Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

স্বামীকে ফোনে মিথির বাঁচাও বাঁচাও আর্তনাদ







তানজিলা মৌলি মিথির (২৫) শরীর থেকে বিয়ের মেহেদির রং এখনও মুছে যায়নি। কাজ করতেন রাজধানীর বনানীতে কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের এফ আর টাওয়ারের দশম তলায় হেরিটেজ ট্যুরিজমে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড শুরুর পরপরই স্বামী ও ফুফাতো ভাইকে মোবাইল ফোনে বলেছিলেন, নবম তলায় আগুন লেগেছে আমাদের বাঁচাও। এর কিছুক্ষণ পর থেকেই মিথির মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। সন্ধ্যায় কুর্মিটোলা হাসপাতালে তার অগ্নিদগ্ধ লাশ পাওয়া যায়।



স্বজনরা হাতের আংটি ও পরিচয়পত্র দেখেই মিথির লাশ শনাক্ত করেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় তার লাশবাহী গাড়ি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারের বশিপুর সরদারপাড়ার বাড়িতে পৌঁছামাত্রই স্বজনদের মাঝে আহাজারি শুরু হয়। জানাজা শেষে বাদ জুমা তার লাশ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

সান্তাহার পৌর মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টো, প্রতিবেশী ভাই মাহফুজুর রহমান লিটন ও স্বজনরা জানান, তানজিলা মৌলি মিথি বগুড়ার সান্তাহারের বশিপুর সরদারপাড়ার অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান মাসুদের একমাত্র সন্তান। মিথি গত ২০০৯ সালে সান্তাহার হার্ভে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। ২০১১ সালে সান্তাহার সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকায় চলে যান। সেখানে বেসরকারি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করেন। পরবর্তীতে বনানীর এফ আর টাওয়ারের দশম তলায় হেরিটেজ ট্যুরিজমে চাকরি নেন। ৮-৯ মাস আগে ঢাকায় ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা রায়হানুল ইসলাম রিমনের সঙ্গে মিথির বিয়ে হয়।



ফুফাতো ভাই ঢাকায় গার্মেন্টসে কর্মরত মৌসুমের উদ্ধৃতি দিয়ে স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুন লাগার পর মিথি তাকে (মৌসুম) মোবাইল ফোনে জানান- তাদের ভবনের নবম তলায় আগুন লেগেছে। এর আগে তিনি তার স্বামী রায়হানুল ইসলাম রিমনকে একই কথা বলেন। তিনি তাদের কাছে বাঁচানোর আকুতি জানান। এর কিছুক্ষণ পর থেকে মিথির ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। স্বামী রিমন ও ভাই মৌসুম সন্ধ্যায় কুর্মিটোলা হাসপাতালে হাতের আঙুলে আংটি ও পরিচয়পত্র দেখে তার পোড়া লাশ শনাক্ত করেন। রাতে বাবা অ্যাডভোকেট মাসুদ ও অন্যরা সান্তাহার থেকে ঢাকার দিকে রওনা হন। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে লাশ নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হন।



শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মিথির লাশবাহী গাড়ি তাদের বাড়ির কাছে এসে পৌঁছে। এ সময় স্বামী রিমন, বাবা অ্যাডভোকেট মাসুদ, মা ফেন্সি আকতারসহ স্বজনদের মাঝে আহাজারি শুরু হয়। তাদের আর্তনাদ দেখে সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

প্রতিবেশী ভাই মাহফুজার রহমান লিটন জানান, বাদ জুমা স্থানীয় বাবলুর চাতালে জানাজা মেশে মিথির লাশ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুরে আগুন লাগে এফ আর টাওয়ারে। ভবনের নবম তলায় আগুনের সূত্রপাত। পরে ছড়িয়ে পড়ে ২৩তলা ভবনের বেশ কয়েকটি তলায়। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস।



অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও বিমানবাহিনীর পাঁচটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়। ভবনটির ছাদে আটকেপড়া অনেককে উদ্ধার করে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার। এ ছাড়া অগ্নিনির্বাপণে হেলিকপ্টার থেকে ভবনটিতে পানিও ফেলা হয়।

ভয়াবহ এই আগুনে ২৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের লাশও বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। আহত অন্তত ৭৩ জন রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।








You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.