Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

প্রবাসীর শ্রমের টাকায় মেয়ে বিচারক, দুই ছেলে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার







মালয়েশিয়া প্রবাসজীবনের অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি থেকেই ৭০ বছর বয়সী এক রেমিট্যান্স যোদ্ধাকে নিয়ে আজকের এই লেখা। পরিবারের সুখের আশায় গত দুই যুগেরও বেশি সময় মালয়েশিয়ায় কর্মরত প্রবীণ আবু বকর।

প্রবাস জীবনের এই দীর্ঘ সময়ে একবারের জন্যও দেশে যেতে পারেননি তিনি। বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে একদিনের জন্যও কাজ থেকে ছুটি নেননি এই রেমিট্যান্স যোদ্ধা।

প্রবীণ আবু বকর জানিয়েছেন, বর্তমানে তার মেয়েদের একজন বিচারক, এক সন্তান প্রকৌশলী এবং অন্য একজন ডাক্তার। সন্তানদের এই সফলতাকে প্রবাস জীবনের বড় অর্জন হিসেবে দেখেন তিনি। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সন্তানদের প্রতিও।



তিনি বলেন, ‘আমি মালয়েশিয়ায় অসার আগে শুনেছি এখানে প্রচুর কাজ। এমন কোনো কাজও যদি থাতে যা কেউ করতে চায় না, তা আমি করবো। আমি একবারের জন্যও অসুস্থতার ছুটি নেইনি, ইনশাআল্লাহ আমি এখনও শক্তিশালী।’

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক হিউম্যান অব কুয়ালালামপুর নামের একটি পেজে এই বাংলাদেশির প্রবাস জীবনের সংগ্রামের কথা লেখা হয়। দেশটিতে কর্মরত প্রবীণ এই প্রবাসী বলেছেন, ‘২৭ বছর তার পঞ্চম সন্তানকে মাত্র ৬ মাস বয়সে রেখে মালয়েশিয়া এসেছিলেন। তারপর আর দেশে যাওয়া হয়নি। আমার পরিবারকে মিস করি এবং তারাও আমাকে মিস করে। তবে আমার এই ত্যাগ তাদের জন্য এবং তাদের ভবিষ্যতের জন্য।’



প্রবাসীদের জীবন কেমন কাটে? এ প্রশ্নটা অনেকেরই। কারও কারও রয়েছে বিশেষ কৌতুহল। অন্তত যারা প্রবাসী নন। কৌতুহলটা তাদেরই বেশি যাদের স্বজনেরা প্রবাসী। আমজনতার আগ্রহ যে নেই, তা নয়। তা ক্ষেত্রবিশেষে। তাদেরও কৌতুহল হয়, যখন কোনো প্রবাসী হয়ে ওঠে সেলিব্রেটি।

আমরা বাঙালি প্রবাসীরা কেমন আছি? ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বললে কীভাবে কাটছে আমাদের জীবন? দেশের অস্থিতিশীল গুমোট রাজনৈতিক পরিবেশের বাইরে থেকে আমরা কী খুব ভালো আছি? দেশ ও স্বজনদের দূরে রেখে আমাদের প্রবাসজীবন কী খুব স্বস্তিতে কাটছে? নাকি সোনার হরিণের পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে আমরাও ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত।



এই প্রশ্নগুলো করার পেছনে অন্য কোনো অযাচিত উদ্দেশ্য নেই। সুখ-দুঃখ আর কষ্টের অনুভূতিগুলো বলার প্রয়াসমাত্র। কারণ, কারও কাছে যাপিত জীবন বড্ড বেশি অহংকারী। কারও কাছে বেঁচে থাকাটাই বড় চ্যালেঞ্জ।

প্রবাস মানেই কি নিঃসঙ্গতা? একাকিত্ব? নাকি প্রবাস মানেই হাড়ভাঙা পরিশ্রম। কেমন কাটে প্রবাসজীবন? কেউ বলে মলিন নয়তো ফ্যাকাশে। কেউ বলে পানসে। কারও কাছে রোমাঞ্চকর, অতিমাত্রায় স্বাধীনতা। কারও কাছে জীবনের সোনালি অধ্যায়ের যাত্রা শুরু কেউ ভাবছে, এই তো চলছি সোনার হরিণের পেছনে। আবার কেউ ফেলে দীর্ঘনিঃশ্বাস। যেন কোনো এক নষ্টালজিয়ায় আক্রান্ত। এই ভিন্ন ভিন্ন ভাবনাগুলো তাদের, যারা প্রবাসী। আর যারা প্রবাসী নন, তাদের ধারণাটা কেমন প্রবাসীদের সম্পর্কে? এটা আমার পক্ষে বলা মুশকিল হলেও কিছুটা তো উপলব্ধি করতে পারি।



তাই বলছি। যতদূর উপলব্ধি করেছি, প্রবাসী সম্পর্কে অপ্রবাসীদের ধারণা পুরোটাই অর্থকেন্দ্রিক। অর্থাৎ, প্রবাসী মানে অঢেল অর্থ উপার্জনের কারিগর। স্বজনেরা অন্তত ওই একটি বিষয়ে পরোপুরি সজাগ। প্রবাসী মানে, থাকবে অর্থিক স্বচ্ছলতা। এই ধারণাটা মোটেই ভুল নয়। কিংবা নতুন কিছু নয়। এটা তো ঠিক বাংলাদেশের সমৃদ্ধ অর্থনীতির চাকা ঘোরানোর চাবিকাঠি তো দীর্ঘকাল ধরেই প্রবাসীদের নিয়ন্ত্রণে। বাংলাদেশ ব্যাংক বছর ঘুরে গুনছে হাজার কোটি ডলারের বেশি বৈদেশিক মুদ্রা! তাই বুঝতে কারও কষ্ট হয় না, প্রবাসী মানে হাড়ভাঙা পরিশ্রমী একদল খেটে খাওয়া মানুষ।



এই রেমিট্যান্স যোদ্ধা বলেন, ‘আমার প্রয়োজন খুবই সামান্য। উপার্জনের বেশিরভাগ অংশই পরিবারের জন্য পাঠিয়ে দিই। সকালের নাস্তা করে কাজ করতে চলে যায়, আবার ফিরে আসি। পরিবারের সঙ্গে প্রতিদিনি ফোনে কথা হয়।’ সুযোগ পেলে বিশ্রাম নেন। পরের দিন আবার একইভাবে দিন চলে যায় এই প্রবাসীর। দেশে ফিরে যাওয়ার প্রবল আগ্রহ দেখিয়ে, এ বছরের ডিসেম্বর মাসে ফিরে যাওয়ার কথা বলেছেন তিনি। দীর্ঘদিন পর পরিবারের সদস্যদের কাছে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুই নাতিকেও প্রথম দেখবেন।









You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.