Beanibazarview24.com
বিয়ানীবাজার পৌরবিএনপির সাবেক সভাপতি ও পৌর মেয়র নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আবু নাসের পিন্টুকে হ’ত্যা চেষ্টা করে এক পাগল। গত ১৯ অক্টোবর রাত প্রায় সাড়ে ১২টার দিকে পৌর শহরের স্যানেটারী অফিসের সামনে এ লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটে। এ সময় ঔ পাগলের কাছ থেকে ৩টি দা, মোবাইল ও বেশ কিছু টাকা উদ্ধার করে স্থানীয় জনতা। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ঔ পাগলকে তল্লাশীর পরও কোন অদৃশ্য ছায়ায় রাত ৩টার পর থেকে পাগল লোকটি উধাও রয়েছে তা নিয়ে উপজেলার সর্বমহলে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
কেরালা ভাষায় কথা বলা ঐ পাগল দীর্ঘদিন কেনই বা এখানে বাসে থাকত? তার কাছে পাওয়া মোবাইল ফোন দিয়ে কার সাথে কথা বলত? আসলে কি সত্যি সে পাগল? এরকম হাজারো প্রশ্নের তীর সাধারণ মানুষের। তবে এ ঘটনার পর থেকে প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সজাগ দৃষ্টি দিয়ে উপজেলায় আগন্তুক কোন পাগলকে ঠাঁই না দেয়ার জন্য সচেতন মহলের অনেকেই অভিমত জানান।
জানা যায়, বিয়ানীবাজার পৌরশহরের স্যানেটারী কার্যালয়ের সামনের গেটে প্রায় ৭-৮মাস থেকে অবস্থান করছিলেন ভবঘুরে এক ব্যক্তি। রোদে পুঁেড়-বৃষ্টিতে ভিজে দিনরাত কাটালেও সে কারো ক্ষতি করেনি। গভীর রাতেও তাকে রাস্তার পাশে বসে অথবা শুয়ে থাকতে দেখা যেত। তার চুল দাড়ি ছিল এলোমেলো। কারো কাছে কখনো হাতও পাতেনি কথিত ওই পাগল। এমন আচরণে স্থানীয় অনেকেই তাকে খাবার-দাবার কিনে দিতেন। কেউ আবার টাকা-পয়সাও তাকে দিয়ে মানষিক তৃপ্তি পেতেন। এর রেশ ধরে কথিত ওই পাগলকে প্রায়ই খাবার-টাকা পয়সা তুলে দিতেন বিয়ানীবাজার পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও গত পৌর নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আবু নাসের পিন্টু।
গত ১৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ১২টার দিকে পিন্টু বাড়ি ফেরার পথে কথিত ওই পাগলকে আবার খাবার দিতে গেলে বাঁেধ বিপত্তি। ওই ব্যক্তি গলায় দা’ ধরে তাকে প্রাণে খুন করার চেষ্টা চালায়। এ সময় বাড়ি ফিরতে যাওয়া অপর পথচারীরা তাকে রক্ষা করেন। তখন বিক্ষুব্দ পথচারীরা ওই ব্যক্তিকে ঘিরে ধরে তল্লাশি চালালে তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন, ৩টি দা ও বেশকিছু টাকা পাওয়া যায়। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, ওই ব্যক্তির কাছে থাকা সচল মোবাইল ফোনটি কোথা থেকে এলো। ওই মোবাইল ফোনে চার্জ দেয়া হয় কি করে, কার সাথে-কখন মোবাইলে কথা বলতো ওই ব্যক্তি।
আবু নাসের পিন্টু জানান, আমি প্রায়ই তাকে টাকা-পয়সা দেই। এদিনও তাকে নতুন একটি লুঙ্গি এনে দেয়ার পর সে দা নিয়ে আমাকে খুন করার চেষ্টা করে। তার কাছে কাভারসহ ছুরি পাওয়া গেছে। পিন্টু বলেন, ওই ব্যক্তি ভারতীয় কেরালা ভাষায় কথা বলে। তার আচরণ রহস্যঘেরা। মূলত: আমাকে হ’ত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে সে।
ঘটনার পর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তল্লাশি করে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা, দা, ছুরি ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। রাত ৩টা থেকে কথিত ওই পাগল ব্যক্তি নিখোঁজ হওয়ায় এ ঘটনার রহস্য আরো ঘনিভূত হচ্ছে। হয়তো এ রহস্য আর জানা হবেনা কখনো, এমনটি মনে করেন ঘটনার শিকার আবু নাসের পিন্টু।
সচেতন মহলের অনেকেই মনে করেন, এই উপজেলায় শুধু ঐ পাগল লোক নয়, আরও বেশ কিছু পাগল ও নতুন মুখ দেখা যাচ্ছে। প্রশাসন সর্বোচ্চ নজরদারি না দিলে আরও বড় কোন ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ পাগল লোকটি যদি এরকম লোমহর্ষক ঘটনার জন্ম দিতে পারে তাহলে বিয়ানীবাজারের বহু মানুষের জীবন সংকটাপন্নও বলে সচেতন মহল মনে করেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.