Beanibazarview24.com
অনেকেই সবকিছু ছেড়ে পড়ে থাকেন টিনসেল টাউনে। নায়িকা হবেন বলে। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস কেটে বছর গড়িয়ে যায়। তবু আশা তাঁদের মেটে না। শেষে কেউ কেউ তো পর্দায় একবার মুখ দেখাতে পারলেই বেঁচে যান। আবার বিপরীত চিত্রও আছে। যেখানে না চাইতেই কেউ কেউ পেয়ে যান নায়িকা হওয়ার পরশপাথর। যেমন, নব্বই-এর দশকের জনপ্রিয় নায়িকা আয়েশা ঝুলকা।
আয়েশার বয়স তখন মাত্র ১৯। ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়াশোনা করছেন। আচমকাই ১৯৯১-এ ‘কুরবান’ ছবিতে নায়িকা হওয়ার ডাক পেলেন কোমর ছোঁয়া চুলের, পাশের বাড়ির মেয়ে টাইপ আয়েশা। ‘আমি বরাবরের সিনেমার পোকা। ছোটোবেলায় সারাক্ষণ হামলে পড়তাম টিভির ওপর। আমার জ্বালায় মা টিভি বন্ধ করতে পারতেন না। শেষে দাদী একটা ডিভিডি কিনে দিলেন। যাতে সারাক্ষণ টিভি খুলে রেখে সবাইকে না জ্বালাই। ডিভিডি পেয়ে তো হাতে স্বর্গ পেলাম। ছবির নেশা আরও চেপে ধরল। এন্তার ছবি দেখছি আর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে নায়িকা হিসেবে কল্পনা করছি। ফলে, ডাক পেতেই মনে হল অবশেষে স্বপ্ন সফল’—নায়িকা হওয়ার পর এক সাক্ষাত্কারে এমনটাই বলেছিলেন আয়েশা।
তাহলে আপসোস করেন কেন? সেই উত্তরও আয়েশা দিয়েছেন পরে, ‘আমির খানের সঙ্গে জো জিতা ওহি সিকান্দার সুপারহিট হল। লোকে বলল, খুব ঘরোয়া, মিষ্টি মেয়ে। সবাই ভালোবাসল। নাম-যশ-অর্থ-খ্যাতি সব যেচে ধরা দিল আমার কাছে। পরিবারও খুব সাপোর্ট করেছিল আমায়। বাবা আমার জন্য স্বেচ্ছায় রিটায়ারমেন্ট নিয়েছিলেন। সবাইকে নিয়ে শিফট করেছিলেন মুম্বাই। বোন তার কলেজ ছেড়ে মুম্বাইয়ের কলেজে ভর্তি হল।
বাড়ি থেকে আসা-যাওয়া করতাম বলে কাস্টিং কাউচ টের পাইনি কখনও। কিন্তু এতকিছু পাওয়ার বদলে মেয়েবেলাটা হারালাম। বন্ধুরা যখন ক্লাস করতে যেত আমি তখন রোজগারে। সবাই যখন দলবেঁধে ফুচকা খেত আমার সামনে তখন সেদ্ধ সবজি। ফিগার মেনটেন করার জন্য! সুন্দর ছেলে দেখলে যখন ঝাড়ি মারত ওরা, আমার চারপাশে তখন কড়া পাহারা। তার ওপর অকারণে অক্ষয় কুমার, মিঠুন চক্রবর্তী, নানা পাটেকারের সঙ্গে গসিপ।
মনখারাপ হয়ে যেত খুব। বড্ড ছেলেবেলায় কাজের দুনিয়ায় আসার ফলে মেয়েবেলাটাই উপভোগ করতে পারিনি কোনোদিন। আজ পিছন ফিরে চাইলে বড্ড আফসোস হয়। মনে হয়, নায়িকা না হলে এমন কী ক্ষতি হত?’
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.