Beanibazarview24.com
স্বপ্নের ইউরোপ যাত্রার এমন সলিলসমাধি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। আদরের ছোট ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা মা রাজনা বেগম।বিলাপ করে রাজনা বেগম বলছিলেন, গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) সেহেরির সময় ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। শামীম মায়ের থেকে দোয়া নিয়েছে। জানিয়েছিল দীর্ঘপথ পায়ে হাঁটার পর এবার তারা ৮০ জনের মতো সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছাবে। এটাই তার ছেলের সঙ্গে শেষ কথা।
আহসান হহাবাব শামীমের এবার দাখিল পরিক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু পরীক্ষা দেওয়া হলো না তার। উন্নত জীবন ও রঙিন জীবনের স্বপ্নে বিভোর হয়ে পাড়ি জমান ইউরোপে। তাই লেখাপড়াকে বিদায় জানিয়ে পাড়ি জমান লিবিয়ায়। সেখান থেকে পাড়ি দিতে চান ইউরোপের সমৃদ্ধ দেশ ইতালিতে। কিন্তু মাঝপথে সাগরে নৌকা ডুবিতে সাগরে সলিল সমাধি ঘটলো তরুণ শামীমের স্বপ্নের।
তিউনিসিয়ায় ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবিতে ৬০জনের বেশি নিহত হন। এর মধ্যে বেশির ভাগ বাংলাদেশি বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। নিহতদের মধ্যে ছয়জন সিলেট ও মৌলভীবাজারের।
এর মধ্যে শামীমের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায়। উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের দেভুকশিমইল গ্রামের হাজী আব্দুল খালেকের ছেলে তিনি। সিলেট গোটাটিকর সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা থেকে এবছর দাখিল পরীক্ষার্থী ছিলেন শামীম।
শামীমের বড়ভাই আবু সাইদ বলেন, সাত ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শামীম সবার ছোট। স্থানীয় মাদ্রাসা থেকে তিনি হাফিজিয়া পাস করে সিলেটে মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখান থেকে এবারের দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার।
গত রমজানে তিনি স্থানীয় মসজিদে তারাবির নামাজ পড়াতে আসেন। সেসময় তাকে ইউরোপে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই প্রক্রিয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে দালালের মাধ্যমে তাকে ও বড় ভাই সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের শ্যালকের সঙ্গে লিবিয়ায় পাঠানো হয়। সেখান থেকে তারা তিনদিন আগে ইতালির উদ্দেশে রওনা করেন আরেক দালালের মাধ্যমে। তারপর জানা গেলো তিনি (শামীম) তিউনিসিয়ায় নৌকা ডুবিতে নিহত হয়েছেন। তার সঙ্গে যারা ছিলেন তারাও নিহত হয়েছেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.