Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি: সিলেটে ছেলের লাশের অপেক্ষায় নাজিমের পরিবার







সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে নিহত হয়েছেন ৩৭ বাংলাদেশি। গত ২১ মে’র এ ঘটনায় বেঁচে দেশে ফেরেন ১৫ বাংলাদেশি। তবে এখনও খোঁজ মেলেনি সুনামগঞ্জের নাজিমউদ্দিনের। তার পরিবার এখন শুধু সন্তানের মুখটি দেখতে চায়। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে দ্বিতীয় নিখোঁজ নাজিমউদ্দিন মদনমোহন কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।



ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়ে নাজিমের বাবা আজির উদ্দিন বলেন, ‘আমি আর কিছু চাই না, শুধু পুতের মুখ দেখতে চাই। আমার পুতেরে এই মাটিতে কবর দিতে চাই। আমার সবই চলে গেছে, আর কিছু যাওয়ার নাই। এখন শুধু পুতের লাশ চাই। তোমরা আমার পুতের লাশ আইন্যা দেও।’

আজির উদ্দিন জানান, তিনি দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন। কয়েক বছর হলো তিনি প্রবাস জীবনের ইতি টেনে স্থায়ীভাবে দেশে ফেরেন। প্রবাস জীবনে যথেষ্ট পরিশ্রম করে তিলেতিলে নিজেকে ও নিজের পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করেন।



তিনি আরও বলেন, সিলেটের পার্ক স্ট্রিটের বাসায় থেকে নাজিম লেখাপড়া করতো। হঠাৎ একদিন বাড়িতে এসে সে জানায় সাড়ে সাত লাখ টাকায় ইতালি যাওয়ার একটি ভালো লাইন পেয়েছে। দালাল তার পূর্ব পরিচিত, সে সব ব্যবস্থা করে দেবে। শিপের গেমে সে ইতালি পৌঁছাবে। ইতালিতে অবস্থান করা নাজিমের স্বজনরা তাকে রিসিভ করার পর বাকি টাকা দেবে। কিন্তু ঝুঁকি নিয়ে ইতালি যাওয়ার এ প্রক্রিয়া থেকে নাজিমকে সরে আসার কথা বলেন তার পরিবারের সদস্যরা। তবে নাজিমের পীড়াপীড়িতে শেষ পর্যন্ত তাকে যাওয়ার টাকা জোগাড় করে দেওয়া হয়।



নাজিমের পরিবারের সদস্যরাআজির উদ্দির জানান, ইতালি যেতে চুক্তির প্রথম অংশের টাকা দেওয়ার পর প্রথমে নাজিমকে লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিরাপদে পৌঁছার পর দ্বিতীয় কিস্তির টাকা এবং পরে ইতালি নেওয়ার আগে তৃতীয় কিস্তিসহ মোট ৯ লাখ টাকা দালালের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়। তবে লিবিয়ার উপকূলীয় শহর জিলটন থেকে তাকে শিপের গেমে (পণ্যবাহী জাহাজ দিয়ে ইতালি যাওয়া) করে ইতালি নেওয়া হয়নি। তাদের প্লাস্টিকের নৌকার গেমে ওঠানো হয়। দীর্ঘ ২৩ ঘণ্টা নৌকাটি উত্তাল সাগর দিয়ে চলার পর এক সময় নৌকার তলদেশ ফেঁটে গিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়।



তিনি আরও জানান, সুনামগঞ্জ রেডক্রিসেন্টের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট থেকে তিনি দুর্ঘটনার তথ্য পান। পরে সুনামগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট অফিসে লাশ নিয়ে আসার ফরম পূরণ করেন তিনি। তবে তার ছেলের মরদেহের এখনও কোনও হদিস মেলেনি বলে জানান তিনি।

নাজিমের মা ছবিরুন্নেছা বলেন, ‘আমাদের ভাত-কাপড়ের কোনও অভাব ছিল না। সুখেই দিন কাটছিল। স্থানীয় দালালরা ছেলেকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে সাগরে ডুবিয়ে হত্যা করেছে।’



এ ঘটনায় স্থানীয় দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। নাজিমের দাদী জয়তারা বিবি বলেন, ‘টেকা-পয়সার অভাব ছিল না। তবু দালালরা আমার নাতিকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সাগরে নিয়ে হত্যা করেছে।’

নাজিমের বাবা আজির উদ্দিন অভিযোগ করেন, সুযোগ-সুবিধার কথা বলে চিহ্নিত ১০ জন দালাল স্থানীয় যুবকদের বিদেশ পাঠাচ্ছে। তবে এই বিদেশ পাঠাানোর কথা বলে তারা যুবকদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। তিনি এসব দালালদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন














You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.