Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

ইউরোপে আশ্রয় আবেদনের রেকর্ড বাংলাদেশিদের

ইউরোপের দেশগুলোতে গত মার্চে চার হাজারের বেশি বাংলাদেশি অ্যাসাইলামের (আশ্রয়) জন্য আবেদন করেছেন। তাঁদের মধ্যে তিন হাজার ৮৮৩ জন প্রথমবারের মতো আবেদন করেছেন। এটি গত বছরের এপ্রিল থেকে এক বছরের মধ্যে এক মাসে বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চসংখ্যক আবেদন।

গত ১৭ মে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) অ্যাসাইলাম আবেদন তদারককারী প্রতিষ্ঠানের প্রকাশ করা তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীদের ২২ হাজারেরও বেশি আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে।

এর মধ্যে ছয় মাসের কম সময় ধরে ঝুলে আছে ১৬ হাজার ১২টি আবেদন।

ইউরোপের কাছের দেশ না হয়েও আশ্রয়প্রার্থীদের শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় বেশ কয়েক বছর ধরেই আছে বাংলাদেশ। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, মূলত আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ ঘুরে অবৈধভাবে ইউরোপে ঢোকেন ওই আশ্রয়প্রার্থীরা। অবৈধভাবে সাগর পাড়ি বা বিপজ্জনক পথ পেরিয়ে তাঁরা ইউরোপে পৌঁছেন।

তাঁদের বেশির ভাগই দেশ ছাড়েন ইউরোপে উন্নত জীবন-জীবিকার সুযোগের আশায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁদের জন্য ইউরোপে আশ্রয় পাওয়ার যৌক্তিকতা প্রমাণ করা কঠিন হয়।
ইইউতে আশ্রয়ের আবেদন তদারককারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মার্চে বাংলাদেশি আবেদনকারীদের মধ্যে ৫১ শতাংশই ইতালিতে আশ্রয় চেয়েছেন। ২৩ শতাংশ আশ্রয় চেয়েছেন ফ্রান্সে।

এ ছাড়া ১৪ শতাংশ রুমানিয়ায়, ৬ শতাংশ অস্ট্রিয়ায় এবং ২ শতাংশ গ্রিসে আশ্রয় চেয়েছেন।

বাংলাদেশিরা কী কারণ দেখিয়ে ইউরোপে আশ্রয় চাচ্ছেন বা তাঁদের আশ্রয় প্রত্যাশার ধরন রাজনৈতিক কি না, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। ইইউ অ্যাসাইলাম আবেদন তদারককারী প্রতিষ্ঠানের তথ্য কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু ম্যাককিনালি গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠান ইইউয়ের আইন অনুযায়ী তাঁদের আশ্রয় ও অভ্যর্থনা ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নে সহযোগিতার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। কোন ব্যক্তি কী কারণে আশ্রয়ের আবেদন করছেন, তা স্বাধীনভাবে যাচাইয়ের ক্ষমতা তাঁদের প্রতিষ্ঠানের নেই। আবেদনকারীরা যে দেশে আশ্রয়ের আবেদন করবেন, সেই দেশের কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব তা খতিয়ে দেখা।

অ্যান্ড্রু ম্যাককিনালি বলেন, আশ্রয়প্রার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য জানার সুযোগ তাঁদের প্রতিষ্ঠানের নেই।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত এক বছরে বাংলাদেশি আবেদনকারীদের যেসব আবেদন নিষ্পত্তি পেয়েছে তাঁদের মধ্যে মাত্র ৩ শতাংশ ইউরোপে আশ্রয় পেয়েছেন। তাঁদের সবাই আবার রিফিউজি বা শরণার্থী মর্যাদা পাননি। অনেকে পরিস্থিতি বিবেচনায় সাময়িক সুরক্ষা বা সাময়িক আশ্রয় পেয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এর অর্থ হলো আশ্রয়ের আবেদনকারীদের মধ্যে ৯৭ শতাংশই ইউরোপে থাকার অধিকার বা প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করতে পারছেন না। এ ক্ষেত্রে ইইউয়ের নীতি হলো ইইউতে যাঁদের বৈধভাবে থাকার অধিকার নেই তাঁদের ফিরে আসতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে পর্যায়ক্রমে তাঁদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

ইইউয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত ১২ মাসে ইইউ প্লাস (ইইউ ও আশপাশের ইউরোপীয় দেশ) অঞ্চলে আশ্রয়ের আবেদনের সংখ্যা ২০১৫-১৬ সালের শরণার্থী সংকটের পর থেকে সর্বোচ্চ। গত মার্চে প্রায় ৯২ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। এই সংখ্যা গত ফেব্রুয়ারি ও গত বছরের মার্চের আবেদনের চেয়ে ১০ শতাংশেরও বেশি। গত মার্চে ইইউ প্লাস অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি আশ্রয়ের আবেদন করেছেন যথাক্রমে সিরীয়, আফগান, ভেনিজুয়েলান, কলম্বিয়ান ও তুর্কিরা। প্রায় ৪০ শতাংশ আশ্রয়ের আবেদন করেছেন এই দেশগুলোর নাগরিকরা।

গত এক বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংঘাত, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও খাদ্যসংকটের কারণে ইইউ প্লাস অঞ্চলে আশ্রয়ের আবেদন বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সিরিয়া, আফগানিস্তানে সংকটের কারণে এখনো ওই দেশগুলো থেকে নাগরিকরা অন্যত্র আশ্রয়ের আবেদন করছেন। ইইউ প্লাস অঞ্চলে আশ্রয়ের আবেদন ও মঞ্জুর হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে রুশ নাগরিকদের ক্ষেত্রে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.