Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

হয় মৃত্যু নয় ইউরোপ







‘মহাকাশ থেকে যেমন ফিরে আসার নিশ্চয়তা কম তেমনি সাগরপথ থেকে গন্তব্যে যাওয়ার সম্ভাবনাও কম। তবু যেন মানুষ ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় মৃত্যুর কাফন বুকে জড়িয়ে ভূমধ্যসাগর জয় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

নিশ্চিত বিপদ জেনেও একশ্রেণির মানুষ বারবার পা বাড়াচ্ছেন মৃত্যুকূপে।’

বাংলাদেশ থেকে লিবিয়া পৌঁছানো পর্যন্ত নানা বিপদ কাটিয়ে ইউরোপের স্বপ্নে বিভোর মানুষগুলো এক সময় যে নিশ্চিত মৃত্যুকূপের দিকে স্বেচ্ছায় এগিয়ে যায়, সেই মৃত্যুকূপের নামই লিবিয়ার ভূমধ্যসাগর। এই সাগর দিয়ে কয়েক দশক ধরেই অভিবাসীরা বিপজ্জনকভাবে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে আসছে।



সম্প্রতি লিবিয়া-সিরিয়া সঙ্কটের কারণে এভাবে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোতে যাওয়ার ঘটনা কয়েক গুণ বেড়েছে। নৌকা ডুবে মৃত্যুর ঘটনাও বেড়েছে বিগত বছরগুলোর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। পারাপারের জন্য মৌসুমের তোয়াক্কা না করে সব সময়ই নৌকায় মানব পাচার ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় দিনে দিনে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে।

ইউরোপে অবৈধ পথে পাড়ি জমানো নতুন কোনো খবর নয়। সমুদ্রপথ দিয়ে এসে অনেকে সফল হওয়ার কাহিনি দূর থেকে শোনেন। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও স্বপ্নের হরিণ ধরতে লিবিয়া হয়ে ইউরোপে প্রবেশ করছেন বাংলাদেশিসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা।



বাস্তবতা হলো জাহাজ নয় এ যেন মৃত্যুফাঁদ। প্রত্যক্ষদর্শী এমন অনেকেই আছেন ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন। তাদের মতে, সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করা মানে অনেকটা মহাকাশ জয় করার মতো।

লিবিয়ার সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান কর্নেল গাদ্দাফির দেশ আফ্রিকা উপমহাদেশের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিশালী লিবিয়া। সরেজমিনে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানান, গাদ্দাফির আমলে লিবিয়ান নাগরিকরা বেশ সুন্দর জীবন যাপন করেছে। গাদ্দাফি ভর্তুকি দিয়ে রাষ্ট্রের নাগরিকদের খাদ্য উৎপাদন করে নিশ্চিত করেছেন। এমনকি আফ্রিকার গরিব দেশের নাগরিকরা লিবিয়ায় এসে জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন।



লিবিয়া থেকে বৈধভাবে প্রবেশকারী বাংলাদেশি নাগরিকসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা ইউরোপের ইতালিকে ট্রানজিট হিসেবে বেছে নেয়। সূত্রমতে, লিবিয়া থেকে ২০০০ সালের দিকে ইতালিতে পাড়ি জমান অভিবাসীরা। তবে বাংলাদেশিরা ২০০৩ সাল থেকে এ পথটা ইতালিতে প্রবেশে বেছে নেয়।

কিন্তু কালের পরিবর্তে এই পথটা এখন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। যদিও লিবিয়া থেকে পাড়ি জমানো গেলেও ইতালির বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবৈধ কোনো অভিবাসীকে গ্রহণ করছে না। সাগর জয় করে ইতালিতে এসে পৌঁছালেও তাদেরকে আবার ফেরত পাঠানোর অনেক ঘটনা দৃশ্যমান রয়েছে। ফলে ভয়ে এখন আগের মতো কেউ পাড়ি জমিয়ে ইতালি আসছে না।



এর মধ্যে গত সাত বছর ধরে দেশটির সিজনাল ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে ইতালি সরকার। মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশের নাগরিক সিজনাল ভিসায় ইতালিতে এসে কাজ করার সুযোগ পেলেও বাংলাদেশকে ব্লাকলিস্টে ফেলে রেখেছে দেশটির সরকার। এতে প্রায় সাত বছর ধরে কোনো বাংলাদেশি অভিবাসী ইতালিতে বৈধভাবে প্রবেশ করতে পারেনি।

আফ্রিকা ও আরবের বিভিন্ন দেশ থেকে তুরস্ক কিংবা গ্রিসে নৌপথে লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর কিংবা আটলান্টিক মহাসাগর স্পিডবোট কিংবা ট্রলার দিয়ে পাড়ি জমানোর সময় সলিল সমাধি হচ্ছে অনুপ্রবেশকারীদের। আবার আফ্রিকার দেশ মরোতানিয়া রটে সাহারা মরুভূমি হয়ে পর্তুগাল ঢোকার চেষ্টাকালে সাহারা মরুভূমির দুর্গম পথ পাড়ি দিতে গিয়ে অনাহারে অনেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

এর মধ্যে আবার কেউ কেউ অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টাকালে আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন। আবার দালালের খপ্পরে পড়ে অনেকে জিম্মি জীবন যাপন করছেন। মুক্তির জন্য দেশ থেকে ভিটেমাটি বিক্রি করে টাকা-পয়সা দিয়েও মিলছে না তাদের মুক্তি।














You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.