Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

স্বামীর হাতে ধর্ষণ: বাংলাদেশে এক নারীর অভিজ্ঞতা








শাহনাজ পারভীন: বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণকে জাতিসংঘ ভয়াবহ ধরনের পারিবারিক সহিংসতা বলে মনে করে। কিন্তু বাংলাদেশের সমাজের এ নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি কেমন?

বিষয়টি নিয়ে কাজ করেন এমন নারী অধিকার কর্মীরা বলছেন, স্বামী দ্বারাও যে ধর্ষণ সম্ভব সেটি সামাজিকভাবেও একটি অদ্ভুত ধারণা বলে বিবেচিত হয়। তাছাড়া, বাংলাদেশের কোন আইনেই বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণ বিষয়টি অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত নয়।



নিজেদের অধিকার নিয়ে দিন দিন সরব হচ্ছেন বাংলাদেশের নারীরা। কিন্তু স্বামীর হাতে ধর্ষণের ইস্যুটি এখনও কতটা গুরুত্ব পাচ্ছে সমাজে?

স্বামীর কাছে দিনের পর দিন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, এমন এক নারী বিবিসির কাছে তার অভিজ্ঞতার কথা বলতে রাজি হন। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে। ফলে, এই নারীর প্রকৃত নাম-পরিচয় তার অনুরোধে আমরা গোপন রাখছি।

বেশ লম্বা সময় প্রেম করে পরিবারের অমতে বিয়ে করেছিলেন নাসরিন (ছদ্মনাম)। তবে মাত্র মাসখানেকের মতো টিকেছিল ভালবাসার মানুষকে পাওয়ার সেই আনন্দ।



খুব শীঘ্রই নাসরিনের মোহ কেটে গেলো যখন বুঝতে পারলেন স্বামী তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ক চান। আর তাতে সায় না দিলেই জুটত ভয়াবহ নির্যাতন।

‘যখন তার ইচ্ছে হতো তখনই আমি বিছানায় যেতে বাধ্য হতাম। ঘরে আমার মা থাকতো, ছোট একটা ভাই থাকতো। না বললে সে প্রচণ্ড মারধোর করতো। সে আমার অসুস্থতাও মানত না। আমার যখন পিরিয়ড হতো তখন আমি একটু হাফ ছেড়ে বাঁচতাম। ভাবতাম হয়ত কয়েকটা দিন আমি টর্চারের হাত থেকে বেঁচে যাবো।’



দৈহিক ও মানসিকভাবে ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন নাসরিন। তিনি বলেন, স্বামীর সঙ্গে দেড় বছরের মাথায় বিচ্ছেদের এটিই ছিল মূল কারণ। উচ্চশিক্ষিত এবং প্রগতিশীল হিসেবে পরিচিত এই নারী বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ইচ্ছের বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ বলে মনে করেন।

নারীরা এ নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী নয়

কিন্তু বিবিসির সাথে আলাপকালে আরও কয়জন এই ধারণাটিই বুঝতেই পারলেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বলেন, ‘যদি আমি না করি, তবুও ও (স্বামী) আমাকে সব কিছু করতে পারবে।’

কিন্তু সেই আচরণ কি সঠিক? এই প্রশ্নে ওই নারী প্রথমে বললেন- ‘না, ঠিক নয়’। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই বললেন, ‘মানুষে বলে স্বামী তো এ রকম করতেই পারে।’



বৈবাহিক সম্পর্ক থাকাকালীন স্বামীর হাতে ধর্ষণ- বিষয়টি বেশিরভাগের মানুষের কাছে পরিষ্কার নয়। এ নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী মানুষও খুঁজে পাওয়াও দুষ্কর।

অধিকার বিষয়ক সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নীনা গোস্বামী বলেন, তাদের কাছে এ বিষয় নিয়ে কোনো নারী অভিযোগ করেন না।

বাংলাদেশের কোন আইনেই বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণ বিষয়টি অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত নয়: নীনা গোস্বামী, আইন ও শালিশ কেন্দ্র

‘আমাদের কাছে যারা আসেন তারা সুনির্দিষ্টভাবে এমন অভিযোগ করেন না। কিন্তু পারিবারিক সহিংসতা বা মারধোরের অভিযোগ নিয়ে কথা বলার সময় তারা ম্যারিটাল রেপের কথাও বলেন। তাদের সাথে কথা বলার পর কিন্তু ভয়াবহতাটা ধীরে ধীরে বের হয়।’



বাংলাদেশের আইন কী বলে

নীনা গোস্বামী বলছেন, বাংলাদেশের কোন আইনেই বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণ বিষয়টি অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত নয়।

‘বৈবাহিক সম্পর্ক থাকা অবস্থায় ইচ্ছের বিরুদ্ধে সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্সও যে রেপ, ম্যারিটাল রেপ বলতে যা বোঝায়- সেটার কোন সংজ্ঞাও নির্ধারণ করা নেই এবং সেখানে কোন শাস্তির ব্যবস্থা নেই। ফলে আমরা তার প্রতিকারও দিতে পারি না।’

বাংলাদেশে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন যাবত বিষয়টিকে পারিবারিক সহিংসতা হিসেবে স্বীকৃতির জন্যে আন্দোলন করেছে।

বাংলাদেশে সরকারি হিসেবেই ৪৭ শতাংশ মেয়ের ১৮ বছরের নিচে বিয়ে হয়। অপরিপক্ব শরীরে তাদেরও একই অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।














You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.