Beanibazarview24.com
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রাশিদা তালিব ও ইলহান ওমর। রাশিদা ফিলিস্তিনি ও ইলহান শোমালি বংশোদ্ভূত।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের মুসলিম নারী সদস্য ইলহান ওমর বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রিপাবলিকান পার্টি ও ডানপন্থী রাজনীতিবিদরা তাঁর ও রাশিদা তালিবের ওপরা হামলা চালিয়েছেন মুসলমানদের কণ্ঠ রোধ করতেই।
স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার এমএসএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইলহান ওমর বলেন, আমার বোন রাশিদা তালিবকে আমি বলেছি যে, আমাদের বক্তব্যকে ভিন্ন খাতে প্রভাহিত করে এবং আমাদের চরিত্রের ব্যপারে ভুল তথ্য উপস্থাপন করে কোনো লাভ হবে না। এই ধরনের সমালোচনা সহ্য করার মতো সাহস ও শক্তি রয়েছে আমাদের।
ওমর আরো বলেন, এই ধরনের আক্রমণ করা হয়েছে মুসলমানদের কণ্ঠ রোধ করতে। সাধারণ মানুষের সামনে কথা বলেতে না দেওয়াও এই পরিকল্পনার মধ্যেই পড়ে।
গত বছরের নভেম্বর মাসে প্রথমবারের মতো কংগ্রেসের সদস্য নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে ইলহান ওমর ও রাশিদা তালিব। আমেরিকার ইতিহোসে তাঁরাই প্রথম মুসলিম নারী যাঁরা নির্বাচিত সদস্য হিসেবে কংগ্রেস পা রাখেন। কিন্তু তাঁরা অফিস করা শুরু করলে ডোনাল্ড ট্রাম্প, রিপাবলিকান পার্টি ও ডানপন্থী রাজনীতিবিদরা নানাভাবে আক্রমণ করেন।
বিশেষ করে ওমর এই ধরনের হামলার বেশি শিকার হন। ইসরায়েলের সাথে মার্কিন সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করায় তাঁকে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা শুনতে হয়। এছাড়াও আরো একটি ঘটনা ঘটেছিল টুইন টাওয়ার হামলার একটি মন্তব্যের জের ধরে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রিপাবলিকান পার্টি ও ডানপন্থী গণমাধ্যমগুলোর কড়া সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের (কাইর) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইলহান ওমর বলেছিলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে আমরা অস্বস্তির সঙ্গে বসবাস করছি। খোলাখুলিভাবে বলছি, আমি এতে ক্লান্ত। এ দেশের প্রত্যেক মুসলমানেরই এতে বিরক্ত হওয়া উচিত। ৯/১১-এর পর কাইর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কারণ তারা বুঝতে পেরেছিল, কিছু লোক কিছু একটা করেছে এবং আমরা প্রত্যেকে আমাদের নাগরিক স্বাধীনতা হারাতে শুরু করেছি।’
এই বক্তব্যের জের ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকায় ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার ভিডিও চিত্রের সঙ্গে কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমরের বক্তব্য যোগ করে টুইটারে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। ভিডিওতে টুইন টাওয়ার বিধ্বস্তের ছবি রয়েছ। এর সঙ্গে হিজাব পরিহিত ইলহান ওমরের ছবি যুক্ত করে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আমরা কখনো ভুলব না।’
এই মন্তব্যের মধ্যেই থেমে থাকেননি ট্রাম্প। তাঁকে টুইটের মাধ্যমে আক্রমণ চালিয়ে যান তিনি। গত সাপ্তহে রাশিদা তালিবকে এই ধরনের আক্রমণ চালানো হয়। গণহত্যা সম্পর্কে মন্তব্য করায় ডোনাল্ড ট্রাম্প, রিপাবলিকান পার্টি ও ডানপন্থী গণমাধ্যমগুলোর কড়া সমালোচনার মুখে পড়েন তিনিও।
ওমর জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতো কোনো ব্যক্তি যদি এই ধরনের কোনো আক্রমণ চালায় তাহলে বুঝতে হবে, এই ধরনের আক্রমণ কেবল আমার ওপর নয়। সমগ্র মুসলিম জাতির ওপর। আমার মতো বর্ণের সব মেয়েদের ওপর আক্রমণ।
স্থানীয় সময় গত মঙ্গলাবার সিএনএনে প্রকাশিত এক ইহুদির সাথে যৌথ বার্তায় শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদের হুমকি মোকাবেলা করার আহ্বান জানান তিনি।
যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, মুসলিম আমেরিকান ও ইহুদি আমেরিকান হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে নির্বাচিত হয়েছি। আমরা সন্ত্রাসীদের হামলা নিরবে সহ্য করতে পারি না। যারা আমাদের বিভাজন সৃষ্টি ও ভয় দেখাতে আসেন তাদেরকে আমরা ভয় করি না। আমাদের মধ্যে পার্থক্য যাই হোক। আমরা হতে পারি মুসলমান বা ইহুদি। কিন্তু অ্যান্টি-সেমিটিক ও ইসলাম বিরোধীদের মোকাবেলা করতে আমাদের একসাথে এগিয়ে আসতে হবে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.