Beanibazarview24.com
সময় যতো ঘনিয়ে আসছিল, ততোই উৎসবমুখর হয়ে ওঠছিল হাফিজুর রহমান সুমনের পরিবার। আগামী ঈদুল আজহার আগেই দেশে ফেরার কথা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা ৩০ বছর বয়সী এই যুবকের। তার জন্য বিয়ের প্রস্তুতিও নিচ্ছিল দেশে থাকা পরিবার, দেখে রাখা হয়েছিল কনেও।
কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় দক্ষিণ আফ্রিকায় নিহত হয়েছেন সুমন। তার পরিবারের উৎসবের আমেজ ছাপিয়ে এখন বিষাদের কান্না।
হাফিজুর রহমান সুমন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার রাখালগঞ্জের মৃত ডা. শামছুল হকের ছেলে। গত শনিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন শহরের কাছাকাছি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন সুমন।
সুমনের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, একটি মাইক্রোবাসে মালামাল নিয়ে কেপটাউন শহরে ফিরছিলেন কয়েকজন। ফেরার পথে দুর্ঘটনায় পতিত হয় মাইক্রোবাসটি। এতে নিহত হন সুমন এবং মুন্সিগঞ্জ জেলার সজীব নামের আরেক যুবক। পরে পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে রাখে।
জানা গেছে, ১০ ভাই-বোনদের মধ্যে সুমন অষ্টম। ২০১৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান তিনি। সেখানে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেন। আফ্রিকায় যাওয়ার পর আর দেশে ফেরেননি তিনি। তার পরিবার তাকে দেশে ফিরতে চাপাচাপি করছিল। পরিবারের চাপের মুখে আগামী ঈদুল আজহার আগে দেশে ফেরার কথা জানান সুমন।
দেশে এলে সুমনকে বিয়ে করানোর সিদ্ধান্ত নেয় তার পরিবার। এজন্য সুমনের জন্য কনেও দেখা হয়।
জানা গেছে, বড় বোন ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাহিদা বেগম সুমনের জন্য কনে দেখেন। কিন্তু সেই কনের সাথে আর বিয়ের পিঁড়িতে বসা হচ্ছে না সুমনের।
সুমনের ছোট ভাই এমাদুর রহমান রিমন বলেন, ‘আগামী ঈদের আগেই দেশে আসবেন বলে জানিয়েছিলেন ভাই। তার জন্য কনে দেখা হয়েছিল। আমাদের পরিবারে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছিল। কিন্তু সব শেষ! ভাই এখন দেশে আসবেন লাশ হয়ে।’
এদিকে, আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সুমনের লাশ দেশে আনা হবে। আজ সোমবার লাশ দেশে আনার বিষয়টি জানা যাওয়ার কথা।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.