে করে বাড়ি ফিরছিল ছয় বছর বয়সী যমজ দুই ভাই। কিন্তু পথে পিস্তল হাতে অপহরণ করা হয় তাদের। অপহরণের ১২ দিন পর নদীর তীরে তাদের মৃতদেহ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশে।
এনডিটিভির এক খবরে বলা হয়, রবিবার ওই দুই শিশুরই মৃতদেহ উত্তর প্রদেশের বান্দার একটি নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি মধ্যপ্রদেশের চিত্রকূট এলাকায় একটি স্কুলবাসে মুখোশধারী কিছু দুর্বৃত্ত চড়াও হয়। তাদের প্রত্যেকের হাতেই ছিল পিস্তল। চিত্রকূটের একজন ব্যবসায়ীর ছয় বছর বয়সী দুই যমজ সন্তান ছিল ওই বাসে। তারা দুজনই কিন্ডারগার্টেনের ছাত্র। দুই শিশুকেই তুলে নিয়ে পালিয়ে যায় অস্ত্রধারীরা। স্কুল বাসটির সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে বাকি সব শিশুরাই ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছে। অবাক চোখে তারা তাকিয়ে রয়েছে ওই মুখোশ পরা দুর্বৃত্তদের দিকে। দুর্বৃত্তদের মুখ ছিল গেরুয়া কাপড় দিয়ে ঢাকা।
মধ্যপ্রদেশ পুলিশ ঘোষণা করেছে, যে বা যারা ওই অপহরণকারীদের খুঁজে পেতে সাহায্য করবেন তাদের ৫০ হাজার রুপি নগদ পুরস্কার দেওয়া হবে। এই ব্যবসায়ী পরিবার মধ্যপ্রদেশ ও উত্তর প্রদেশ সীমান্তে বসবাস করায় দুই প্রদেশের পুলিশ অপরাধীদের খুঁজে বের করতে একসঙ্গে কাজ করছে।
সাতনা জেলার জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা সন্তোষ সিং গৌর জানান, চার কিলোমিটার রাস্তা পার করে রোজ স্কুলে যেত ওই শিশুরা। অন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, অপহরণকারীদের সঙ্গে ওই বাচ্চাদের বাবার কোনো শত্রুতার জেরেই এই ঘটনা। ওই শিশুদের বাবা একজন তেল ব্যবসায়ী, তাদের পরিবারের সঙ্গেও শত্রুতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।
চিত্রকূটের জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা চঞ্চল শেখর জানান, অপহরণকারীরা দুই শিশুর অভিভাবকের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করার পর তাদের হত্যা করে। হত্যার পর পাথরের সঙ্গে বেঁধে তাদের নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
চঞ্চল শেখর আরো জানান, অপহরণকারীদের একজন প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র আর অপরজন উগ্র হিন্দু সংগঠন বজরং দলের সদস্য।
পুলিশের সন্দেহ, অপহরণের পর ‘বাবুলি কল’ নামে পরিচিত ওই গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীরা দুই যমজ ভাইদের জঙ্গলে নিয়ে চলে যায়। ‘বাবুলি কল’ গ্যাংয়ের দুষ্কৃতীরা হত্যাকাণ্ড, অপহরণ ও চাঁদাবাজির বিভিন্ন ঘটনাতেই পুলিশের হিটলিস্টে রয়েছে ইতিমধ্যেই। প্রকাশ্য দিবালোকে এমন অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় এলাকা জুড়েই শোক আর আতঙ্ক নেমে এসেছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.