Beanibazarview24.com
ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের আব্দুল হালিম সুজনের লাশ উদ্ধার করেছে লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। মর্গে থাকা অজ্ঞাত লাশের ছবি প্রকাশ করে নাম-পরিচয় জানতে সহযোগিতা কামনা করে লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে একটি ছবি প্রকাশ করে। প্রকাশিত সেই ছবিটি সনাক্ত করে শুক্রবার (২৪ মে) রাত সাড়ে ১১টায় লাশটি সুজনের বলে নিশ্চিত করেছেন নিহত সুজনের বড়ভাই আব্দুল আলিম।
নিহত আব্দুল হালিম সুজন উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের বড়উধা মাইজকাপন গ্রামের মৃত মাহমুদ আলীর পুত্র।
জানা যায়, ইউরোপ যাত্রার স্বপ্নে লিবিয়া হতে ইতালি যাওয়ার পথে গত ১০ মে সকালে ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ছিলেন বিয়ানীবাজারের আব্দুল হালিম সুজন (৩৫)। লিবিয়ায় মর্গে থাকা অজ্ঞাত লাশের ছবি প্রকাশ করে নাম-পরিচয় জানতে সহযোগিতা কামনা করে লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে একটি ছবি প্রকাশ করা হলে তা ভাইরাল হয়ে যায়। পরে লাশের ছবি দেখে অনেক স্বজন ও পরিচিতরা মরদেহটি সুজনের উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন।
নিহত সুজনের বড়ভাই আব্দুল আলিম এ প্রতিবেদককে জানান, সুজন দেশে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। মা-বাবাহীন পরিবারের চার ভাই ও এক বোনের সংসারের হাল ধরতে ইউরোপে যাবার স্বপ্নে বিভোর ছিল। পার্শ্ববর্তী বড়লেখা উপজেলার গোয়ালি এলাকার শাহিন আহমদ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার এলাকার পারভেজ আহমদ নামের এক দালালের সাথে ৯ লাখ ৮৩ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রায় ১ বছর পুর্বে ইতালি যাবার জন্য চুক্তি হয়েছিল।
দীর্ঘদিন লিবিয়াতে অবস্থান করার পর গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) সমুদ্র পথে ইতালি যাবার জন্য ট্রলারে চড়ে। ট্রলারে চড়ার পূর্বে সুজন বাড়িতে সর্বশেষ যোগাযোগ করেছে বলে জানান সুজনের বড়ভাই আব্দুল আলিম। নৌকাডুবির ঘটনা জানার পর থেকে আমার পরিবার-পরিজনদের মধ্যে দুঃসংবাদের শঙ্কা কাজ করছিল।
এসময় তিনি এ প্রতিবেদককে আরো জানান, ফেসবুকে সুজনের ছবি সনাক্ত করার পর লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করেছেন। সুজনের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের সাথেও যোগাযোগ করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১০ মে সকালে ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া সমুদ্র উপকূলে শতাধিক অভিবাসী বহন করা নৌকাটি ডুবে গেলে প্রায় ৬০ জন নিহত হন।
স্বপ্নের ইউরোপে পাড়ি জমাতে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় ফেঞ্চুগঞ্জের চার ও গোলাপগঞ্জের দুই তরুণের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ঘটনায় বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাই ইউনিয়নের কচকট খা গ্রামের সাহেম আহমদ খান নামের আরেক নিখোঁজ ছিলেন। পরবর্তীতে গত ১২ মে সাহেদ আহমদ খান তিউনিসিয়ার একটি সরকারি ক্যাম্প থেকে মুঠোফোনে পরিবারের সাথে কথা বলে সুস্থ রয়েছেন বলেন অবগত করেন। এছাড়াও বিয়ানীবাজার উপজেলার রফিক ও রিপন নামের আরোও দুই তরুণ নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
নৌকাডুবির ঘটনার ৬ সিলেটী যুবক নিহত হয়েছেন। তারা হলেন- উপজেলার সেনেরবাজার কটালপুর এলাকার মুহিদপুর গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে আহমদ হোসেন (২৪), একই গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে আব্দুল আজিজ (২৫), সিরাজ মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া (২৪), দিনপুর গ্রামের আফজাল (২৫), সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের ছোট ভাই, কুলাউড়ার ভুকশিমাইলের আহসান হাবিব শামীম (২৬) এবং গোলাপগঞ্জের শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের কদুপুর গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছোট ছেলে কামরান আহমদ মারুফ।
এছাড়া ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া সমুদ্র উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় উদ্ধারকৃত ১৩জন বাংলাদেশি গত বৃহস্পতিবার লিবিয়াস্থ বাংলাদশ দূতাবাসের সহযোগিতায় দেশে ফিরে এসেছেন।
সূত্রঃ বিয়ানীবাজার নিউজ২৪
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.