Beanibazarview24.com
নাফিস ও আকায়েদউল্লাহর পর এবার আশিকুল আলম নামে ২২ বছরের এক যুবক যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে আবারো কলঙ্কিত করলো বাংলাদেশের নাম। গ্রেনেড ও আগ্নেয়াস্ত্র কেনার সময় ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) তাকে গ্রেপ্তার করে। এফবিআই এজেন্টরাই ছদ্মবেশে অস্ত্র ও বিস্ফোরকের বিক্রেতা ছিল।
আশিককে গ্রেপ্তারের ঘটনায় বাংলাদেশি কমিউনিটিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। এই গ্রেপ্তারের খবর বিশ্বগণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হচ্ছে এবং এসব খবরে বার বার উঠে এসেছে বাংলাদেশের নামটি।
এর আগে ২০১২ সালে নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংক বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশি তরুণ কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ানুল আহসান নাফিসকে স্টিং অপারেশনে গ্রেপ্তার করে এফবিআই। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।
স্টিং অপারেশন মূলতঃ একটি কৌশল, যার মাধ্যমে ফাঁদে ফেলে, অপরাধ করতে সহযোগিতা দিয়ে অপকর্মের ঠিক আগমুহূর্তে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ধরে ফেলা হয়। বিশ্বের অনেক দেশে এ ধরনের অভিযান প্রচলিত থাকলেও এর নৈতিক ও আইনি দিক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ধরনের অভিযানের সমালোচনা হচ্ছে খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই। সুইডেন ও নেদারল্যান্ডসের মত কয়েকটি দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্টিং অপারেশন নিষিদ্ধ।
যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনকার্ডধারী আশিকুল আলম কবে ও কখন গ্রেপ্তার হয়েছে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি এফবিআই। তবে স্থানীয় শুক্রবার আশিককে ব্রুকলিনের ফেডারেল কোর্টে হাজির করা হয়। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেছে। বিচারক বলেছেন, এই মুহূর্তে আশিক বিপজ্জনক ব্যক্তি। তবে আদালতে আশিককে এখনো অভিযুক্ত করা হয়নি। পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ জুন।
আশিকের বাবার নাম মো. শাহজাহান। তার মায়ের নাম মুক্তা বেগম। বাবা-মায়ের সঙ্গে নিউইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের বহুল পরিচিত ‘সিংহ মার্কা বিল্ডিং’য়ে থাকতো আশিক। তাদের গ্রামের বাড়ি বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জে।
পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, শাহজাহান নিঃসন্তান। ১২ বছর আগে পুত্র পরিচয়ে আশিককে যুক্তরাষ্ট্রে আনেন তিনি। ওইসময় সে দত্তক নাকি সন্তান পরিচয়ে এসেছিল তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে শাহজাহান যুক্তরাষ্ট্রে যান ১৯৯৮ সালে। তিনি পেশায় একজন স্ট্রিট ভেন্ডর।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের আগস্ট থেকে আশিককে অনুসরণ করে আসছিল এফবিআই। পরে এ বছরের জানুয়ারিতে তার সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে এফবিআই এজেন্টরা। আশিক ছদ্মবেশী গোয়েন্দাদের কাছে বেশ কয়েকবার অস্ত্র ও গ্রেনেড কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে। ছদ্মবেশী এফবিআই এজেন্টদের কাছ থেকে আশিক একটি পিস্তলও কিনেছিল।
কেনার পর সেই পিস্তলের সিরিয়াল নম্বরও সে মুছে ফেলে। পিস্তলের সিরিয়াল নম্বর মুছে ফেলার জন্য এই অপরাধে তার ১০ বছরের সাজা হতে পারে। আশিককে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি এফবিআই। নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগও এ ব্যাপারে কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.