Beanibazarview24.com
সচরাচর নারীদেরকেই বোরকা পরতে দেখি আমরা। তবে পাকিস্তানের এক নারী তার স্বামীকে বোরকা পরিয়ে দামি রেস্তরাঁয় নিয়ে যান। সেখানকার তোলা ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেতেই ভাইরাল হয়ে যায়।
ছবিতে দেখা যায়, রেস্তরাঁয় স্ত্রীর পাশে বসে আছেন স্বামী। তবে স্ত্রী নন, বোরকার আড়ালে রয়েছেন স্বামী। এভাবেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ছকবাঁধা লিঙ্গবৈষ্যম্যের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চেয়েছেন পাকিস্তানের ওই তরুণী।
‘দ্য মিউলি ওয়েডস’ নামে ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ওই দম্পতি সে ছবি পোস্ট করেছেন দিন দুয়েক আগে। ছবির সঙ্গে রয়েছে ওই তরুণীর দেওয়া ক্যাপশন। নিজেকে চেনা ছকে বাঁধা পুরুষের দৃষ্টিতে রাখতে চাননি তিনি। একেবারে ঝাঁঝালো ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে নারী-পুরুষের সামাজিক ভেদাভেদের আসল চিত্রটা তুলে ধরেছেন তাতে।
ওই তরুণী লেখেন, এই আমার সুন্দরী হাজব্যান্ড। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন না, কত সুন্দর সে। কেননা, তার সৌন্দর্য লুক্কায়িত রয়েছে। কারণ, আমিই এর একমাত্র হক্দার। ওর যা কিছু, ওর সাফল্য, স্বপ্ন; ওর সমস্ত জীবন আমার কাছে বাঁধা রাখা আছে। ওর দিকে কুনজর দেওয়াটা পাপ। তাই ওর ঘরে থাকাটাই আমার পছন্দের। কারণ, এ দুনিয়াটা তো ভালো নয়। যাই হোক, ও যখন আমার সঙ্গে বাইরে বের হয়, তখন এভাবে বের হয়।
তথাকথিত আধুনিক সমাজেও যে বহু ক্ষেত্রেই নারীর অবস্থান শুধু সন্তান উৎপাদনকারী হিসেবেই গণ্য করা হয়। সেটা বোঝাতে ওই তরুণীর তীক্ষ্ণ মন্তব্য, আমরা শুধু এখানেই খেতে আসি। কারণ, এখানে স্টেরয়েড ছাড়া চিকেন পাওয়া যায়। তাছাড়া আমরা খুবই স্বাস্থ্য সচেতন। বিশেষ করে যখন জানি স্টেরয়েড দেওয়া চিকেন খেলে যৌনক্ষমতায় প্রভাব পড়তে পারে। আমি তা চাই না, কারণ ওর বেঁচে থাকার প্রধান উদ্দেশ্যই তো সন্তান উৎপাদন করা এবং আমাকে মা হতে দেওয়া। ফলে যাই হোক না কেন, আমি ওকে এখানেই খেতে নিয়ে আসব।
তিনি আরো লেখেন, বাইরে বের হলে কীভাবে যে নিজেকে লুকিয়ে রাখে সে, এটা আমার খুব ভালো লাগে। কেননা সে তো খোলা সিন্দুক। আর আমি চাই না যে ও যৌন হেনস্থার শিকার হোক। আর যদি তা-ও হয়, তবে ভাগ্যের পরিহাস ভেবে তা স্বীকার করে নেব। সেই সঙ্গে আশা করব, হেনস্থাকারীর যেন শেষাবধি সাজা হয়।
তিনি আরো বলেন, আমি অবশ্য যেখানে খুশি যেতে পারি, যা খুশি করতে পারি। তাকে বাইরে কাজে যেতে এবং গাড়ি চালাতে দিই। কারণ, আমি প্রবলভাবে সমান অধিকারে বিশ্বাস করি। এতো সুবিধা দেবেন না। এর পরে তো সমানাধিকার দিতে হবে।
অনেকে এই নারীকে কটাক্ষ করে লিখেছেন, আমার মনে হয়, আপনার তাকে কাজ বা গাড়ি চালাতে দেওয়া উচিত নয়।
ব্যঙ্গের আড়ালে এই পোস্টের সমর্থনে মন্তব্যের পাশাপাশি অনেকের সমলোচনারও শিকার হয়েছেন ওই পাকিস্তানি তরুণী। সেই সমালোচকদের উদ্দেশে তার মন্তব্য, আপনাদের ব্যঙ্গের অর্থ বোঝানোর দায়িত্ব আমার নয়। আপনাদের উদ্দেশেই এই পোস্ট করা হয়েছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.