Beanibazarview24.com
ঢাকায় পানের দোকানে কাজ করার সময় প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন আল্লাদি। সেই সম্পর্ককে পরিণতি দিতে ত্যাগ করেন নিজের ইসলাম ধর্মও। এরপর হিন্দুমতে বিয়ে করে টানা ১১ বছর সংসার করেন।
এই সময়ে তাদের ঘর আলো করে আসে দুটি মেয়ে সন্তান। এরপর পরিবার জেনে যাওয়ায় দেখা দেয় বিপত্তি। বর্তমানে স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে স্বামীর বাড়িতে দুই সন্তানকে নিয়ে দুদিন যাবৎ অবস্থান করছেন শিখা রানী মন্ডল (৩৫) নামে এক নারী।
ওই নারীর অভিযোগ, স্বামী টুটুল মন্ডল ও তার পরিবার তাকে মেনে না নিয়ে বরং ভয়ভীতি ও মারধর করে তাড়ানোর চেষ্টা করছেন। বর্তমানে টুটুল মন্ডল ও তার পরিবার পলাতক রয়েছে বলে জানান তিনি।
স্বামী টুটুল মন্ডল শরীয়তপুর সদর উপজেলার পালং ইউনিয়নের পূর্বকোটাপাড়া গ্রামের সম্ভু মন্ডলের ছেলে। আর শিখা রানী মন্ডল ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার গাজিপুরা গ্রামের সামসুদ্দিন বেপারীর মেয়ে।
শিখা রানী মন্ডল জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে ঢাকার শ্যামবাজার এলাকায় পানের ব্যবসা করতেন টুটুল। তখন তাদের পানের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন তিনি। সে সময় তার সঙ্গে টুটুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে আল্লাদি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেন। তখন তার নাম রাখা হয় শিখা রানী মন্ডল।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে গোপনে ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে তাদের বিয়ে হয়। প্রায় ১১ বছরের সংসার জীবনে তাদের ঘরে দুটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। বড় মেয়ের নাম রাখা হয় মরশি রানী মন্ডল ও ছোট মেয়ের নাম রাখা হয় অন্তরা রানী মন্ডল।
ওই নারী জানান, বিয়ের পর পাঁচ বছর পরিবারকে না জানিয়ে শিখাকে নিয়ে শ্যামবাজারে থাকতেন টুটুল। পরে স্বামীর পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। এরপর থেকেই টুটুল বিভিন্ন কাজ দেখিয়ে সম্পর্কের দূরত্ব বাড়াতে থাকে।
শিখা রানীর অভিযোগ, গত তিন মাস যাবৎ তার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন টুটুল। এরপর তিনি স্বামীর গ্রামের বাড়ির ঠিকানা খুঁজে গত শনিবার সেখানে হাজির হন। গিয়ে দেখেন তার স্বামী টুটুল আরেকটি বিয়ে করেছেন।
টুটুল ও তার পরিবার তাদের বিভিন্ন ভয়ভীতি ও মারধর করে তাড়ানোর চেষ্টা করছেন জানিয়ে শিখা রানী বলেন, ‘স্বামীর স্বীকৃতি চাই। সন্তানরা বাবার পরিচয় চায়। আমি সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকতে চাই।’
জানতে চাইলে শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে জানতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ওই নারী থানায় এসে অভিযোগ করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে
এদিকে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, আগে সনাতন ধর্মে বিয়েতে রেজিস্ট্রি ছিল না। সেই হিসেবে মন্দিরে তাদের বিয়ে হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন সংসার করেছে। দুটি মেয়ে সন্তানও রয়েছে তাদের। তাই স্ত্রী ও সন্তানের দায়িত্ব নেওয়া উচিত টুটুলের। যদি না নেয় তাহলে শিখাকে আইনগত সহযোগিতা করা হবে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.