Beanibazarview24.com
ফের ভয়, নিরাপত্তাহীনতা আর অনিশ্চয়তা গ্রাস করেছে শ্রীলংকাকে। দেশজুড়ে এবার মুসলিমবিরোধী ত্রাস ছড়াচ্ছে সংখ্যাগুরু বৌদ্ধরা। উসকানিতে পড়ে যোগ দিয়েছে খ্রিস্টানরাও।
ইস্টার সানডেতে হামলার পর থেকেই মুসলিমদের টার্গেটে পরিণত করেছে। এতদিন এখানে-ওখানে বিচ্ছিন্ন হামলা চালিয়ে এলেও রোববার রাতেই প্রথম সংঘবদ্ধ হামলা চালায় মুসলিমদের ওপর।
ঝাঁপিয়ে পড়ে ইট-পাটকেল, লাঠিসোটা, দেশীয় অস্ত্র, পেট্রল বোমা আর আগুন হাতিয়ার নিয়ে। এরপর একটানা চলছে তাণ্ডব। মুসলিমদের ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে দোকানপাট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কোনো কিছুই বাদ যাচ্ছে না
। উন্মত্ত বৌদ্ধ আর খিস্টানদের হাতে সব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে। বুধবার পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে একজনের নিহত হওয়ার খবর দেয়া হলেও প্রকৃত হতাহতের খবর এখনও জানা যায়নি।
এপ্রিল মাসের শেষের দিকে শ্রীলংকায় ইস্টার সানডের উৎসব উপলক্ষে কয়েকটি চার্চ ও বিলাসবহুল হোটেলে চালানো হয় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা। হামলায় বহু হতাহতের ঘটনায় ভয়, শঙ্কা আর শোকে যেন কুকড়ে যায় পুরো দ্বীপ দেশটি।
হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস। জড়িয়ে যায় স্থানীয় একটি উগ্রপন্থী মুসলিম সংগঠনের নামও। নতুন করে মুসলিমবিরোধী সহিংসতায় খ্রিস্টানদের উসকে দিতে এটাকেই হাতিয়ার করছে বৌদ্ধরা। নতুন করে সহিংসতার শিকার হয়েছে মূলত রাজধানী কলম্বোর নিকটেই শ্রীলংকার উত্তর-পশ্চিম প্রদেশের তিনটি জেলার অধিকাংশ শহর ও উপশহর।
এই তিনটি জেলায় অধিকাংশ দোকানপাট ও অন্যান্য ব্যবসার মালিক প্রধানত মুসলিমরাই। চলমান সহিংসতার বর্ণনা দিয়ে স্থানীয় কয়েকজন মুসলিম বাসিন্দা বুধবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেছেন, উত্তেজিত বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের আসার খবরে ভয়ে ঘরবাড়ির মধ্যে সিটিয়ে ছিলেন তারা। অনেকেই আবার পালিয়ে মাঠে কিংবা জঙ্গলে আশ্রয় নেন।
এরপর রাতের বেলায় ঘরবাড়িতে ইটপাটকেল আর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। মোটরসাইকেল ও গাড়িতে আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। দোকান ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে মালামাল লুট করে।
এখানেই শেষ নয়। হামলা চালায় বেশ কিছু মসজিদে। ভিতরে ঢুকে কোরআন ও ইসলামি বইপত্রে আগুন দেয়। এমনকি অজু করার জন্য রাখা পানিতে প্রস্রাব করে কেউ কেউ। সোমবার কারফিউ জারি করে পুলিশ।
তা সত্ত্বেও বন্ধ হয়নি সহিংসতা। এদিন সন্ধ্যায় কলম্বোর কাছেই একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের সদিচ্ছা নিয়ে নানা প্রশ্ন ও অভিযোগ করেছেন অনেকেই। বাসিন্দারা বলছেন, অনেক এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সামনেই ঘরবাড়ি ও মসজিদে ভাংচুর চালানো হয়েছে।
শহরের বাইরে বা দূরবর্তী কিছু এলাকায় মূলত বাইরে থেকে আসা বৌদ্ধ দাঙ্গাবাজরা হামলা চালিয়েছে। বাস ও স্থানীয় পরিবহনে করে এসে গ্রামগুলো ঘিরে ফেলে তারা। মুসলিমদের ঘরবাড়ি ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান চিনতে তাদেরকে সাহায্য করেছে স্থানীয় বৌদ্ধরা। সহিংসতা কবলিত অন্যতম জেলা পাণ্ডুওয়াসনুয়ারার একটি গ্রামের বাসিন্দা আবদুল নওশাদ।
তিনি জানান, সোমবার কারফিউর মধ্যেই রাত ৯টার কিছু পরে গ্রামে ঢুকে পড়ে ১১ক্স১২ জনের একটি দল। তাদেরকে দেখে বাড়ি থেকে পালিয়ে জঙ্গলে আশ্রয় নেয় তার পরিবার।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.