Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

পবিত্র হজ্জ পালনের সময় সকল প্রকার ছবি, সেলফি তোলা শিরকঃ আল মাসউদি সৌদি মুফতি







বেশ কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে যে, পবিত্র হজ্জের সময় বিভিন্ন ইবাদতি আনুষ্ঠানিকতার সময় অনেকেই সেলফি তোলায় ব্যস্ত থাকেন। বিষয়টি নিয়ে গত বছর সৌদি আরব থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে প্রচুর আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। ওইসব লেখায় বলা হয়েছিল, পবিত্র হজ্জ পালন করতে আসা কিছু মানুষের আচরণ দেখলে মনে হয় তারা আনন্দ ভ্রমণে এসেছেন নাউযুবিল্লাহ।



পবিত্র হজ্জের সফরেও তারা খ্যাতনামা বিভিন্ন ব্যক্তিদের দেখে তাদের সঙ্গে ছবি তোলার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেন। এমনকি পবিত্র কাবাঘরের সামনে পর্যন্ত সেলফি তোলা খুবই পরিচিত ও সাধারণ একটি দৃশ্যে পরিণত হয়েছে। নাউযুবিল্লাহ!!!

বিষয়টি আবারও সামনে এলো একটি ফতোয়াকে কেন্দ্র করে। ফতোয়াটি প্রদান করেছেন মসজিদুল হারামের দারুল ইফতার সদস্য ও ইসলামি আইনশাস্ত্রের অধ্যাপক মুহম্মদ আল মাসউদি। ওই ফতোয়ায় তিনি বলেছেন, পবিত্র কাবা ঘরে সেলফি তোলা শিরক।



তিনি বিবৃতিতে বলেন, পবিত্র হজ্জব্রত অবস্থায় যদি কেউ ছবি তুলে প্রকাশ করে তাহলে সেটা হবে রিয়া (লোক দেখানো ইবাদত)। আর রিয়া শিরকের সমতুল্য।

অধ্যাপক মাসউদির মতে, যে সব ব্যক্তি পবিত্র হজ্জ পালন করতে এসে পবিত্র মক্কা নগরীর বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান, হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা পালনের স্থানসমূহে এসে নিজেদের হজ্জের ছবি তুলেন ও বিভিন্ন গণযোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন। সত্যিকার অর্থে তাদের এ কাজ রিয়াতে পরিণত হয়।

মসজিদুল হারামের দারুল ইফতার সদস্য আরও বলেন, সে সব ব্যক্তি পবিত্র হজ্জ পালন করতে এসে নিজের ছবি তোলা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তারা পবিত্র হজ্জের পাশাপাশি অন্য আরেকটি কাজে নিয়োজিত হন। এর ফলে তারা স্বাধীনভাবে, একাগ্রচিত্তে ইবাদত করতে পারেন না। আর এ ছবি যখন সামাজিক নেটওয়ার্কে প্রকাশ করেন, তখন সেটা রিয়াতে পরিণত হয়। আর রিয়া সর্বাবস্থায় হারাম। আর পবিত্র হজ্জের সময় সকল প্রকার হারাম কাজ নিষিদ্ধ, কারন মহান আল্লাহ পাক বলেনঃ [الْحَجُّ أَشْهُرٌ مَّعْلُومَاتٌ فَمَن فَرَضَ فِيهِنَّ الْحَجَّ فَلاَ رَفَثَ وَلاَ فُسُوقَ وَلاَ جِدَالَ فِي الْحَجِّ وَمَا تَفْعَلُواْ مِنْ خَيْرٍ يَعْلَمْهُ اللّهُ وَتَزَوَّدُواْ فَإِنَّ خَيْرَ الزَّادِ التَّقْوَى وَاتَّقُونِ يَا أُوْلِي الأَلْبَابِ]
অর্থাৎ: পবিত্র হজ্জ্বের জন্য নির্ধারিত কয়েকটি মাস আছে। এসব মাসে যে লোক পবিত্র হজ্জ্বের পরিপূর্ণ নিয়ত করবে, তার জন্য স্ত্রী সহবাস জায়েজ নয়। জায়েজ নয় কোনো ফাসেকি কাজ করা এবং ঝাগড়া-বিবাদ করাও পবিত্র হজ্জ্বের সেই সময় জায়েজ নয়। আর তোমরা যাকিছু সৎকাজ কর, মহান আল্লাহ পাক তিনি তো তা জানেন। আর তোমরা পাথেয় সাথে নিয়ে নাও। নিঃসন্দেহে সর্বোত্তম পাথেয় হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার ভয় (তাকওয়া)। আর আমার ভয়(তাকওয়া অবলম্বন) করতে থাকো, হে জ্ঞানী লোকেরা! তোমাদের উপর তোমাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ অন্বেষণ করায় কোন পাপ নেই।



তাই পবিত্র হজ্জ পালনে যেয়ে ছবি, সেলফি তোলার বিষয়ে ইসলামি চিন্তাবিদদের অভিমত হলো, যেখানে স্ত্রীর সাথে হালাল সহবাস পর্যন্ত নিষিদ্ধ, যেখানে ফাসেকি কাজ পর্যন্ত করা নিষিদ্ধ সেখানে মহান আল্লাহ পাকের ঘর কাবা শরিফের আঙিনায় বসে ছবি তোলার মতো গর্হিত কাজ জঘন্যতম অপরাধ। এটা স্পষ্টভাবে পবিত্র কাবার সঙ্গে বেয়াদবি। সরাসরি আল্লাহর হুকুমের সীমালঙ্ঘন। এতে পবিত্র হজ্জ তো আদায় হবেনা উল্টো শিরকের গুনাহ হওয়ার যথেষ্ট কারন আছে।



বস্তুত অপ্রয়োজনে ছবি বা সেলফি পৃথিবীর যে কোনো জায়গায় তোলা অন্যায় ও নাজায়েজ কাজ। সেখানে কাবা আঙিনায় তো অবশ্যই নাজায়েজ। এখন কেউ যদি ছবি তোলে তবে সে গোনাহগার হবে। কিন্তু এই হারাম কাজ কে যদি হালাল মনে করে তাহলে তার ঈমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠবে। কারন হাদিসে রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে এসেছেঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, “যারা প্রাণীর ছবি তৈরী করবে (সেটা হাত দিয়ে হোক বা যেকোন প্রযুক্তি দিয়ে হোক), ক্বিয়ামতের দিন তাদের কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। এবং তাদেরকে বলা হবে, যে ছবিগুলো তোমরা তৈরী করেছ, সেগুলোর মধ্যে প্রাণ দান কর।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ ৮৮০, মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ ২০১)



তাই পবিত্র কোরআন হাদিস ইজমা ও কিয়াসের ভিত্তিতে, পৃথিবীর সব ইমাম ফকিহ ও ধর্ম বিশেষজ্ঞদের অভিমত হলো, অতি প্রয়োজন(পাসপোর্ট, আইডি, লাইসেন্স, জমি রেজিস্ট্রি) ছাড়া ছবি তোলা আঁকা ও প্রকাশ করার অনুমতি ইসলাম দেয়নি। আর কাবার আঙিনায় তো আরও না। সমকালীন মুফতিদের অভিমতও হলো, প্রয়োজন ছাড়া ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলাও জায়েজ নয়। তবে অনেক মুফতি বলছেন, কম্পিউটার বা মোবাইলের মেমোরি বা ভিবিন্ন ডাটাবেজে সংরক্ষিত ছবি প্রিন্ট করার আগ পর্যন্ত জায়েজ।

সূত্রঃ ফতোয়াটি ইসলামিক সাইট অন ইসলাম ডট নেট থেকে নেওয়া হয়েছে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.