Beanibazarview24.com
দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহ’রণের ঘটনা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। ক’দিন আগেই কেপটাউন থেকে আবদুল করিম নামে এক বাংলাদেশিকে নিজ দোকান থেকে অপহ’রণ করে স’ন্ত্রা’সীরা। ২৬ আগস্ট উইনবার্গ থেকে নিখোঁজ চার বাংলাদেশির আজও সন্ধান মেলেনি। এমন পরিস্থিতিতে চরম আত’ঙ্কে দিন পার করছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
শুক্রবার (৯ অক্টোবর) সকাল দশটার দিকে কেপটাউন শহরের সাইমন্স টাউনে নিজ দোকানে কর্মরত অবস্থায় অ’স্ত্র ঠেকিয়ে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। কে বা কারা কী কারণে আবদুল করিমকে তুলে নিয়ে গেছে সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি।
অপহৃত আবদুল করিম শরীয়তপুর জেলার ভেদেরগঞ্জ থানার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
এর আগে, দক্ষিণ আফ্রিকায় পাকিস্তানি অপহ’রণকারী চক্রের হাত থেকে বেঁচে ফিরেছেন এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী। চলতি মাসের (৬ অক্টোবর) দেশটির কেপটাউনের ক্লেমন্ট এলাকা থেকে শাহাদাত হোসেনকে অপহ’রণ করা হয়। তার দেশের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়।
স্থানীয় বাংলাদেশিরা জানান, ব্যক্তিগত কাজে গিয়ে গাড়ি পার্ক করার সময় ওঁৎপে’তে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকের নেতৃত্বে কয়েকজন সশ’স্ত্র কৃ’ষাঙ্গ ধারালো অ’স্ত্র দিয়ে মাথায় আ’ঘা’ত করে শাহাদাতকে গাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় শাহাদাত মা’রাত্মকভাবে আ’ঘা’ত হলেও নিজেকে ছাড়িয়ে গাড়ি নিয়ে নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে শাহাদাতের পিছু নিয়ে কিছু দূর যাওয়ার পর শেষ পর্যন্ত অপহ’রণকারীরা পালিয়ে যায়।
পরে ভুক্তভোগী শাহাদাত হোসেন স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে এই ব্যাপরে অ’জ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেন।
সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে কেপটাউনে চারজন বাংলাদেশিকে অপহ’রণের চেষ্টা করা হলে বুঝতে পেরে দুইজন বাংলাদেশি পালিয়ে যেতে পারলেও বাকি দুইজকে অপহ’রণ করা হয়। পরবর্তীতে দক্ষিণ আফ্রিকা মুদ্রায় ৫০ হাজার রেন্ড মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পান তারা।
এছাড়াও দেশটিতে শিশু থেকে শুরু করে যুবক, বৃদ্ধ দেশি-বিদেশি নাগরিকরা কমবেশি সবাই হা’মলার শি’কার হন। সুযোগ বুঝে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলে অজ্ঞা’তস্থানে নিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। চাহিদামতো টাকা দিতে ব্যর্থ হলে গুম করে দেয়া হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও স্থানীয় অপ’রাধীদের সমন্বয়ে একটি বড় ‘অপহ’রণ’ চক্র গড়ে উঠেছে। তাদের প্রথম টার্গেট
হলো বাংলাদেশি ব্যবসায়ী। গত ১৫ দিনে ১০ বাংলাদেশিকে অপহ’রণের চেষ্টা করা হয়েছিল।
এর মধ্যে তিনজন পালিয়ে বাঁচতে সক্ষম হয়। একজন গুরু’তর আহ’ত হয়েছে ফিরেছেন, পরবর্তীতে ভুক্তভোগী পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করেন। দুইজন মু’ক্তিপ’ণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। এর বাইরে জোহান্সেনবাগের ফোর্সবাগ থেকে এক পাকিস্তানিকে অপহ’রণ করা হলে পুলিশ তিনদিনের মাথায় উ’দ্ধার করতে সক্ষম হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকায় চলমান অপহ’রণ নিয়ে প্রবাসীদের সংগঠন বাংলাদেশ পরিষদের সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জোহান্সেনবাগ, ডারবানসহ দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিদের অপহ’রণে ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ’।
তিনি বলেন, ‘এসব ঘটনায় বাংলাদেশি, পাকিস্তানিসহ স্থানীয় লোকজনও জ’ড়িত তাদের অনেককেই আ’টক হয়েছে। আইনের আওতায় আনতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অনেকাংশে অপহ’রণকারীরা পালিয়ে যাচ্ছেন’।
তিনি আরও বলেন, ‘কেপটাউনে অপহ’রণের ঘটনা বাড়ছে কারণ, বাংলাদেশিরা তথ্য গোপ’ন করে অপরা’ধীদের সঙ্গে সমঝোতা করে। পুলিশকে সঠিক তথ্য না দেওয়ার ফলে সেখানে অপহর’ণকারীদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না।
যার ফলে তাদের আ’টক করে আ’ইনের মুখোমুখি করা যায় না। এ কারণেই তারা একের পর এক বাংলাদেশিকে অপহ’রণের টা’র্গেট বানিয়ে আক্রমণ করছে। তুলে নেয়ার চেষ্টা করছে’।
শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কেপটাউনে বাংলাদেশিরা এখন আত’ঙ্কে দিন পার করছে। অপহ’রণ বন্ধ করার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশ পরিষদ সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে’।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.