Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

না খেয়ে মৃ’ত্যুর হার বিশ্বে কমলেও খেয়ে মৃ’ত্যু বেড়েই চলেছে







না খেয়ে মৃ’ত্যুর হার বিশ্বে কমলেও খেয়ে মৃ’ত্যু বেড়েই চলেছে। দুটো মৃ’ত্যুই তাৎক্ষনিক নয়। যত খাওয়া ততই যেন মৃ’ত্যুর দেবতা আজরাইল বা যমকে ডেকে আনা। যমের দূয়ারে খিল দিতে হলে সারা বিশ্বের চিকিৎসকদের অভিন্ন পরামর্শ : কম খান। পরিমিত আহার করুন।
খাদ্যাভাসের কারণেই প্রতি পাঁচ জনে একজনের জীবনের আয়ু কমে যাচ্ছে। এক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, প্রতি বছর এক কোটিরও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে শুধু খাবারের কারণেই।



ল্যানচেটে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দৈনন্দিন যে খাদ্য তালিকা সেটিই ধূমপানের চেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটায় এবং বিশ্বব্যাপী প্রতি পাঁচটি মৃ’ত্যুর মধ্যে একটির জন্য এই ডায়েট বা খাবারই দায়ী।

যেমন ধরুন লবণ- তা রুটি, সস বা মাংস- যার সাথেই দেওয়া হোক না কেন -এটিই জীবনের আয়ু কমিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

গবেষকরা বলছেন, এই গবেষণা শুধু মাত্র স্থূলতার বিষয়ে নয় বরং দেখা হয়েছে কিভাবে নিম্নমানের খাদ্যাভ্যাস (পুওর কোয়ালিটি) হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করছে বা ক্যান্সারের কারণ হচ্ছে।



কোন খাবার নিয়ে চিন্তার কারণ আছে?

দ্যা গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিস স্টাডি হলো গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যবেক্ষণ যেখানে দেখা হয়েছে কিভাবে বিশ্বের প্রতিটি কোণায় কোণায় মানুষ মারা যাচ্ছে।

বিপজ্জনক খাদ্য হিসেবে যেসব উপাদানের কথা বলা হচ্ছে-

১. অতিরিক্ত লবণ- ৩০ লাখ মানুষের মৃ’ত্যুর কারণ

২. কম দানাদার শস্য খাওয়া- ৩০ লাখ মানুষের মৃ’ত্যু’র কারণ

৩. ফলমূল কম খাওয়া- ২০ লাখ মানুষের মৃ’ত্যুর কারণ

এছাড়া বাদাম, বীজ, শাক-সবজি, সামুদ্রিক থেকে পাওয়া ওমেগা-৩ এবং আঁশ জাতীয় খাবারের পরিমাণ কম হওয়াটাও মৃ’ত্যুর বড় কারণগুলোর অন্যতম।

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস্টোফার মুরের মতে, “ডায়েটকেই আমরা স্বাস্থ্যের অন্যতম প্রধান পরিচালক হিসেবে পেয়েছি। এটা সত্যিই অনেক গভীর।”



কীভাবে মানুষকে হত্যা করছে?

এক কোটি দশ লাখ ডায়েট সম্পর্কিত মৃ’ত্যুর মধ্যে এক কোটির মৃ’ত্যু হচ্ছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। অতিরিক্ত লবণ উচ্চ রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় যা স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। হার্টে ও রক্ত বহনকারী ধমনীর ওপর লবণের প্রভাব পড়ে সরাসরি যা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধের ঝুঁকি তৈরি করে।

সঠিক ডায়েট থেকে কত দূরে বিশ্ব?

আমরা কি সঠিক খাবার সঠিক পরিমাণে খাচ্ছি- এটিই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যেমন, বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার দিনে ২৫ গ্রাম খাওয়ার কথা বলা হলেও গড়ে মানুষ খাচ্ছে মাত্র ৩ গ্রাম। আবার দুধ খাওয়া উচিত ৪৪৩ গ্রাম অথচ মানুষ গ্রহণ করছে ৭১ গ্রাম।

একইভাবে দানাদার শস্য জাতীয় খাবার ১২৬ গ্রামের জায়গায় ২৯ গ্রাম খাচ্ছে।



অথচ লাল মাংস ২২ গ্রাম খাওয়া উচিত হলেও সেটি খাচ্ছে ২৭ গ্রাম, লবণ ৩.২ গ্রামের ওপর খাওয়া উচিত নয় কিন্তু সেটি গ্রহণ করছে ৬ গ্রাম আর প্রক্রিয়াজাত মাংস ২.১ গ্রামের স্থানে ৪ গ্রাম।

এই সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, বিশ্বব্যাপী যে স্বাস্থ্যকর খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বেশি বাদ যাচ্ছে তা হলো – বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার।

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর নিতা ফরোউহি বলছেন, ধারণা করা হয় যে এসব খাবারের ছোট একটি প্যাকেটে একজনকে মোটা বানাতে পারে অথচ এগুলো সব ভালো ফ্যাটে ভর্তি।

আর বেশিরভাগ লোকই এটাকে প্রধান খাবার ভাবতে পারেনা, তিনি বলেন।

রেড মিট বা লাল মাংস আর প্রক্রিয়াজাত করা মাংসের সাথে ক্যান্সারের সম্পর্ক নিয়ে প্রতিবছর অনেক সংবাদ হয়।

প্রফেসর মুরে বলছেন, কিন্তু সেটা শস্য, দানাদার ও আঁশজাতীয় খাবার ও ফলমূল কম খাওয়ার চেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ।

গবেষকরা তাই মনে করছেন, স্বাস্থ্য নিয়ে যারা সচেতনতা তৈরি করেন তাদের চর্বি কিংবা সুগারের কথা কম বলে স্বাস্থ্যকর খাবারের কথা বেশি বলা উচিত।

খারাপ ডায়েট মানুষের আয়ু কমিয়ে দিচ্ছে বিশ্বজুড়ে এটি এখন গবেষণায় পাওয়া যাচ্ছে বলে বলছেন গবেষকরা।

কোন দেশগুলোর অবস্থান ভাল?



ফ্রান্স, স্পেন এবং ইসরায়েলের মতো কিছু দেশ ডায়েট সম্পর্কিত মৃ’ত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম। আর দক্ষিণ পূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার চিত্র উল্টো।

ইসরায়েলে যেখানে প্রতি এক লাখে এ ধরনের মৃ’ত্যুর হার মাত্র ৮৯, সেখানে উজবেকিস্তানে ৪৯২ জন। তবে প্রফেসর মুরে বলছেন, জাপানে আগে ব্যাপক লবণ খাওয়ার প্রবণতা থাকলেও সেটি এখন নাটকীয়ভাবে কমে এসেছে।

তবে চীনারা প্রচুর পরিমাণে লবণ খায় এবং খাদ্য তালিকায় লবণ দিয়ে সস বেশি পছন্দ করে তারা। আর যুক্তরাজ্য এ বিষয়ে এখনো ফ্রান্স, ডেনমার্ক ও বেলজিয়ামের পেছনে আছে।

তবে এজন্য ফলমূল বা দানাদার ও শস্যজাতীয় খাবারের স্বল্পতাও কম দায়ী নয়। দেশটিতে ডায়েট সম্পর্কিত মৃ’ত্যু প্রতি লাখে ১২৭ জন।

কোনও পরামর্শ?

প্রফেসর মুরে বলছেন, “কোয়ালিটি ডায়েট হলো আসল কথা, আপনার ওজন কত সেটা এখানে বিবেচ্য নয়।”

তিনি সবজি, আঁশজাতীয় খাবার ও ফলমূল খাওয়া বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে বড় বিষয় হলো টাকা।

প্রফেসর ফরউহি বলছেন, লোকজন জানলে আর রিসোর্স থাকলে মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিতে পারে।

তবে তারা দুজনই একমত যে ফ্যাট, সুগার বা সল্ট এসব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে মানুষের উচিত ভালো খাবারের দিকে মনোযোগ দেওয়া।
সূত্রঃ ডাক্তার প্রতিদিন








You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.