Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

অগ্নাশয় ক্যান্সার গবেষণায় বাঙালি বিজ্ঞানীর যুগান্তকারী সাফল্য


অগ্নাশয় ক্যান্সার চিকিৎসার জেনেটিক মডেল তৈরি করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক বাঙালি বিজ্ঞানী। ক্যান্সার চিকিৎসায় এ এক যুগান্তকারী আবিষ্কার।

কলকাতার মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে অনিন্দ্য বাগচি। বর্তমানে থাকেন আমেরিকায়। অনুসন্ধানই তার জীবনের মূলমন্ত্র। সেই অনুসন্ধানের মানসিকতাই আজ এক বিশাল কৃতিত্বের সামনে এনে ফেলেছে তাঁকে। অগ্নাশয় ক্যানসার চিকিৎসায় জেনেটিক স্ট্রাকচার আবিষ্কার করে ফেলেছেন এই বাঙালি বিজ্ঞানী।

অগ্নাশয় ক্যানসার এক মারণব্যাধী। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত চিকিৎসকরা বলতেন, এই রোগের কার্যত কোনো চিকিৎসা নেই। তবে পরবর্তীকালে একটি হাইপোথিসিস তৈরি হয়েছিল এই রোগ নিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে সেই হাইপোথিসিসের উপর নির্ভর করেই রোগটির চিকিৎসা চলছিল।

মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যানসার জেনেটিক্সের অধ্যাপক অনিন্দ্য বছর সাত-আট আগে স্যানফোর্ড ব্রুনহ্যাম প্রেবিস মেডিক্যাল ডিসকভারি ইনস্টিটিউটে নিজের ল্যাবে অগ্নাশয় ক্যানসার নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তিনি দেখতে চাইছিলেন, যে হাইপোথিসিসের উপর দাঁড়িয়ে এ ধরনের ক্যানসারের চিকিৎসা হয়, তা কতটা কার্যকর। বছর কয়েকের মধ্যেই অনিন্দ্য এবং তাঁর সহকর্মীরা এক আশ্চর্য সত্যের মুখোমুখি হন। এতদিন ধরে যে হাইপোথিসিসের উপর ভিত্তি করে অগ্নাশয় ক্যানসারের চিকিৎসা চলছিল, তা রোগের উপশম তো করেই না বরং, উল্টো ফল হতে পারে। শুধু অনিন্দ্য নন, তাঁর সমস্ত সহযোগী এই আবিষ্কারে চমৎকৃত হন।

দীর্ঘ প্রায় আট বছরের কঠোর পরিশ্রমের পরে শেষ পর্যন্ত অনিন্দ্য এবং তাঁর দল একটি প্রোটিনের সন্ধান পেয়েছেন, যা অগ্নাশয় ক্যানসার উপসমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। না, অনিন্দ্য কোনো ওষুধ আবিষ্কার করেননি। তিনি অগ্নাশয় ক্যানসার উপসমের একটি জেনেটিক মডেল তৈরি করেছেন। যা ব্যবহার করে তৈরি হতে পারে ওষুধ। এবং যার ব্যবহার শুরু হলে অগ্নাশয় ক্যানসারের চিকিৎসায় এক নতুন দিগন্ত খুলে যাবে।

পেশায় জেনেটিক্স বিজ্ঞানী অনিন্দ্য রাজনীতিতে বামপন্থী। সেই স্কটিশ চার্চ কলেজে রসায়ন নিয়ে পড়ার সময় থেকেই তিনি বামপন্থী রাজনীতি এবং প্রগতিশীল পড়াশোনায় উৎসাহী। তাঁর বিশ্বাস, ছোটবেলায় রাশিয়ার ভস্তক প্রকাশনার প্রগতিশীল বই তাঁর হাতে না পড়লে আজ হয়তো বিজ্ঞানীই হয়ে উঠতে পারতেন না। বায়োকেমিস্ট্রিতে স্নাতকোত্তর করেছেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তারপর পিএইচডি করেন দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। পোস্ট ডক্টরেট করেছেন নিউইয়র্কের একটি বিশ্ববিখ্যাত ল্যাবে।

২০১৪ সালে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা স্থান পেয়েছিল নেচার পত্রিকায়। তবে ২০২০ সালে তাঁর আবিষ্কার তাবৎ বিজ্ঞান বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। অনিন্দ্য অবশ্য মনে করেন, এটা তাঁর একার কৃতিত্ব নয়, তাঁর পুরো দলের। সকলে মিলেই এই গবেষণা করেছেন। বিশেষ করে তিনি বলতে চান আশুতোষ তিওয়ারির কথা। গোটা গবেষণা প্রক্রিয়ায় আশুতোষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বলে অনিন্দ্য জানিয়েছেন।

অনিন্দ্যর এই আবিষ্কারকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। দিল্লির বিশিষ্ট চিকিৎসক পার্থপ্রতীম বসু জানিয়েছেন, অগ্নাশয় ক্যানসার এক অত্যন্ত জটিল রোগ। ১০ শতাংশ মানুষকে কিছু দিনের জন্য বাঁচানো যায়। নতুন এই আবিষ্কার বহু মানুষকে সুস্থ করতে সাহায্য করবে।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.