Beanibazarview24.com
ধর্মের ঊর্ধ্বে মানবতা। হিন্দু এবং মুসলমান দুই মহিলা একে অপরের স্বামীকে দান করলেন কিডনি। এ যেন মানবতার অনন্য নজির।
ভারতের থানের বাসিন্দা নাদিমের সঙ্গে নাজরিন প্যাটেলের বিয়ে হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। তিন সন্তানও রয়েছে তাঁদের। চার বছর আগে কিডনির সমস্যা দেখা দেয় নাদিমের। ওষুধপত্রে কাজ না হওয়ায় চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়ালাইসিস চলছিল তাঁর।
বিহারের রামস্বার্থ যাদবেরও একই অবস্থা। তাঁরও কিডনি দু’টি বিকল হয়ে গিয়েছিল। অন্য চিকিত্সকের সঙ্গে কথা বললে যদি কোনও উপায় মেলে, সেই ভাবনা নিয়ে মুম্বাইয়ের সাইফি হাসপাতালে আসে দুটি পরিবার। কিডনি পরিবর্তন ছাড়া কোনও উপায় নেই বলেই জানিয়ে দেন নেফ্রোলজিস্ট হেমাল শাহ। অসুস্থদের স্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন চিকিত্সক। আর তখনই চিকিত্সক জানতে পারেন নাদিমের স্ত্রী নাজরিনের রক্তের গ্রুপের সঙ্গে অসুস্থ রামস্বার্থের রক্তের গ্রুপ মিলে গিয়েছে।
কারণ, দু’জনের শরীরে রয়েছে ‘এ’ গ্রুপের রক্ত। আশ্চর্যজনকভাবে দেখা যায় ‘বি’ গ্রুপ হওয়ায় রামস্বার্থের স্ত্রী সত্যদেবীর সঙ্গেও মিলে যায় নাজিমের রক্ত। দুই মহিলা একে অপরকে কিডনি দিতে রাজি রয়েছেন কী না, তা জিজ্ঞাসা করেন চিকিত্সক। নিজেদের স্বামীকে বাঁচাতে চিকিত্সকের প্রস্তাব মেনে নেন দু’জনেই।
কিডনি প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার এখনও বাকি রয়েছে। তবে দেরিতে হলেও যে বাবার জন্য কিডনির জোগাড় হয়েছে তাতেই খুশি রামস্বার্থের ছেলে সঞ্জয়। তিনি বলেন, ‘বাবা অসুস্থ থাকাকালীন আত্মীয়রা বাড়িতে আসতেন। আর্থিক সাহায্য করতেন তাঁরা।
তবে কিডনি পাওয়া যায়নি। এবার সেই সমস্যা মিটেছে। অস্ত্রোপচারের পর চোখের সামনে আর বাবাকে কষ্ট পেতে দেখতে হবে না।’ নাজরিনকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি। প্রায় একই প্রতিক্রিয়া নাজরিনেরও। তাঁর স্বামীকে কিডনি দিতে রাজি হওয়ায় রামস্বার্থের স্ত্রী সত্যবতীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নাজরিন। পরিজনদের অসুস্থতা আনন্দ কেড়ে নিয়েছিল দুটি পরিবারের। আচমকা কিডনিদাতা খুঁজে পেয়ে আবেগ আপ্লুত দু’পক্ষই।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.