Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

‘নিষ্পাপ’ সেই কিশোরেরও শিরোশ্ছেদ করল সৌদি







আবদুলকরিম আল-হাওয়াজের বয়স তখন মাত্র ১৬, যখন তাকে জেলে পোরা হয়। সৌদি আরবে একদিনে অন্য ৩৬ জনের সঙ্গে তারও শিরোশ্ছেদ হয়েছে। দীর্ঘ ৫ বছর জেলভোগের পর জনসম্মুখে মাত্র ২১ বছর বয়সী তরুণের মস্তক ধড় থেকে বিচ্ছিন্ন হলো। তার রক্তস্নাত দেহটি গোটা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে।

কিশোর বয়সে জেল হয় আল-হাওয়াজের। বছরের পর বছর সে দিন কাটিয়েছে তার দুঃস্বপ্নের মতো ভবিষ্যত জেনে। একের পর এক আপিল ব্যর্থ হয়েছে। সুন্নী অধ্যুষিত সৌদি আরবের সংখ্যালঘু শিয়া মুসলিম তিনি। সৌদি রাজ্যের পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দা তিনি। সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার কারণে তার শাস্তি নির্ধারণ করা হয়। তাকে গ্রেফতার করা হয় সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ এনে।



তবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, এই তরুণের বিচার ছিল প্রহসন। নির্যাতন এবং পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকিতে তাকে নিজের দোষ শিকার করে নিতে বাধ্য করা হয়। এই পদ্ধতিতেই তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বিচারপ্রাপ্তির জন্যে একজন আইনজীবী নিয়োগেও তিনি অস্বীকৃতি জানান।

অবশেষে শাস্তির দিনটি যখন ঘনিয়ে আসে, আবদুলকরিম আল-হাওয়াজকে আরো ৩৬ জনের সঙ্গে হাজির করা হয়। তাদের সবার মস্তক কেটে ফেলা হয়েছে জনসম্মুখে। এই শাস্তি প্রদান করা হয়েছে রিয়াদ, পবিত্র মক্কা ও মদিনার শহর, কেন্দ্রিয় কাসিম প্রদেশ এবং ইস্টার্ন প্রদেশে। মূলত শিয়া অধ্যুষিত এলাকাগুলোতেই শিরোশ্ছেদ করা হয়েছে।



অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মিডল ইস্ট রিসার্চ ডিরেক্টর লিন মালৌফ জানান, এমন শাস্তি সৌদি কর্তৃপক্ষের এক গা শিউরানো প্রদর্শনী। সেইসঙ্গে দেশের ভিন্নমতাবলম্বী শিয়াদের দমনে এক ভয়ংকর মৃত্যুদণ্ডের বিধান যা কিনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনে ব্যবহৃত হচ্ছে।

আল-হাওয়াজের পরিবারের জন্যে এটাই স্বান্তনার বিষয় যে, তাদের পুত্রের শিরোশ্ছেদের ঘটনা সবার সামনে প্রদর্শন করা হয়নি। কিন্তু অন্যরা এতটা ভাগ্যবান ছিলেন না। বাকিদের কিংডমের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অপরাধে একই শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। সৌদির আইনপ্রণেতারা এই ৩৭ জনকে ‘চরমপন্থী মতাদর্শ ধারণ, সন্ত্রাসবাদের লালন’ এবং ‘সমাজের শান্তি ও নিরাপত্তা’ বিনষ্টের অপরাধে অভিযুক্ত বলে জোর দাবি তুলছেন।

সৌদি প্রেস এজেন্সির এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এরা সবাই একটা নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালিয়ে কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যার সঙ্গে জড়িত।



‘শাম ট্রায়াল’

২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারির পর এটাই সৌদিতে একদিন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের শিরোশ্ছেদের ঘটনা। এর আগে সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত অপরাধে ৪৭ জনের শিরোশ্ছেদের ঘটনা ঘটে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এরা সবাই চরমপন্থী মতাদর্শ ধারণ করে সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি করেছিল। দেশের আইন অনুযায়ী রিয়াদের স্পেশালাইজড ক্রিমিনাল কোর্টে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।



অ্যামনেস্টি জানায়, এই ৩৭ জনের মদ্যে ১১ জনের বিরুদ্ধে ইরানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয় এবং ‘পরিষ্কারভাবে অন্যায্য বিচারের’ মাধ্যমে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। আরো ১৪ জনের বিরুদ্ধে ২০১১ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে শিয়া অধ্যুষিত অঞ্চলে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তোলা হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, শিরোশ্ছেদকৃতদের মধ্যে একজন খালেদ বিন আবদেল করিম আল-তোয়াজরির দেহটি একটি খুঁটিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়। সুন্নী বিদ্রোহী হিসেবে তিনি অভিযুক্ত ছিলেন। যদিও সরকার তার এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে পরিষ্কার ব্যাখ্যা দেয়নি।
সর্বসাম্প্রতিক এই শিরোশ্ছেদের মাধ্যমে বছরের শুরু থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সংখ্যা ১০০-তে দাঁড়াল।














You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.