Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

বড়লোক হওনের নেশায় ছেলেটারে হারাইলাম







লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূ-মধ্যসাগরে অভিবাসীবাহী নৌকা ডুবে নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চার যুবক রয়েছে। তাদের সন্ধান না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা বিচলিত হয়ে পড়েছেন। প্রত্যেকটি পরিবারে চলছে মাতম।

নিখোঁজ ওই চার যুবক হলেন, নড়িয়া উপজেলার ভূমখাড়া ইউনিয়নের পাটদল গ্রামের মৃত হাসেম মোল্যার ছেলে সুমন মোল্যা (২৬), দক্ষিণ চাকধ গ্রামের গৌতম দাসের ছেলে উত্তম দাস (২৩), হারুন হাওলাদারের ছেলে জুম্মান হাওলাদার (১৯) ও চাকধ গ্রামের মোর্শেদ আলী মৃধার ছেলে পারভেজ মৃধা (২২)।



ওই নৌকায় থাকা দক্ষিণ চাকধ গ্রামের আলাউদ্দিন মকদমের ছেলে শিশির মকদম (২২) ও শিশিরের মামা নলতা গ্রামের মিন্টু মিয়া (৩০) তিউনিসিয়ার একটি আশ্রয় কেন্দ্রে আছেন। ওই যুবকরা গত বছর রমজানের সময় স্থানীয় মানবপাচারকারী সদস্য কেদারপুর গ্রামের আক্কাছ মাদবরের সঙ্গে লিবিয়া যায়।

নিখোঁজ যুবকদের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তিউনিসিয়ার উপকূলের কাছে ভূ-মধ্যসাগরে অভিবাসীবাহী একটি নৌকা ডুবে যায়। ওই নৌকায় শরীয়তপুরের বেশ কয়েকজন যুবক ছিল। স্থানীয় মানবপাচারকারী দলের সদস্য আক্কাছ মাদবরের সঙ্গে ওই যুবকদের চুক্তি হয় লিবিয়া পৌঁছে দেয়ার।



লিবিয়া পৌঁছে দিতে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে। লিবিয়া থেকে ইতালি পৌঁছে দেয়ার জন্য মাদারীপুরের অলিল হোসেন নামের এক দালালের সঙ্গে ওই যুবকদের চুক্তি হয়। তাকে দিতে হয়েছে প্রত্যেক যুবকের জন্য ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। আলাল হোসেন ওই যুবকদের ইতালি পৌঁছে দেয়ার জন্য নৌকায় তুলে দেন।

রোববার দুপুরে নড়িয়ার দক্ষিণ চাকধ গ্রামের উত্তম দাসের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, ঘরের বারান্দায় বসে মা কবিতা রানি বিলাপ করছেন। বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। স্বজনরা সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছেন। বিলাপ করতে করতে কবিতা বলছিলেন আমার মানিকরে তোমরা আইন্না দেও। ও আইয়ে পাস করছে, ওরে কইছিলাম বিদেশ যাওনের দরকার নাই। দেশেই পড়ালেখা করে চাকরি করো। আমরা কথা কেউ হোনে নাই। বড়লোক হওনের নেশায় ছেলেটারে হারাইলাম।



নিখোঁজ পাটদল গ্রামের সুমন মোল্যার বোন আঁখি আক্তার বলেন, আমাদের বাবা-মা নেই। গরিব মানুষ, এনজিও থেকে ঋণ তুলে টাকা ব্যবস্থা করে ভাইকে বিদেশ পাঠাইছিলাম। দালাল কইছিল এক মাস লিবিয়া থাকন লাগব। তারপর ইতালি যাইতে পারব। কিন্তু এক বছর আগে ওরা যাওয়ার পর আর দালালকে পাই নাই। যে নৌকা ডুবে যায় ওই নৌকায় এলাকার শিশির মকদম ছিল। সে শুক্রবার রাতে ফোন করে নৌকা ডুবে যাওয়ার খবর জানান। তার কাছে ভাইয়ের নিখোঁজ হওয়ার খবর শুনতে পাইছি।



নিখোঁজ দক্ষিণ চাকধ গ্রামের জুম্মান হাওলাদারের বাবা হারুন হাওলাদার বলেন, জমি বিক্রি করে গত রমজানে দালাল আক্কাছ মাদবরের কাছে পাঁচ লাখ টাকা দেই।

এক মাসের মধ্যে ইতালি পৌঁছে দেয়ার কথা। এরপর লিবিয়া থেকে ছেলে মাঝেমাঝে ফোন করে জানাতো দালালরা ওদের নির্যাতন করতো। পুনরায় আবার আড়াই লাখ টাকা পাঠাইছি। এখন আমার ছেলেটাই সাগরে ডুবে গেল।



শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, এভাবে প্রবাসে যাওয়ার জন্য জীবনের ঝুঁকি নেয়া দুঃখজনক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। আমরাও নিখোঁজ যুবকদের বিষয়ে তথ্য জানতে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ রাখছি। আর ওই যুবকদের পরিবার যদি দালালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তা হলে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া যাবে।














You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.