Beanibazarview24.com
আপেলের মতো দেখতে অনেকটা মাঝারি সাইজের কুল। রঙ আপেলের মতো। সবুজ ও হালকা হলুদের ওপর লালচে। খেতে অনেক মিষ্টি ও সুস্বাদু। অনেকটা বাউকুলের মতো দেখতে হলেও এটি মূলত কাশ্মীরি আপেল কুল।
বর্তমানে সারাদেশের অন্যান্য সফল কৃষকদের মত কাশ্মীরি আপেল কুল চাষ করে সফল হয়েছেন টাঙ্গাইলের নাগরপুরের কুল চাষি আকরাম হোসেন। উপজেলার ভাড়রা ইউনিয়নের পাঁচতারা গ্রামে প্রায় এক যুগ ধরে কুল চাষে রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।
ধলেশ্বরী নদীর কূল ঘেষে কয়েক বিঘা পতিত জমি থাকায় নতুন কিছু করার জন্য উদ্ধুদ্ধ হন আকরাম। অনাবাধি জমিকে কাজে লাগানোর জন্য কয়েকজনের সাথে পরামর্শ করে শখের বশেই শুরু করেন কাশ্মীরি আপেল কুল চাষ। রোপন করেন ১৪’শ চারা। প্রথম বছরেই খরচের টাকা উঠে আসায় আগ্রহ বেড়ে যায়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সবুজ পাতার ফাঁকে লুকিয়ে থাকা রসালো আপেল কুল দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও তেমন সুস্বাদু। গাছের বয়স বেশি হওয়ায় ফল কম ধরেছে তবুও লাভ হবে বলে জানান তিনি। প্রায় প্রতি দিনই বিভিন্ন এলাকার মানুষ দেখতে আসে এই আপেল কুল বাগান। সখের ছবি তোলা শেষে গাছ থেকে পারা টাটকা ভেজালমুক্ত কুল বাড়ির জন্য কিনে নিয়ে যান অনেকেই।
রোপণের ১০ মাসের মাথায় কুল চারাগুলো পরিপক্ব হয়। ১২ মাসের মাথায় গাছে ফুল আসে। জানুয়ারি মাসে গাছে ধরে কাশ্মীরি আপেল কুল। প্রতি গাছে শুরুতে ২০-২৫ কেজি করে ধরেছে আপেল কুল। এরই মধ্যে ৭০ টাকা কেজি পাইকারিতে আপেল কুল বিক্রি শুরু করেছেন আকরাম। বেড়েছে ক্রেতাদের চাহিদা। কুল গাছের পরিচর্যায় নিয়মিত রয়েছে কয়েকজন বেতনভুক্ত শ্রমিক।
আকরাম হোসেন বলেন, কাঠের ব্যবসা বাদ দিয়ে সখের বসে ১২ বছর আগে অনাবাদি নদীর পারের জমিতে শুরু করি আপেল কুল চাষ। প্রথম বছরই খরচ উঠে আসে। খুবই লাভজনক হওয়ায় বর্তমানে দুটি আপেল কুল ও দুটি লেবু বাগান রয়েছে। বাগানের আপেল কুল ও লেবু জেলাসহ বিভিন্ন বাজারে পাইকারী বিক্রি করে থাকি। তাতে যা লাভ হয় পরিবার নিয়ে সুখেই আছি।
তিনি আরো বলেন, উপজেলার মাটিতে কাশ্মীরি আপেল কুলের বাম্পার ফলন হবে আশা করি। যেমনটি হয়েছে আমার। এখানের মাটি অনেক ভালো। যে কেউ সহজে এটি চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারবেন এবং যদি কেউ সহযোগিতা চায় তাকে সফল হতে সঠিক পরামর্শের জন্য আমার দুয়ার খোলা থাকবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল মতিন বিশ্বাস জানান, আমাদের দেশের অন্যান্য স্থানের মতোই এ উপজেলায় কাশ্মীরি আপেল কুল চাষ শুরু হয়েছে। ভাড়রা ইউনিয়নের পাঁচতারা গ্রামের চর এলাকাসহ নাগরপুরে প্রায় ২০ বিঘা জমিতে আপেল কুলের চাষ হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে কুল চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। আকরাম হোসেন সফল হওয়ায় আরো অনেক যুবক আগ্রহী হবে বলেও জানান তিনি।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.