Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

১২ লাখ টাকায় লিবিয়ায় গিয়ে বিমান হা মলায় শাহাজালাল নিহত







উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার একটি অভিবাসী আটক ক্যাম্পে বিমান হামলায় মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগছাড়া গ্রামের ফজেল কাজীর ছেলে শাহাজালাল কাজী (২৮) মারা গেছেন।

এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রীর বড় ভাই শহিদুল ইসলাম নিখোঁজ রয়েছেন। বিমান হামলায় নিহতের চাচাতো ভাই জুয়েল কাজী জীবিত আছেন।

জুয়েল কাজী আহত হয়ে ওই দেশের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জুয়েল কাজী বৃহস্পতিবার দুপুরে মোবাইল ফোনে পরিবারের কাছে নিহতের ঘটনার কথা জানিয়েছেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।



এই ঘটনায় নিহতের পরিবার দালাল নাসির শিকদারের শাস্তির দাবী জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে সরকারের কাছে লাশ বাংলাদেশে এনে দাফন করার দাবি করেছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগছাড়া গ্রামের ফজেল কাজীর ছেলে শাহাজালাল কাজী, তার স্ত্রীর ভাই শহিদুল ইসলাম ও চাচাতো ভাই জুয়েল কাজী এই তিনজন রোজার সময় দালালের সঙ্গে জনপ্রতি ১২ লাখ টাকা করে চুক্তির মাধ্যমে ইতালির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। লিবিয়া হয়ে যাবার পথে তারা ওই দেশে পুলিশের হাতে আটক হন।



এদিকে মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের গাছবাড়িয়া গ্রামের নাসির শিকদার নামের ওই দালাল তাদের জানান, ওরা তিনজন ইতালি পৌঁছে গেছে। আরও টাকা দিলে তাদের সঙ্গে কথা বলিয়ে দিব। এই টাকা চাওয়া নিয়ে ওই তিন পরিবারের সঙ্গে দালাল নাসিরের কথা কাটাকাটি চলছিল।

বুধবার ভোররাতে লিবিয়ার ত্রিপোলির পূর্বাঞ্চলের ওই অভিবাসী আটক কেন্দ্রে বিমান হামলা চালানো হয়। এতে শাহাজালাল কাজী মারা যান। আর তার স্ত্রীর বড় ভাই শহিদুল ইসলাম নিখোঁজ হয়।



এই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া নিহতের চাচাতো ভাই জুয়েল কাজী বাংলাদেশে মোবাইলের মাধ্যমে তাদের পরিবারকে বিষয়টি জানায়। এই খবর পাওয়ার পর থেকেই নিহত শাহাজালারের পরিবারের চলছে শোকের মাতম। প্রতিবেশীরা তাদের সান্তনা দেয়ার জন্য নিহতের বাড়িতে ভিড় করছে।

নিহতের বাবা ফজলে কাজী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ধারদেনা করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম। আজ সেই ছেলের এমন করুণ মৃত্যু হলো। তা আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। অনেক স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে পাঠিয়েছিলাম। আমাদের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। আমরা সরকারের কাছে ওর লাশ দেশে আনার ও দালালের শাস্তির দাবি জানাই।



নিহতের মা হাজেরা বেগম বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। তাকে সান্তনা দেয়ার মতো ভাষা কারো জানা নেই।

তিনি দালালের শাস্তি দাবি করে বলেন, ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে ছেলেকে ইতালি পাঠাই। যাতে করে পথে কোনো সমস্যা না হয়। সেই সমস্যা তো হলোই। আমার ছেলেকে প্রাণ দিতে হলো।

তিনি বলেন, আমি দালাল নাসির শিকদারের শাস্তির দাবি জানায়। যাতে করে সে এমন কাজ আর করতে না পারে। আর সরকার যেন আমার ছেলের লাশটি দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা করে দেন।



নিহতের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার বলেন, মিম এখন কাকে বাবা বলে ডাকবে। আমার সব শেষ হলে গেল। আমরা পথে বসে গেলাম।

নিহতের সাত বছরের মেয়ে মিম কান্না করতে করতে বলে, বাবা বিদেশ যাবার সময় আমাকে বলেছিলো ‘মা ভালো থেকো, তোমার জন্য অনেক খেলনা নিয়ে আসবো।’ কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরে মা বললো বাবা আর কোনো দিন আসবে না, মারা গেছেন।

নিখোঁজ শহিদুল ইসলামের ভাই আজিজুল ইসলাম বলেন, প্রায় দেড় মাস আগে শহিদুল ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এরপর তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারিনি। কয়েকদিন ধরে দালাল বলছে, শহিদুল ইতালি পৌঁছে গেলে। দুই লাখ টাকা দিলে তার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেব। ভাইয়ের সঙ্গে আর কথা বলা হয়নি।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.