Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

শ্রীমঙ্গলে দিনমজুরের আলিশান বাড়ি, অঢেল সম্পদ







মাসুদ মিয়া ওরফে মাসুক কাজ করেন তেল বিপণনকারী রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিষ্ঠানে। পেশায় অস্থায়ী শ্রমিক। দৈনিক মজুরির কাজ। প্রায় ১৭ বছর হলো এই কাজ করেন। এই সময়ে বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়ে ওঠেছেন তিনি। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছেন আলিশান বাড়ি।

দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা এক অস্থায়ী শ্রমিকের স্বল্প সময়ে এত বিপুল সম্পদের অধিকারী হওয়া নিয়ে শ্রীমঙ্গল শহরজুড়ে নানা আলোচনা রয়েছে। হঠাৎ বড়লোক হয়ে মাসুদ মিয়া শ্রীমঙ্গলের এখন অন্যতম আলোচিত ব্যক্তি।



মাসুদ মিয়া বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের আওতাধীন তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা ডিপো’র শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ে কাজ করেন। ২০০২ সালে ঠিকাদারেরে মাধ্যমে অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন মাসুদ। শুরুর দিকে তার দৈনিক মজুরী ছিলো ৪০ টাকা। অফিসের ফাইল এগিয়ে দেয়া কিংবা অফিস স্টাফদের চা তৈরি করে দেয়াই ছিলো তার কাজ। বর্তমানে গাড়িতে তেল-মবিল পরিমাপ করে দেয়ার (ওজনদারের) কাজ করেন। অভিযোগ রয়েছে এই কাজ করতে গিয়েই অল্প সময়ে কোটি-কোটি টাকার মালিক হয়ে ওঠেন মাসুদ।



খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেঘনা ডিপোতে যোগ দেওয়ার আগে মাসুদ মিয়া পত্রিকা হকারের কাজ করতেন। বাইসাইকেলে করে পত্রিকা বিক্রি করতেন। তার স্ত্রী প্রতিবেশীর বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। তবে শ্রীমঙ্গল মেঘনা ডিপোতে ঠিকাদারের মাধ্যমে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে যোগ দিয়েই কপাল খুলে যায় তার। বাড়ি-গাড়ি ছাড়াও এখন তার রয়েছে অঢেল সম্পদ।



অভিযোগ রয়েছে, তেল পরিমাপে কারচুপি করেই বিপুল সম্পদের অধিকারী হয়ে উঠেছেন মাসুদ। অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই তিনি এ অনিয়ম করে চলছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

মাসুদের বর্তমান দৈনিক মজুরী ৭শ’ টাকা করে হিসাব করা হলে তার পুরো কর্মজীবনে আয় ৩০ লাখ টাকার মধ্যেই হওয়ার কথা। অথচ মাসুদ শ্রীমঙ্গল শহরে কেবল বাড়িই করেছেন কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করে।



মাসুদের এমন ‘আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়ে ওঠা’ সম্পর্কে মেঘনা ডিপো’র শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের ডিপো সুপার সাঈদ বলেন, মাসুদের এই অঢেল সম্পদ সম্পর্কে আমার জানা নেই। তিনি ডিপোতে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে শ্রমিকের কাজ করেন। তবে শুনেছি তার শহরে বাসা-টাসা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাকরির পাশাপাশি মাসুদ শ্রীমঙ্গলে তেল বহনকারী গাড়ির ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তার নামে বেনামে রয়েছে একাধিক তেলবহনকারী (ভাউচার) গাড়ি।



এসব ব্যাপারে মাসুদ মিয়া বলেন, ব্যাংকে আমার ঋণ রয়েছে। ঋণ নিয়েই বাসা নির্মাণ করেছি। এখন কোনোরকমে চলতে হচ্ছে। শ্রীমঙ্গল মেঘনা ডিপোর ওয়্যারহাউজে কোন পদে চাকরি করেন জানতে চাইলে মুচকি হেসে তিনি বলেন, ‘ওসব বাদ দেন তো ভাই। পুনরায় প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমার পদবি অস্থায়ী শ্রমিক।

ওয়েটম্যান বা ওজনদারের কাজ কীভাবে পেলেন জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

একজন শ্রমিকের এত বিপুল অর্থবিত্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি)র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, একজন ডে-লেবার শ্রেণির লোক এত টাকার মালিক হওয়া অস্বাভাবিক। তার এ বিপুল অর্থবিত্ত কিভাবে হলো তা খতিয়ে দেখা উচিত।

তিনি আরও বলেন, ঐ প্রতিষ্ঠানে বড় ধরণের সিন্ডিকেট ছাড়া এত সম্পদ সে বানাতে পারে না। তার সাথে নিশ্চয়ই এই প্রতিষ্ঠানে বড় ধরণের সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে। এত অল্প সময়ে একজন অস্থায়ী শ্রমিক হয়ে এত সম্পদ কীভাবে বানালেন তা অবশ্য তদন্ত করে দেখা উচিত। পাশাপাশি এখানে দুদকেরও বিশেষ ভূমিকা রাখা প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি।
সূত্রঃ সিলেট টুডে২৪ডটকম

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.