Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

কানাডায় জব আগে, না ইমিগ্রেশন আগে


দেশ থেকে ই–মেইল করে একজন জানতে চেয়েছেন তিনি কানাডা ইমিগ্রেশনের আবেদন করবেন, না কানাডায় জব বা চাকরির আবেদন করবেন? তাঁকে বললাম, তাঁর লেখাপড়া ও অভিজ্ঞতার বিস্তারিত পাঠাতে। পাঠালেন।…এমন প্রশ্ন অনেক ইমিগ্রেশন–প্রত্যাশীর মাথায়। তাই ভাবলাম, বিষয়টা নিয়ে একটু আলোচনা করি।

শুরুতেই বলি, কানাডায় চাকরির বাজার তেমন সুবিধার নয়। তবে এখানে সামাজিক নিরাপত্তামূলক কিছু বিষয় আছে, যা সারা পৃথিবীর মানুষকে টানে। তা না হলে, এমন একটা শীতের দেশে আসার বিশেষ কারণ দেখি না। সামাজিক নিরাপত্তার কয়েকটি উদাহরণ দিই।

বাচ্চাদের পড়াশোনা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ফ্রি, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়ার জন্য স্বল্প সুদে স্টুডেন্ট লোনের ব্যবস্থা আছে, টিউশন ফি অনেক কম, ডাক্তার দেখালে কোনো ভিজিট (ফি) দেওয়া লাগে না, সিনিয়র সিটিজেনদের (৬৫ বা তার অধিক বয়সী) জন্য বিশেষ সুবিধা, নানা রকমের সোশ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ইত্যাদি।

কানাডায় চাকরির কমবেশি যে সুযোগটুকু আছে, তা প্রথমেই ভোগ করে কানাডার পিআর (PR) এবং সিটিজেনেরা। কোনো পদের জন্য কানাডায় উপযুক্ত লোক পাওয়া না গেলে তবেই বিদেশিদের জব অফার দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হয়। ফলে বুঝতেই পারছেন, কানাডার বাইরের দেশ থেকে একজন বিদেশির পক্ষে কানাডায় চাকরি জোগাড় করা কতটা সহজ বা কঠিন।

এ কারণেই ভারত, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশে কানাডায় জব অফার দেওয়া নিয়ে নানা মুখরোচক বিজ্ঞাপন দেখা যায়, যার সিংহভাগই ভিত্তিহীন। তবে এটা ঠিক, ভাগ্যক্রমে জব অফার পেয়ে গেলে কানাডা ইমিগ্রেশন সহজ হয়ে যায়। তবে তা যেকোনো চাকরি নয়, জবেরও বিশেষ কিছু ক্যাটাগরি আছে।

অন্যদিকে, কানাডায় সরাসরি ইমিগ্রেশন নিয়ে আসতে পারলে সুবিধা অনেক। কানাডায় ল্যান্ড করার পরপর আপনি পিআর স্ট্যাটাস পেয়ে যেতে পারেন। পিআর হয়ে লেখাপড়া করতে গেলে কানাডায় অনেক কম খরচে পড়তে পারবেন। কম সুদে স্টুডেন্ট লোনও পেতে পারেন। পড়ালেখা না করে সরাসরি চাকরিতে ঢুকতে চাইলে সে সুযোগও আছে।

চাকরি পেতে দেরি হলে সরকার থেকে আর্থিক সহায়তা (অ্যাসিস্ট্যান্স) পাওয়ার সুযোগও রয়েছে। এসব কারণে পড়াশোনা বা চাকরি যা-ই করতে চান, ইমিগ্রেশন নিয়ে আসার পর তা ভেবেচিন্তে ধীরেসুস্থে করতে পারবেন। এ বিবেচনায় আমার কাছে চাকরির আগে ইমিগ্রেশন নিয়ে আসার পথটাই বেশি আকর্ষণীয় মনে হয়। আমরাও তা-ই করেছি।

এ প্রসঙ্গে আরেকটি কথা বলি। কানাডার চাকরি কিন্তু বাংলাদেশের চাকরির মতো নয়। এখানে বেশির ভাগ চাকরিই প্রাইভেট সেক্টরে। সরকারি চাকরিতে উপরি আয়ের সুযোগ নেই। চাকরিতে ক্যাডার সিস্টেম বা প্রতাপশালী কোনো বিশেষ ক্যাডারও এখানে নেই। তার মানে, সরকারি চাকুরেরা কোথাও অবৈধ প্রভাব খাটাবেন, তেমন পরিবেশ এখানে অনুপস্থিত। সরকারি চাকরিতে কোনো পদ খালি হলে নিচের পদের কাউকে প্রমোশন দিতে হবে, তেমন বাধ্যবাধকতাও নেই।

সরকারি অফিসেও খালি পদের জন্য উন্মুক্ত বিজ্ঞাপন হয়। তাতে উপযুক্ত যাঁকে পাওয়া যায়, তাঁকেই ওই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ফলে পদোন্নতি পেতে অফিসের বস বা পলিটিক্যাল বসদের পদলেহনও নিষ্প্রয়োজন। তা ছাড়া এখানে চাকরিতে কখন কাকে বের করে দেওয়া হবে, তা–ও বলা মুশকিল।

তার মানে, কানাডার পারমানেন্ট চাকরি বাংলাদেশের পারমানেন্ট চাকরির মতো ততটা শক্ত সোমত্ত নয়। ফলে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আপনি একটা চাকরি নিয়ে এলেও যে সে চাকরি কত দিন টিকে থাকবে, তার গ্যারান্টি নেই।

যাক, এই পোস্ট আর লম্বা করব না। আশা করি, যে প্রশ্ন দিয়ে লেখা শুরু করেছিলাম তার উত্তর পেয়ে গেছেন।

*লেখক: কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন কনসালটেন্ট।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.