Beanibazarview24.com
প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ফুসফুসে আটকে যাওয়া ধারালো ও মরিচা পড়া এক বোর্ড পিন সফলভাবে বের করে আনলেন এক যুবকের শরীর থেকে।
আলী আহমেদের বয়স ১৫ বছর। বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায়। প্রায় ৬ মাস আগে এক ধরনের বোর্ডপিন দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করতে গিয়েছিলো আলী আহমেদ। কিন্তু অসাবধানতাবশত হঠাৎ করে পিনটি তার মুখের ভেতরে চলে যায়।
এখানেই শেষ নয়, মুখ থেকে পিনটি খাদ্যনালীতে না ঢুকে একেবারে শ্বাসনালীতে ঢুকে যায়। পরে তা কণ্ঠনালী পার হয়ে ডান ফুসফুসের ভেতর আটকে পড়ে।
পরবর্তীতে শারীরিক কিছু সমস্যার কারণে দরিদ্র আলী আহমেদ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পিনটি তার ফুসফুসের ভেতরে আটকে থাকতে দেখা যায়। এসময় চিকিৎসকরা তাকে জরুরি ভিত্তিতে পিনটি অপসারণের পরামর্শ দেন। কিন্তু দরিদ্র আলী আহমেদ অর্থাভাবে পিনটি অপসারণ করাতে পারেনি। এরপর দীর্ঘ ৬ মাস বোর্ড পিনটি ফুসফুসে থেকে জং ধরে যায়।
৮/১০ দিন আগে পিনটি অপসারণের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয় আলী আহমেদ। এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পিনের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর কেউই তা অপসারণে সাহস পাচ্ছিলেন না।
এ অবস্থায় এগিয়ে আসেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান, গলা ও হেড-নেক সার্জারি ডিপার্টমেন্টের সহকারী অধ্যাপক ডা. নূরুল হুদা নাঈম। রোববার তার দক্ষ নেতৃত্বে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা ব্রঙ্কোসকপির মাধ্যমে কোনো প্রকার কাটাছেড়া ছাড়াই অত্যন্ত সফলভাবে ফুসফুস থেকে পিনটি বের করে আনা হয়।
অপারেশন টিমের অন্যান্য সদস্য ছিলেন, নাক-কান-গলা বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী এবং রেসিডেন্ট ডা. মঞ্জুরুল হাসান মঞ্জু। চ্যালেঞ্জিং এ অপারেশনে এনেস্থিসিয়াতে ছিলেন ডা. পলাশ।
এ ব্যপারে ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী জানান, ফুসফুস থেকে পিনটি বের করে আনা ছিল বিশাল চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। তবে ব্যাপারটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। রোগীও পুরোপুরি সুস্থ আছে।
এদিকে ফুসফুস থেকে পিন অপসারণ সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় আলী আহমেদের পরিবার আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া ও ডাক্তারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.