Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণায় প্রবাসীদের মাথায় হাত


প্রবাসী কর্মীরা কেউ কেউ ছুটিতে এসে আ’ট’কা পড়েছেন ১৩-১৪ মাস ধরে। তারপরেও অনেক চেষ্টা করে এবং অর্থ খরচ করে রি-এন্ট্রি পারমিট পেয়ে গন্তব্য দেশের শর্ত অনুযায়ী কোয়ারেন্টিনের হোটেল বুকিং দিয়েছেন। বিদেশগমনে সেখানে যু’ক্ত হয়েছে অ’তিরিক্ত খরচ। তারপর টিকেট কে’টেও এখন ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার খবরে মা’থায় আকাশ ভেঙে পড়েছে প্রবাসী কর্মীদের।

শুধু কর্মী নন বিদেশ থেকে অনেক পেশারই চাকরিজীবীরা দেশে এসেছেন ছুটিতে। তাদেরও এখন হোটেল বুকিং আর টিকে’টের খরচ দিয়ে মা’থায় হাত, কারণ অ’তিরিক্ত টাকা দিয়ে টিকেট রি-ইস্যু করা গেলেও কোয়ারেন্টিনের টাকা কোনোভাবেই ফেরতযোগ্য না।

কাতারের দোহা থেকে ছুটিতে দেশে এসেছিলেন রানা। তিনি বলেন, অনেকেই ছুটিতে এসে ১৩-১৪ মাস আ’ট’কা পড়েছি। অনেক সময় পরে রি-এন্ট্রি পারমিট পেলেও এখন ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেলে কোয়ারেন্টিনের জন্য যে টাকা আম’রা হোটেলকে দিয়েছি সেটা পুরাটাই লস যাবে। তারপর টিকেট রি-ইস্যু করতে লাগবে অ’তিরিক্ত টাকা। আমাদের তো ম’রার ওপর খাড়ার ঘা অবস্থা।

১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের পাশাপাশি বন্ধ থাকবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও। রবিবার (১১ এপ্রিল) আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানায় বেসাম’রিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। ফলে ওই ৭ দিনে বাংলাদেশ থেকে আকাশপথে বিদেশে যাওয়া-আসা একেবারেই বন্ধ থাকবে। সোমবার (১২ এপ্রিল) কঠোর বিধিনিষেধ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সেখানে উল্লেখ করা হয়, সব আন্তর্জাতিক এবং আভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ থাকবে।

ফ্লাইট বন্ধের এই সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন প্রবাসী কর্মীরা। সেই সঙ্গে বিপদে পড়েছেন জনশক্তি রফতানিকারকরা। তাদের দেওয়া তথ্য মতে, এই মুহূর্তে ৫০-৬০ হাজার ভিসা প্রক্রিয়াধীন আছে, ২০-২৫ হাজার কর্মীর টিকেট ইস্যু করা আছে। পল্টন এলাকার এক রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক জানান, কোনও অগ্রিম নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়াটা অ’পেশাদার আচরণ। দেশের জন্য এটি একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কাতার এবং ওমানের হাজার হাজার যাত্রীরা লাখ লাখ টাকা দিয়ে কোয়ারেন্টিন হোটেল বুকিং করে রেখেছে যেগুলো নন রিফান্ডেবল, যাত্রীরা যেতে না পারলে প্রত্যেকের লাখ টাকার ওপর লোকসান হয়ে যাবে। এই টাকাগুলো কী’ সরকার দেবে ?

সিঙ্গাপুরগামী এক যাত্রী জানান, তিনি ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুর ইমিগ্রেশনে হোটেল কোয়ারেন্টিন বাবদ ২ হাজার ১১৫ ডলার পরিশোধ করেছেন। এই টাকা অফেরতযোগ্য।

জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রা মহাসচিব শামিম আহমেদ চৌধুরী বলেন, ২০ হাজারের মতো যাত্রী তৈরি টিকেটসহ। আম’রা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি এবং অনুরোধ করেছি যেন অন্তত যাওয়ার ফ্লাইট চালু রাখা হয়। আম’রা সরকারের কাছে দাবি করছি, যেহেতু গন্তব্য দেশ ফ্লাইট বন্ধ করেনি সেক্ষেত্রে আমাদের যাত্রী যাদের সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে তাদের যাওয়ার একটা বিশেষ ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। কারণ গন্তব্য দেশ বন্ধ করলে আমাদের কিছু করার নাই কিন্তু যতক্ষণ তারা বন্ধ না করছে আমাদের যাওয়ার ফ্লাইট চালু রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সরকার যদি উদ্যোগ না নেয় আম’রা বিশাল পরিমাণে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবো। আমাদের লোকজন যারা কাজ নিয়ে যাচ্ছে তারা তো বিপদে পড়ছেই আম’রাও ভুক্তভোগী হবো । এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার মতো আমাদের কোনও সুযোগ থাকবে না। আম’রা বন্ধ করলে গন্তব্য দেশের ভিসা বর্ধিত করার সুযোগ থাকবে না।

এদিকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এই সংকট নিরসনে কর্মক’র্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মন্ত্রী। এটি নিয়ে শিগগিরই আন্তঃমন্ত্রণালয় একটি বৈঠক করার কথা আছে।

এ বিষয়ে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের শরিফুল হাসান বলেন, আমাদের গত বছর করো’নার কারণে কর্মসংস্থান ৭ লাখের জায়গায় ২ লাখেরও কিছু বেশি হয়েছে। এবছর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছিল। গত ৩ মাসে আমাদের প্রায় দেড় লাখ লোক বিদেশ গিয়েছে। এই মুহূর্তে হঠাৎ করে ফ্লাইট বন্ধ অবিবেচকের মতো সিদ্ধান্ত হলো। কারণ আম’রা কর্মী পাঠাই , কর্মী পাঠানো দেশ হিসেবে আমাদের বন্ধ করার কারণে অনেক কর্মী যেতে পারবে না, তাদের কোয়ারেন্টিনের জন্য যে হোটেল বুক করা ছিল সেটার টাকা লস যাবে, নির্ধারিত সময় কর্মস্থলে যোগ দিতে পারবে না , ভিসার সমস্যা হবে। প্রবাসী কর্মীরা কিন্তু প্রতি পদে পদে সমস্যায় পড়বে।

তিনি আরও বলেন, যারা যাচ্ছেন তারা করো’না নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের কেন আ’ট’কাবো? সাতদিনের বন্ধের প্রভাব ১৫-২০ হাজার মানুষের ওপর পড়বে। এটা আমাদের জন্য খুবই নেতিবাচক সিদ্ধান্ত।

অ’ভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের (অকাপ) চেয়ারম্যান শাকিরুল ইস’লাম বলেন, যাদের যাওয়ার কথা ছিল তারা যেতে না পারলে টাকা পয়সা দিয়ে দিয়ে যারা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল তারা যেন কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই জায়গা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। যেতে না পারলে এটার একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বেই।
সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.