Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

মানব প্রেমের পথ দেখিয়েছে নিউজিল্যান্ডের আল নূর মসজিদ







ইয়া আইয়্যুহাল্লাজিনা আমানু, হে বিশ্বাসীরা উদখুলু ফিসসিলমি কাফফাহ, শান্তির দিকে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ কর। ওয়ালা তামুতুন্না ইল্লা ওয়া আনতুম মুসলিমুন। আর শান্তিপ্রিয় বা মুসলিম না হয়ে মরো না। সারা দুনিয়া বিশ্বাসীদের স্বর্গরাজ্য।বিশ্বাসী আছে বলেই দুনিয়া টিকে আছে। মানুষ মাত্রই বিশ্বাসী। সে যে ধর্মই ধারণ করুক না কেন?

যারা অবিশ্বাসী তারা মানুষ নয় পশুতুল্য। কোরআনের ভাষায় উলায়িকা কাল আন’আম। এমন এক পাশবিক মানুষের জিঘাংসা সারা দুনিয়ার মানুষের চক্ষু খুলে দিয়েছে। (ইচ্ছা করেই তার নামটি উচ্চারণ করিনি, তার বোনও নাম নিতে বারণ করেছেন) যার ফলে আমরা কিছু মানবপ্রেমিক বন্ধুর সন্ধান পেয়েছি যেমন অস্ট্রিলিয়ার ডিম বালক খ্যাত উইল কনোলী।



যে মুসলিমদের নিয়ে বিরূপ সমালোচনার কারণে তার দেশের সিনেটরের মাথায় ডিম ছুড়ে বলেছে মুসলিমরা সন্ত্রাসী নয়, সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নেই। যারা মুসলিমদের সন্ত্রাসী বলে তাদের মাথা সিনেটর ফ্রেজার এনিং এর মতো ফাঁকা।

নিউজিল্যান্ডের নারকীয় ঘটনায় যার নাম এবং কর্মকাণ্ড বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে তিনি হলেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন।আল নূর মসজিদে হামলার পরপরই মুসলিম বিদ্বেষী বলে খ্যাত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেসিন্ডাকে ফোন দিয়ে জানতে চান তিনি তাদের জন্য কী করতে পারেন।জেসিন্ডা খুবই স্বাভাবিকভাবে বলেছেন কিছুই করা লাগবে না, শুধু মুসলিমদের প্রতি আপনার সহানুভূতি আর ভালোবাসা চাই। এই হলেন বুদ্ধিমতী মমতাময়ী নারী জাসিন্দা আরদার্ন।মুসলিমদের জন্য যে কথাটি তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলেছেন সেটি দুনিয়ার কোনো রাষ্ট্রনায়ক বলেছেন বলে আমি শুনিনি। তার কথাটির প্রতিধ্বনি যদি আমাদের রাষ্ট্রনায়করা করতে পারত তাহলে বিশ্বজুড়ে বার্মা থেকে ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন থেকে ফিজি আইল্যান্ড পর্যন্ত মুসলিমদের কান্না থেমে গিয়ে দুনিয়া প্রেমের রাজ্যে পরিণত হতো।



জাসিন্দার এ মুসলিম প্রীতির কারণে মুসলিমদের ঘরে ঘরে হাজার হাজার জাসিন্দার জন্ম হবে বলে আমার বিশ্বাস।

পূর্ব গোলার্ধের মাওরী সভ্যতার ব্রিটিশ কলোনিয়াল দেশ নিউজিল্যান্ড।আমাদের টাইম থেকে ৬ ঘণ্টা এগিয়ে থাকায় তাদের জুমার নামাজের সময় আমাদের এখানে সকাল ৭টা। ১৫ মার্চ সকালে ইন্টারনেটে এই দুঃসংবাদ পাই। আমাদের দেশে জুমা শেষে অনেক মুসল্লি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানায়। আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য আমার এক গুণগ্রাহী জানায়, মাইজভাণ্ডার দরবারের শাহজাদা মাওলানা সাইফুদ্দিন আল হাসানী আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভাণ্ডারিয়ার ব্যানারে আগামীকাল সকাল দশটায় জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইষ্টচার্জ মসজিদে হামলার প্রতিবাদ মানববন্ধন করবেন। আমি থাকতে পারব কিনা আমি থাকলে তিনিও থাকবেন। আমি জানালাম মসজিদে নামাজরত অবস্থায় নিরহ মুসলিমদের হামলার প্রতিবাদ যারাই করবে তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা ঈমানের দাবি।



কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্য আমাদের যে কোনো কাজে আমরা নিজেদের পছন্দের লোক না হলে তার সঙ্গে ঐক্যমত পোষণ করিনা অথচ এটা কিন্তু ইসলামের শিক্ষা নয়। প রদিন প্রেস ক্লাবে গিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেই। সেখানে আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভাণ্ডারিয়া মইনিয়া যুব ফোরাম এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি এ তিনটি ব্যানারে মানববন্ধন হয়। দরবারের শাহজাদা মাওলানা সাইফুদ্দিন আলহাসানী মাইজভাণ্ডারি হামদ সানার পর কোরআনের প্রসিদ্ধ আয়াত ওয়া’তাসিমু বিহাবলিল্লাহে জামি’আও ওয়া লা তাফাররাক্বু বলে বিশ্বমুসলিমের ক্রান্তিলগ্নে ইসলামী উম্মাহর ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে জাতিসংঘের উদ্যোগে মুসলিম বিশ্বের অমীমাংসিত বিষয়গুলোর দিকে আলোকপাত করে নিউজিল্যান্ডের হামলার আন্তর্জাতিক বিচার দাবি করে ভাষণ শেষ করেন।



মইনিয়া যুবফোরামের যুবকদের আবদারে তাদের ব্যানারের পেছনে দাঁড়িয়ে মোনাজাত করেন। সেই ব্যানারে লেখা ছিল ‘আমাদের জাতীয় ক্রিকেটাররা নিউজিল্যান্ড হামলা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পাওয়ায় মহান স্রষ্টার শোকরিয়া জ্ঞাপন করছি’। এখানে তিনি আল্লাহর শোকরিয়া স্বরূপ মোনাজাত করে চলে যান। পরে দেখা গেল মইনিয়া যুব ফোরামের ব্যানারকে হাইলাইট করে কেউ কেউ এনিয়ে রিপোর্ট করছে মাজার পূজারীরা ক্রিকেটারদের জন্য মোনাজাত করল কিন্তু মসজিদে প্রায় অর্ধশত মুসল্লি মারা গেল সে ব্যাপারে কিছুই বলল না। অথচ ইলেক্ট্রনিক ও প্রেস মিডিয়ার যে সব বন্ধুরা সেখানে ছিলেন তারা শুনেছেন এবং দেখেছেন তিনি সবার জন্য সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। এ হল আমাদের একপেশে নীতি। কী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে কী ধর্মীয় বা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে। ‘যারে দেখতে নারি চলন বাঁকা’। এ হল আমাদের অবস্থা।

এদিক থেকে নিউজিল্যান্ডের আলনূর মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি সে দেশের সরকার প্রধান আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন ‘সবার জন্য সবাই মোরা প্রত্যেকে আমরা



প্রত্যেকের তরে’। প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরদার্ন ৮ মাসের শিশু সন্তানের কথা ভুলে মুসলিমদের সেবায় এগিয়ে এসেছেন। জাতীয় রেডিও টিভিতে জুমার আজান এবং নামাজ প্রচার করে মুসলিমদের প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়েছেন। তিনি যদিও মুসলিম নন কিন্তু যে কাজগুলো করেছেন সেগুলো মুসলিমদেরই কাজ। যে কোনো শুভ বা নেক কাজকে ইসলাম স্বাগত জানায়। শুধু তাই নয়, এর উসিলায় মুক্তিও মেলে। বদরের যুদ্ধে জাহেলী যুগের আরব দানবীর হাতেম তাইয়ের এক অধস্তন পুরুষ কোরাইশ পক্ষে যুদ্ধ করে বন্দি হলে নবীজি হাতেম তাইয়ের দানের কথা স্মরণ করে তাকে মুক্তি দিয়ে দেন। ইসলামকে আমরা কিছু বেশভূষা আর আনুষ্ঠানিকতায় বেঁধে রেখেছি। ইসলাম কিন্তু বেশভূষা আর আনুষ্ঠানিকতার নাম নয়। আল্লাহ হাদিসে কুদসিতে বলেন, ‘লা ইয়ানজুরু ইলা সুয়ারিকুম আমি তোমাদের সুরাত বেশভূষার দিকে তাকাবো না’। আসলে ইসলামের মূল কাজ হল সৃষ্টির সেবা। মানুষে দয়া করা। নবীজি বলেন, যে দয়া করে না সে দয়া পায় না। এ দেশে যারা ইসলামের দাওয়াত নিয়ে এসেছেন তারা সুফিয়ানে কেরাম। তারা নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে মানুষের হৃদয় জয় করেছেন। এটাই ছিল নবীজির শিক্ষা।

বিশ্বে ইসলামকে তুলে ধরতে আমাদের জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সেবা এবং সহমর্মিতার কর্মসূচি নিয়ে এগুতে হবে। জাসিন্দা আরদার্ন আমাদের সে পথ দেখিয়েছেন। তার একটি কথা বারবার কানে বাজে ক্ষমতাধর ট্রামকে সঙ্গে সঙ্গেই বলেছিলনে, আমি কিছুই চাই না মুসলিমদের প্রতি আপনার সহানুভূতি ও ভালোবাসা চাই। আসলেই তো ভালোবাসার জন্যই তো পৃথিবী। আসুন জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে ভালোবেসে পৃথিবীকে ভালোবাসার বাসরঘর বানাই।














You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.