Beanibazarview24.com
পটুয়াখালীতে চুরির অভিযোগে সুমন হোসেন (১৩) নামে এক মাদরাসার ছাত্রকে মুখে কস্টেপ লাগিয়ে লোহার রড দিয়ে বর্বরোচিতভাবে পিটিয়েছেন ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক আহসান উল্লাহ। এতে শিক্ষার্থী সুমন গুরুতর আহত হয়। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন দফা পিটিয়েছেন ওই পাষণ্ড শিক্ষক। সুমন এখন ওই হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। সুমন হোসেন সদর উপজেলার বসাকবাজার এলাকার আবদুর রহিম চৌকিদারের ছেলে।
এ ঘটনায় সুমনের মা মোসা. রেহানা বেগম বাদি হয়ে আজ শুক্রবার সকালে শিক্ষক আহসান উল্লাহর বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার পর স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষক আহসান উল্লাহকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
সুমনের মা রেহানা বেগম আরটিভি অনলাইনকে জানান, তার ছেলে সুমন হোসেন হেতালিয়া বাঁধঘাট বায়তুল আহাদ আকনবাড়ি হাফিজিয়া মাদরাসায় পড়াশোনা করছে। গততাল বৃহস্পতিবার ওই মাদরাসার শিক্ষক আহসান উল্লাহর দুই হাজার টাকা খোয়া যায়।
এ ঘটনার জন্য সুমনকে সন্দেহ করে ওই শিক্ষক আহসান উল্লাহ। পরবর্তীতে তার রুমে ডেকে নিয়ে বেত্রাঘাত করে। পেটানোর এক পর্যায় ব্যবহৃত বেতটি ভেঙে গেলে একটি লোহার রড এনে পুনরায় পেটানো শুরু করে। এ সময় সুমন চিৎকার শুরু করলে অন্য ছাত্রদের গলা চেঁচিয়ে শব্দ করে পড়ার নির্দেশ দেয় ওই শিক্ষক।
এক পর্যায়ে সুমনের মুখে কস্টেপ লাগিয়ে তৃতীয় দফা পেটানো শুরু করে শিক্ষক আহসান উল্লাহ। পিটুনি শেষে সুমনের হাত-পা বেঁধে একটি কক্ষে আটকে রেখে সদর উপজেলার আউলিয়াপুরে যান তার মৃত দাদীর নামাজের জানাজায়। ঘটনার দেড়ঘণ্টা পরে সুমনের সহপাঠী ও ফুফাতো ভাই আকাশ পালিয়ে সুমনের পরিবারকে এ ঘটনা জানায়।
খবর পেয়ে সুমনের পরিবার সুমনকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষকের বাধার মুখে পরে। এ সময় স্থানীয়দের সহায়তায় সুমনকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সেলিম মাতব্বর জানান, সুমনের গোটা শরীরে আঘাতে চিহ্ন রয়েছে এবং শরীরে মাংসের ভিতরেও অনেক আঘাত লেগেছে। শরীর রক্তাক্ত হয়ে গেছে। তাই সুস্থ হতে কিছুটা সময় লাগবে।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান আরটিভি অনলাইনকে জানান, এ ঘটনায় সুমনের মা বাদি হয়ে শিক্ষক আহসান উল্লাহকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক আহসান উল্লাহকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.