Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

নুসরাত হত্যা: কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেন ৫ জন







সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যাকাণ্ডে পাঁচজন অংশ নেন। এর মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পরিদর্শক (ওসি) মো. শাহ আলম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সরাসরি কিলিং মিশনে অংশ নেন ৫ জন, অন্যরা তাদের সহযোগিতা করেন। এর মধ্যে চারজনকে আমরা গ্রেফতার করতে পেরেছি।

এদিকে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার অন্যতম আসামি নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম। জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার নির্দেশে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।



এ সময় শাহাদাত হোসেন শামীম বলেন, মামলা প্রত্যাহারে অস্বীকৃতি জানালে তিনি নিজে পেছন থেকে এক হাত দিয়ে নুসরাতের মুখ চেপে ধরেন ও অন্য হাত দিয়ে হাত ধরেন। আর উম্মে সুলাতানা পপি তখন নুসরাতের পা ধরেন।

‘শামীমের চাচাতো বোনের পালিত মেয়ে জান্নাত আফরোজ মনি নুসরাতের শরীর চেপে ধরেন। তারা তিনজন মিলে নুসরাতকে ছাদের মেঝেতে ফেলে দেন। এ সময় উম্মে সুলতানাকে কৌশলে তারা চম্পা বলে ডাক দেন।



শামীম বলেছেন, নুসরাতকে মেঝেতে শুইয়ে ফেলার পর জোবায়ের নুসরাতের ওড়না দুই টুকরো করে তার হাত ও পা বেঁধে ফেলেন। জাবেদ তখন নুসরাতের সারা শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেন। এরপর শামীমের চোখের ইশারায় জোবায়ের তার পকেট থেকে দেয়াশলাই বের করে কাঠি জ্বালিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর পাঁচজনই সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসেন।

‘নামতে নামতেই তিনজন ছাত্র তাদের বোরকা খুলে শরীর কাপড়ের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলেন। ছাত্রী দুজন মাদ্রাসায়ই তাদের পরীক্ষার হলে চলে যান। আর বাকি তিনজন নিজেদের মতো করে পালিয়ে যান।’

তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিঁড়ি দিয়ে ওই পাঁচজন যখন নামছিলেন তখন নুসরাতের আগুন, আগুন, বাঁচাও, বাঁচাও বলে চিৎকার তারা শুনতে পান। পা থেকে আগুন ধরানোয় প্রথমে নুসরাতের পায়ের বাঁধন খোলে। এরপর আগুন যখন উপরে উঠে তার হাতের বাঁধন খুলে তখনই তিনি উঠে দৌড়ে নিচে নেমে আসেন।



তারা জানান, নুসরাতের মুখ শামীম চেপে ধরায় সেখানে আর কেরোসিন ঢালা হয়নি। তাই পুরো শরীর পুড়লেও মুখে আগুন লাগেনি।

গত ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারীরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় তারা।

পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত মারা যান।

শ্লীলতাহানির মামলায় আগে থেকেই কারাবন্দি ছিলেন সিরাজ উদদৌলা। হত্যা মামলা হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ১৩ জন গ্রেফতার হয়েছে। সিরাজ উদদৌলার ‘ঘনিষ্ঠ’ নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আদালতে।



বাকি আসামিদের মধ্যে বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে ৭ দিন, আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমকে ৫ দিন, জাবেদ হোসেনকে ৭ দিন, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, আবছার উদ্দিন, আরিফুল ইসলাম, উম্মে সুলতানা পপি ও যোবায়ের হোসেনকে ৫ দিন করে রিমান্ড দেয়া হয়েছে।

এদিকে এ হত্যাকাণ্ডে সোমবার (১৫ এপ্রিল) দিনগত রাতে গ্রেফতার হওয়া কামরুন নাহার মনিরও বুধবার (১৭ এপ্রিল) পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মনি সোনাগাজী বাসস্ট্যান্ডের ঈমান আলী হাজী বাড়ির মরহুম আজিজুল হকের পালিত মেয়ে। তিনি নুসরাতের সহপাঠীও



এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক হয়েছেন সহপাঠী মো. শামীম ও জান্নাতুল আফরোজ মনি। আর ঘটনার দিন মাদ্রাসার গেট পাহারা দেয়া শরীফকে বুধবার ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।

এদিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানান, তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় জড়িত পরোক্ষদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

এরই মধ্যে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করতে থানায় যাওয়ার পর নুসরাতের ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেয়ায় সোমবার (১৫ এপ্রিল) সোনাগাজী থানার ওই সময়ের ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করা হয়েছে। এ মামলাও তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।
সূত্র: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর














You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.