Beanibazarview24.com
সিলেট নগরের কোতোয়ালি থানাধীন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নি’র্যাতনে রায়হান উদ্দিন (৩০) নামে এক যুবক নিহ’তের ঘটনায় চার পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তিনজনকে প্র’ত্যাহার করা হয়েছে।
সোমবার (১২ অক্টোবর) পুলিশ ফাঁড়িতে নি’র্যাতনে হ’ত্যার অভিযো’গে নি’হতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে মা’মলা (নং-২০(১০)২০২০) দায়ের করেন।
এরপরই ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া, তৌহিদসহ চারজনকে ব’রখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও তিনজনকে প্র’ত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সিলেট নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, সাময়িক বরখা’স্তকৃত চারজনের মধ্যে রয়েছেন ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর হোসেন ভূঁইয়া, তৌহিদ, টিটু ও হারুনুর রশিদ। তাদের মধ্যে এএসআই পদবীর একজন রয়েছেন। তবে প্র’ত্যাহারকৃত তিনজনের নাম দিতে পারেননি তিনি।
সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) সৌমেন মিত্র বলেন, ‘পুলিশ ফাঁড়িতে নি’র্যাতনের ঘটনায় এসআই আকবরসহ চারজনকে বরখা’স্ত ও তিনজনকে প্র’ত্যাহারের খবর জানতে পেরেছি।
এদিকে, সরেজমিনে সোমবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত সিলেট নগরের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে এসআই আকবর, কনস্টেবল তওহীদ (যার মোবাইল (নম্বর: ০১৭৮৩৫৬১১১১) দিয়ে নিহ’তের মায়ের মোবাইলে ফোন করা হয়) আরও দু’জনকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়।
এদিকে, পুলিশ হেফাজতে রায়হানকে পিটিয়ে হ’ত্যার প্রতিবাদে নগরের আখালিয়া এলাকাবাসীর উদ্যোগে ওই স্থানে মা’নববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। তারা হ’ত্যায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শা’স্তি মৃ’ত্যুদ’ণ্ড দাবি করেন।
রোববার (১১ অক্টোবর) সকালে রায়হানের মৃ’ত্যু হয়। পুলিশের দাবি, নগরের কাস্টঘর এলাকায় ছি’নতাইকালে গ’ণপিটু’নিতে রায়হান নিহ’ত হন। কিন্তু স্বজনদের দাবি, তাকে পুলিশ ফাঁড়িতে নি’র্যাতন করে হ’ত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী কোতোয়ালি থানায় দা’য়ের করা মা’মলার এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, ‘তার স্বামীকে কে বা কারা বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে পুলিশি হেফাজতে রেখে তার হাত-পায়ে আ’ঘা’ত করে র’ক্তাক্ত করে এবং হাতের নখ উপড়ে ফেলে। পুলিশ ফাঁড়িতে রাতব্যাপী নি’র্যাতনের ফলে আমার স্বামী মা’রা যান। ’
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, তাদের আড়াই মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। গত ১১ অক্টোবর ভোর ৪টা ৩৩ মিনিটের দিকে ০১৭৮৩৫৬১১১১ মোবাইল নম্বর থেকে নিহ’তের মায়ের নম্বরে ফোন যায়। ফোন রিসিভ করেন রায়হানের সৎ বাবা হাবিবুল্লাহ। ফোন রিসিভ করতেই রায়হান বলেন, আমাকে বাঁচাও, টাকা নিয়ে বন্দরফাঁড়িতে আসো।
হাবিবুল্লাহ ভোর ৫টা ৩০ মিনেটের দিকে টাকা ফাঁড়িতে পৌছান। তখন দায়িত্বরত এক কনস্টেবলের কাছে রায়হানের খবর জানতে চাইলে বলা হয় রায়হান ঘুমিয়ে এবং যারা তাকে ধরে এনেছে, তারাও চলে গেছে সকাল সাড়ে ৯টায় আসতে বলা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় ১০ হাজার টাকা নিয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে যাবার কথা বলে ওই কনস্টেবল। পুলিশের কথামতো নিহতের সৎ বাবা হাবিবুল্লাহ টাকা নিয়ে ফাঁড়িতে গিয়ে রায়হান কোথায় জানতে চাইলে বলা হয়, রায়হান অসুস্থ হওয়ায় তাকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার সৎ শ্বশুর হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের ম’রদে’হ দেখতে পান।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.